সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাণের স্পন্দন বুঝি এবার শোনা যাবে পৃথিবীর গণ্ডির বাইরেও। সেদিন হয়তো আর দেরি নেই, যখন বিশ্ববাসী চন্দ্রপৃষ্ঠে রাজত্ব করবে। সেই সম্ভাবনার কথা শোনাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। কেন এমন আশার কথা? কারণ, মহাবিশ্বের অন্য কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব কিনা, সেই তথ্য তালাশ করতে গিয়ে অভিনব দৃশ্য চাক্ষুষ করেছে নাসার মহাকাশযান ল্যাডি। চাঁদের মাটিতে মিলেছে জলের অস্তিত্বের প্রমাণ।
লুনার অ্যাটমোস্ফিয়ার অ্যান্ড ডাস্ট এনভায়রনমেন্ট এক্সপ্লোরার, সংক্ষেপে ল্যাডি। ২০১৩সালের শেষ থেকে ২০১৪ সালের শুরুর ৬ মাসের মধ্যে এই মহাকাশযানটিই চাঁদের পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছিল। জানিয়ে দিয়েছিল, পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের পরিবেশ বিরক্তিকর ও ধূলিকণাময়। চাঁদের বাতাসে কোন মৌল কী পরিমাণ আছে, সবটাই জানান দিয়েছিল ল্যাডি। সেই ল্যাডিই এবার প্রমাণ দিল চাঁদের মাটিতে জলের অস্তিত্বের। নাসার বিজ্ঞানীদের দাবি, চাঁদের ভূপৃষ্ঠে ঘনীভূত বরফ আকারে প্রচুর জল জমে রয়েছে। এই বরফের স্তরটি রয়েছে ধূলিকণায় ঢাকা। তাই খালি চোখে বা নাসার কোনও উপগ্রহের মাধ্যমে এতদিন এর ছবি তোলা যায়নি।
তাহলে এবার কী’করে প্রকাশ্যে এল এই বরফের স্তর? নাসা জানাচ্ছে, চন্দ্রপৃষ্ঠে উল্কাপাতের সময় ধরা পড়েছে অত্যাশ্চর্য দৃশ্য। চাঁদের মাটিতে প্রবল গতিতে আঘাত হানছে উল্কা। সেইসঙ্গে মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে জল। আসলে প্রবল গতিতে নেমে আসা উল্কার আঘাতে আলগা হয়ে যাচ্ছে ধূলিকণার আস্তরণ। আর সঙ্গে সঙ্গে মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়ে যাচ্ছে বরফের কণা। যা নিমেষের মধ্যে মিলিয়ে যাচ্ছে বাতাসে। কেন? বরফ গলে জলকণায় পরিণত হওয়ার পর আবার কেন মিলিয়ে যাচ্ছে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরফ গলা জল উত্তপ্ত বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে আসামাত্রই তা বাষ্পে পরিণত হচ্ছে, এবং মিলিয়ে যাচ্ছে চাঁদের বায়ুমণ্ডলে।
নাসার বিজ্ঞানীরা অবশ্য আগেই ইঙ্গিত পেয়েছিলেন চাঁদের ভূপৃষ্ঠে প্রচুর জল জমে থাকতে পারে। কিন্তু পৃথিবীতে বসে তো আর সন্ধান করা সম্ভব নয়। তাছাড়া, চাঁদে জল থাকতে পারে এই ধারণা থাকলেও, এখনও তার চাক্ষুষ প্রমাণ মিলেছিল না। এই প্রথম মিলল সেই প্রমাণ। আশার কথা হল, যে উলকাগুলির আঘাতে চাঁদের জলভাণ্ডার উন্মোচন হল, সেগুলি যে চাঁদের মাটিতে খুব গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল, তা কিন্তু নয়। এই উলকাগুলির অধিকাংশই চাঁদের মাটিতে আঘাত করেছিল মাত্র ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি। অর্থাৎ চাঁদের মাটিতে কয়েক ইঞ্চি খুঁড়ে ফেলতে পারলেই উন্মোচিত হতে পারে অনন্ত জলের ভাণ্ডার। উৎসাহিত হওয়ার আরও একটি কারণ হল, চাঁদের মাটিতে জলের উৎস কোনও একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ নয়। অন্তত ২০-২৫ টি জায়গায় জলের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনায় উচ্ছ্বসিত নাসা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েও দিয়েছে, আগামী দিনে চাঁদের মাটিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা ভেবে দেখা হচ্ছে।
JUST IN: Scientists have discovered water is being released on the Moon during meteor showers! 💧🌑 This discovery provides a potential resource for future exploration, improves our understanding of the Moon’s geologic past & continued evolution. Details:
— NASA (@NASA)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.