Advertisement
Advertisement
Namkhana

‘ভালোবাসা পিঁড়ি পেতে রেখেছিল…’, ছাদনাতলায় বসেই স্বামীর কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ নববধূর

নববধূই অনুপ্রেরণা কবির!

Namkhana Woman publishes husband's poetry collection on wedding
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:July 20, 2025 10:38 pm
  • Updated:July 21, 2025 3:03 pm   

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ডহারবার: কবিতায় মুগ্ধ হয়েই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রেমে পড়েছিলেন স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়। পরবর্তীকালে বিয়ে। অন্যদিকে মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমে হাবুডাবু খান বাংলা কাব্যসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা শক্তি চট্টোপাধ্যায়। পরে তাঁকেই বিয়েও করেন। অতএব, কবি মাত্রাই যে প্রেমিক এ নতুন কথা নয়। তবে বিয়ের দিনে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের ঘটনা অভিনব। সবচেয়ে বড় কথা, কবিজীবনের অন্যতম অনুপ্রেরণা নববধূকেই সেই কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গ করেলেন তরুণ কবি।

Advertisement

কবির নাম ধ্রুববিকাশ মাইতি। তিনি সুন্দরবনের নামখানা ব্লকের দেবনগরের বাসিন্দা। নামখানা বিডিও অফিসে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের দায়িত্বশীল সরকারি কর্মী। কিছুদিন আগে সম্বন্ধ করে ধ্রুববিকাশের বিয়ে ঠিক হয় অনুষ্কার সঙ্গে। কবিহৃদয়ের প্রথম প্রেম ছিল কবিতা। এবার বাড়ি থেকে বিয়ের ঠিক হলে ভাবী স্ত্রী সঙ্গে আলাপ হয় কবির। জীবন সঙ্গীর প্রেমে পড়েন তিনি। অল্প দিনে অনুষ্কা হয়ে ওঠেন ধ্রুববিকাশের কাব্যের অন্যতম অনুপ্রেরণা। এতদিন যে হৃদয়ে ছিল কেবল কবিতা, সেই হৃদয়েই সমাদরে, সসম্মানে জায়গা করে নেন দ্বিতীয় প্রেম অনুষ্কা। এবার স্বামীর প্রথম প্রেম কবিতাকে হাসিমুখে স্বীকৃতি দিলেন নববধূও। বিয়ের পিঁড়িতে বসে অনুষ্কা প্রকাশ করলেন স্বামীর স্বপ্নের কাব্যগ্রন্থ।

Namkhana Woman publishes husband's poetry collection on wedding
যুগল এবং পুরুত মশাইয়ের হাতে সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ।

বিয়ের দিন সিঁদুরদানের পরেই পিঁড়িতে বসেই নববধূ অনুষ্কা প্রকাশ করলেন স্বামী কবি ধ্রুববিকাশ মাইতির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘চোখের ভেতর মাছরাঙা।’ যে গ্রন্থের উৎসর্গের পাতায় জ্বলজ্বল করছে কবির স্ত্রীর নাম। কাব্যগ্রন্থের কবিতায় কবিতায় ফুটে উঠেছে সদ্য়বিবাহিতা তরুণীর প্রতি কবির গভীর অনুরাগ। একটি কবিতায় ধ্রুববিকাশ লিখেছেন, “ঘুম কোনও সমাধান নয়/ বরং পাথরচাপা কোনও বস্তু,/ তার দিকে তাকিয়ে যখন বলি ভালোবাসি/ তখন পাথর সরিয়ে একটি গাছ জন্ম নেয়, / সেই গাছের নাম দিই অনুষ্কা।”

প্রেম আর প্রতিশ্রুতিকে সৃষ্টির প্রেরণা করে ধ্রুববিকাশ নতুন জীবনের স্বপ্ন বুনেছেন। সেই স্বপ্নের যেন বাস্তবিক সূচনা হল বিবাহবাসরে। ধ্রুববিকাশের কবিতায় স্ত্রী অনুষ্কার মতোই সুন্দরবনের নোনা মাটির গন্ধকে ভালোবাসার কথাও রয়েছে। মন্ত্রোচ্চারণ ও শঙ্খধ্বনির মাঝে কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের মতো অভিনব বিয়ের আসরের সাক্ষী থাকলেন ধ্রুববিকাশ ও অনুষ্কার আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীরা। শক্তি চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন—“ভালোবাসা পিঁড়ি পেতে রেখেছিল উঠোনের কোণে…।” এ যেন ধ্রুববিকাশ আর অনুষ্কার জীবনের কথাই! কী আশ্চর্য!

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ