সৌরভ মাজি ও অর্ক দে, বর্ধমান: ব্যথা হাতে, আর চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে লিখলেন পায়ের ডিজিটাল এক্স রে করাতে! প্রেসক্রিপশনে কী লেখা, তা রোগী লক্ষ্যই করেননি। এক্স রে রুমে গেলে টেকনিশিয়ান রোগীর পা ধরে টানাটানি করেন – পায়ের এক্স রে হবে যে। রোগী বলেন হাতের কথা। টেকনিশিয়ান জানান, প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী হাত নয়, হাঁটুর এক্স রে করানোর কথা লেখা আছে। মহা ফাঁপড়ে পড়েন রোগী! ফের ওই সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে নতুন করে প্রেসক্রিপশন করিয়ে তবে হাতে এক্স রে করানো হয়। প্রেসক্রিপশন বিভ্রাটে এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী পূর্ব বর্ধমানের মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল।
বিভ্রান্তিকর বিষয়টি নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস বালা ফোনে জানান, “এখনও লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া ওই সময় জরুরি বিভাগে যে চিকিৎসক দায়িত্বে ছিলেন, তাঁর কাছ থেকেও বিষয়টি জানতে হবে। সঠিক কী ঘটেছিল, খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জামালপুর থানার আঝাপুর গ্রামের বাসিন্দা কৌশিক চট্টোপাধ্যায়ের হাতে ব্যথা হচ্ছিল। গত বুধবার রাতে তিনি মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা করাতে যান। সেই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে প্রেসক্রিপশন করে দেন। কৌশিকবাবু বলেন, “ডাক্তারবাবু মুখে বলেছিলেন, হাতের একটি এক্স রে করাতে। প্রেসক্রিপশনে উনি কী লিখেছেন তা বুঝতে পারিনি।” পর দিন তিনি ওই হাসপাতালে এক্স রে বিভাগে যান। সেখানে কর্তব্যরত টেকনিশিয়ান তাঁর পায়ে এক্স রে করতে যান। কৌশিকবাবু বাধা দেন। জানান, পায়ে নয়, হাতে আঘাত লেগেছে তাঁর। কিন্তু ওই টেকনিশিয়ান জানান, প্রেসক্রিপশনে পায়ের এক্স রে করার কথাই লেখা রয়েছে। তা শুনে প্রথমে চমকে গেলেও এক্স রে না করিয়ে কৌশিকবাবু ফের জরুরি বিভাগে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছ থেকে নতুন করে একটি প্রেসক্রিপশন লিখিয়ে নেন। দ্বিতীয় প্রেসক্রিপশনে অবশ্য ভুল হয়নি। সেখানে হাতের এক্স রে করানোর কথাই বলা হয়েছে। আর তা দেখিয়ে হাতের এক্স রে করাতে পারেন কৌশিক চট্টোপাধ্যায়।
কৌশিকবাবু বলেন, “কেমন গাফিলতি বলুন। এখনও কোথাও অভিযোগ করিনি। একটু সুস্থ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাব।” সামাজিক মাধ্যমে কৌশিকবাবুর দুটি প্রেসক্রিপশন ভাইরাল হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে ঘটনার কথা শুনে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। যে চিকিৎসকের ভুলে হাতের বদলে পায়ের এক্স রে করা হচ্ছিল, তাঁর সঙ্গে এদিন কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে পুরোটা জেনে তার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.