Advertisement
Advertisement
Jhargram

ক্লাসে বিরক্ত করায় ছাত্রকে ‘শাস্তি’ দিয়েছিলেন শিক্ষক, ‘সবক’ শেখাতে স্কুলে বন্দুক নিয়ে দাপাল ‘গুণধর’!

ওই ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ।

Student detained for bringing gun to school in Jhargram

প্রতীকী ছবি।

Published by: Suhrid Das
  • Posted:August 18, 2025 11:22 pm
  • Updated:August 19, 2025 4:09 pm   

সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ক্লাসরুমে এক ছাত্র বিরক্ত করেছিল বলে শিক্ষক গালে চড় মেরেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই শিক্ষককে ‘সবক’ শেখাতে স্কুলে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গেল ওই গুণধর! স্কুলের মধ্যে কার্যত সে দাপিয়ে বেরিয়েছে বলে অভিযোগ। বন্দুক নিয়ে শিক্ষককে তাড়াও করেছিল বলে অভিযোগ। পরে তাকে পাকড়াও করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই দশম শ্রেণির ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। আজ, সোমবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া থানার চর্চিতা চোরেশ্বর হাইস্কুলে ঘটেছে।

Advertisement

এদিন স্কুলে দ্বিতীয় পিরিয়ডের ইতিহাসের ক্লাস চলছিল ওই শ্রেণিকক্ষে। ক্লাসরুমের একেবারে শেষ বেঞ্চে বসেছিল ওই ছাত্র নীলাঞ্জন দোলই। ক্লাস চলাকালীন সে শিক্ষক পরিমল আট্টের নিষেধ সত্ত্বেও বারবার সহপাঠীদের বিরক্ত করছিল বলে অভিযোগ। শিক্ষক পরিমলবাবু তার গালে একটি চড় মারেন বলে অভিযোগ। এতেই ব্যাপক ক্ষুব্ধ ওই ছাত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে সটান ইতিহাস শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে যায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তার অভিযোগে আমল দেননি। এরপর ওই বাবাকে ডেকে আনছে বলে ব্যাগ নিয়ে স্কুল থেকে বেরিয়ে যায় বলে খবর।

বেশ কিছু সময় পরে টিফিন চলাকালীন নীলঞ্জন একটি গুলিভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্কুল ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। ইতিহাসের শিক্ষককে দেখতে পেয়ে তাঁকে তাড়া করে বলে অভিযোগ। বন্দুক উঁচিয়ে সে রীতিমতো দাপাদাপি করতে থাকে! ঘটনায় ভয়ে সকলেই সিঁটিয়ে থাকে। একসময় সহপাঠীরা তাকে আটকাবার চেষ্টা করে। বাধ পেয়ে সে ওই শিক্ষকের বাড়িতে হামলা চলানোর চেষ্টা করে। বিদ্যালয় থেকে মাত্র দেড় মিনিট দূরত্বে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন ওই ইতিহাস শিক্ষক। তিনি ছাড়া পরিবারের সদস্য ওই শিক্ষকের স্ত্রী এবং বছর দশেক বয়সের কন্যা। অভিযুক্ত ছাত্র পিস্তল নিয়ে ওই বাড়িতেও চড়াও হয়ে দোতলায় ওঠার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এদিকে স্কুলের তরফে থানায় খবর দেওয়া হয়। সিভিক ভলান্টিয়াররা সেখানে গিয়ে ওই ছাত্রকে ধরে ফেলে।

ইতিহাসের শিক্ষক ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে বেলিয়াবেড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ছাত্রটিকে আটক করে নিয়ে যায়। কিন্তু একজন ছাত্র আগ্নেয়াস্ত্র পেল কীভাবে?  পুলিশের অনুমান, ওই ছাত্রের বাড়িতে আরও আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে থাকতে পারে। তার বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হতে পারে বলে খবর। ওই ছাত্রের বাবা কেষ্ট দোলই এলাকায় যুব তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত বলে খবর। এই বিষয়ে গোপীবল্লভপুর ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি টিঙ্কু পাল বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। পুলিশ, প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। এই ধরনের ঘটনা কখনওই বরদাস্ত করা হবে না। ওই ছাত্রের বাবা আমাদের দলীয় কোনও পদে নেই।”

শিক্ষক পরিমল অট্ট বলেন, “আমি সত্যিই ভীষণ আতঙ্কিত। ছাত্রকে শাসন করার জন্য যে এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা কল্পনাও করতে পারিনি। ক্লাসে খুবই বিরক্ত করছিল তাই থাপ্পড় মেরেছিলাম। তারপর পিস্তল নিয়ে দাপিয়ে বেরিয়েছে।” ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে স্কুলে নিয়ম না মানা, ক্লাসে সহপাঠীদের বিরক্ত করার আগেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এই আচরণ যে সে করবে, তা স্কুলের কেউই বিশ্বাস করতে পারেনি। ঘটনা জানাজানি হতে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ