Advertisement
Advertisement
Women

নিরাপত্তা চান? আগে দরকার ফিনান্সিয়াল এডুকেশন

নারী-নিরপত্তার সঙ্গে ফিনান্সিয়াল এডুকেশন গভীর ভাবে যুক্ত।

Financial education is deeply linked to women's safety in civic life
Published by: Subhodeep Mullick
  • Posted:September 13, 2025 3:16 pm
  • Updated:September 13, 2025 3:18 pm  

নিরাপত্তার ব্যপ্তি বিশাল। সেই সংজ্ঞাকে কেবল সামাজিক ? বা পারিপার্শ্বিক ঘেরাটোপে বাঁধা যায় না। আজকের দিনে অর্থনৈতিক নিরাপত্তাও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, বিশেষত মেয়েদের জন্য। আর তার জন্য ফিনান্সিয়াল এডুকেশন প্রথম সোপান। ব্যাখ্যা করলেন গার্গী গৌতম

Advertisement

নাগরিক জীবনে নারী-নিরপত্তার সঙ্গে ফিনান্সিয়াল এডুকেশন গভীর ভাবে যুক্ত। টাকাপয়সা নিয়ে যথাযথ সচেতনতা না থাকলে, আর এই বিষয়ের দিকে ছোট থেকে যথেষ্ট নজর না দিলে, মেয়েরা অনেক সময়ই পরবর্তী জীবনে নানা কারণে অসুরক্ষিত হয়ে যায়। নিজের কাজের জন্য বহু অল্পবয়সি মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, এখনও তাদের কথা প্রফেশনাল হিসাবে ভাবতে হয়। আমি বুঝি, নিজের টাকা সামলানোর দায়িত্ব ঠিক কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা দেখেছি কীভাবে অপরাধের ধরন বদলাচ্ছে। আইনগত উদ্যোগ হচ্ছে বটে, কিন্তু সামগ্রিক ভাবে আধুনিক সমাজে নারী-নিরাপত্তা এক গভীর সংকটের মুখোমুখি। শিশু-কন্যা থেকে শুরু করে প্রবীণা-কারও অবস্থানই অমানবিক চক্র থেকে নিরাপদ নয়। সাম্প্রতিক সময়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের হার বেশ বেড়েছে, এ-ও বোঝা যাচ্ছে। এর পিছনে রয়েছে নানাবিধ সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক ও প্রযুক্তিগত কারণ।

মেয়েদের জন্য আমার তিনটি সমাধান সূত্র:

এক, একদম নিয়মিত টাকা বাঁচানোর উদ্যোগ নিন। বাজেট করা শিখুন, খরচের উপর চোখ রাখুন।

দুই, কেউ যেন আপনার টাকা নিয়ন্ত্রণ না করে। “আমার সম্পদ, আমার কন্ট্রোল”-এই যেন আমাদের মন্ত্র হয়ে ওঠে।

তিন, আপনার “গোলস” কী, তা বুঝুন পরিষ্কাভাবে। নিজের বাড়ি? নিজের ব্যবসা? নিজের কোনও বিশেষ উদ্যোগ? এই সবের সঙ্গে জড়িত থাকবে টাকার বিষয়টি, মনে রাখুন। সময়ের সঙ্গে “গোলস” বদল হবে, তাই আর্থিক পরিকল্পনাতেও যেন পরিবর্তন আসে।

একইসঙ্গে টাকাপয়সা সংক্রান্ত খবরের দিকে চোখ রাখুন। ব্যাঙ্কে কী ধরনের নিয়ম চলে, তা জানতে হবে। মার্কেট রেগুলেটর কী চাইছেন, তা-ও শিখুন। এসব বিষয়ে জরুরি তথ্য রাখা কিন্ত আপনার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।

এবার আইনগত উদ্যোগ ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বলি। ভারতে নারীর নিরাপত্তা রক্ষায় বহু আইন কার্যকর রয়েছে। যেমন- ভারতীয় দণ্ডবিধি (IPC) ৩৭৫ ও ৩৭৬ ধারা, পকসো আইন (POCSO Act), গৃহস্থালি সহিংসতা আইন (2005): পারিবারিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন (2013): কর্মস্থলে নারীর মর্যাদা ও সুরক্ষার জন্য।

মানবপাচার প্রতিরোধ আইন: পাচার চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা।

সাইবার আইন: অনলাইন অপরাধ দমন ও অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা। নারীদের উচিত আত্মরক্ষার কৌশল শেখা, সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং প্রয়োজনীয় জরুরি ফোন নম্বর সবসময় হাতের কাছে রাখা। পুলিশি তৎপরতা ও বিশেষ সেল, যেমন নারী হেল্পলাইন (১০৯১), শিশু হেল্পলাইন (১০৯৮), সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন (১৯৩০), রেল হেল্পলাইন – ১৩৯, জাতীয় মহিলা কমিশন ৭৮২৭১৬৭৬৪০ (WhatsApp কেবল চ্যাট), পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশন- ০৩৩-২৩৩৭ ৬৩৩৩ / ২৩৩৭ ৬২৩৩, রাষ্ট্রীয় মহিলা কমিশন- ০৩৩-২৩২১ ০১৫৪, অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিট ০৩৩-২৪৫০ ৬১১৪, সিআইডি (নারী ও শিশু সুরক্ষা সেল) ০৩৩-২৪৭৯৪০০০ — নারী ও শিশুর তাৎক্ষণিক সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশন ও জাতীয় মহিলা কমিশন অভিযোগ গ্রহণ, পরামর্শ ও আইনি সহায়তা প্রদান করছে।

তবে শুধুমাত্র আইন করলেই হবে না, মানসিক পরিবর্তনও আনতে হবে। নারীদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তি-সচেতনতা বাড়ানো অপরিহার্য। তবে এর সঙ্গে চাই আর্থিক শিক্ষা।

                                                                             (লেখিকা এনজিও কর্মী, মতামত নিজস্ব)

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement