সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নামে কী আসে যায়! হয়তো যায়। সেই জন্যই কোনো ঘটনার প্রতিবাদ হোক বা কোনো ব্রান্ড প্রমোশন নামের চমক দেখা যায়। এমনই একটি ঘটনার প্রতিবাদে হাতে প্রতীকী ‘শিকল’ পরে, গোটা দোকানে পোস্টার লাগিয়ে চা বিক্রি করছেন রাজস্থানের কৃষ্ণকুমার ধাকর। দোকানের নামেও চমক দিয়েছেন তিনি। কিন্তু কেন দোকানের নাম ‘৪৯৮এ টি ক্যাফে’ রেখেছেন কৃষ্ণ? কেনইবা হাতে ‘শিকল’ পরে চা বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁকে?
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সাবে মীনাক্ষী মালভার সঙ্গে বিয়ে হয় কৃষ্ণর। মা ও স্ত্রীকে নিয়েই সুখেই দিন কাটছিল। তবে সেই সুখ খুব বেশিদিন থাকেনি। কৃষ্ণ জানিয়েছেন, ২০২২ সালে মীনাক্ষী হঠাৎ বাপের বাড়িতে চলে যান। কয়েকমাস পরেই কৃষ্ণর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানার একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেন তিনি। যার মধ্যে ছিল IPC-র ৪৯৮এ (বধূ নির্যাতন)-এর মামলা। এরপর থেকেই বদলে যায় কৃষ্ণর প্রতিদিনের জীবন। ন্যায়বিচারের আশায় রোজদিন আদালতের চক্কর কাটতে হয়েছে তাঁকে। কৃষ্ণর অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
কৃষ্ণ বলেন, “তিন বছর ধরে ন্যায়বিচারের আশায় আদালতের দুয়ারে ঘুরছি। বাড়িতে বৃদ্ধা মা রয়েছেন। খোরপোশ দিতে দিতে সর্বশান্ত হয়ে গিয়েছি। এখন একটি টিনের ঘর আর এই দোকানই সম্বল।” তিনি জানান, একাধিকবার আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার কথা ভেবেও, শুধু মায়ের মুখ চেয়ে সেই পথ থেকে ফিরে এসেছেন।
হঠাৎই অভিনব প্রতিবাদের পথ নেন কৃষ্ণ। শ্বশুরবাড়ির সামনেই একটি ফাঁকা জায়গাতে চায়ের দেকান খোলেন। সেই দোকানের নাম দেন ‘৪৯৮এ টি ক্যাফে’। কৃষ্ণ জানিয়েছেন, যে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ন্যায়বিচারের আশায় আদালতে ঘুরছেন। এমনকী শুনানীর দিনগুলিতে প্রায় ২২০ কিলোমিটার যাতায়াত করতে হয় তাঁকে। তিনি বলেন, “যতবারই আদালতে যাই, ততবারই কেবল তারিখ পে তারিখ পাই। ন্যায়বিচারের কোনও দেখা মেলে না।” সেই কারণেই দোকানের এমন নাম রেখেছেন। কিন্তু হাতে ‘শিকল’ কেন পড়েছেন? কৃষ্ণর উত্তর, “কোনও দোষ না করেও তিন বছর ধরে অপমান সহ্য করছি। সেই মানসিক যন্ত্রনার কথা তুলে ধরতেই এমন আয়েজন।”
শুধু শিকল পরে চা বিক্রি বা দোকানের অভিনব নাম রাখাই নয়। দোকানের চারিদিকে বিভিন্ন পোস্টার লক্ষ্য করা যায়। পোস্টারে লেখা, “যব তক নহি মিলতা ন্যায়, তব তক উবলতি রহেগি চাই” যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়াই যতক্ষণ না আমি ন্যায়বিচার পাচ্ছি, ততক্ষণ চা ফুটতে থাকবে। যদিও, কৃষ্ণের অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর স্ত্রীর দাবি, “আমার বাবার কাছে জমি কেনার জন্য টাকা চেয়েছিল। টাকা দিতে অস্বীকার করাই আমাকে মারধর করত। বাবার বাড়িতে ফিরে এসে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য মামলা করি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.