এখনকার ইনভেস্টরদের জন্য সঠিক ‘চয়েস’ হতে পারে মাল্টি অ্যাসেট ফান্ডগুলিতে লগ্নি করা। অন্তত বাজারের পরিস্থিতি সেই ছবিই তুলে ধরছে। কীভাবে পরিকল্পনা করে এগোবেন, কোন কোন দিকে দেবেন বিশেষ নজর, এই লেখায় জানাচ্ছেন তৃষ্ণা মুখার্জি।
আমার কাছে রিস্ক নেওয়ার ক্ষমতা কিছুটা হলেও রয়েছে, তাই স্টক মার্কেটের দিকে নজর দিয়েছি ভালো ইকুইটি ফান্ডের মাধ্যমে। আমার বিশ্বাস পেশাদার ফান্ড ম্যানেজাররা দায়িত্ব নিয়ে যদি আমার সম্পদ গঠন করতে সাহায্য করেন, তবে অবশ্যই সেই সুযোগ আমি নেব। কেন রিস্ক নিতে হবে, এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে খুব স্পষ্ট। রিটার্নের সঙ্গে রিস্কের সম্পর্ক আমার কাছে খুব স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। তবে, হ্যাঁ, এখানে অন্য বক্তব্যও আছে। সব টাকা, অর্থাৎ সঞ্চয়ের পুরোটাই, ঝুঁকিপূ্র্ণ অ্যাসেটে লগ্নি করতে আমি রাজি নই। তাই স্থায়ী আমানত (ইদানীং ঋণপত্রও বড় ভূমিকা নিয়েছে) আছে আমার জন্য। আমি খুব ভালো করেই জানি যে আমার মতো বহু ইনভেস্টর দুই ধরনের স্ট্র্যাটেজি নিয়েই চলেন। তবে ঝুঁকির কম-বেশি নেওয়াতে, রিটার্নেও ফারাক দেখা যায়। মার্কেটে এমনই হয়ে থাকে, সাধারণ মানুষের ‘কন্ট্রোল’ করার নেই কোনওভাবেই।
আমার হাতে ১০০ টাকা এলে আমি কীভাবে অ্যালোকশেন করব?
এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমাকে বেশি ভাবতে হবে না। তার কারণ বেশ সহজ– প্রথমেই আমি জানি আজ হেলথ ইনসিওরেন্স খুব প্রয়োজনীয়, তাই ভালো মেডিক্যাল পলিসির জন্য বরাদ্দ করতেই হবে আমাকে। সেজন্য ১০ টাকা সরিয়ে রাখব। যা বাঁচবে, অর্থাৎ ৯০ টাকা, তার সিকি ভাগ ডাইভারসিফায়েড ইকুটি ফান্ডের জন্য। যা পড়ে থাকবে, অর্থাৎ বাকিটা রাখব একাধির মাল্টি-অ্যাসেট ফান্ডে।
কেন মাল্টি-অ্যাসেট ফান্ড?
গ্রাফিক্স দেখে আপনারা আমাকে জিজ্ঞাসা করতেই পারেন কেন আমি বিশেষভাবে মাল্টি অ্যাসেটের কথা বলছি। আমি তো এখানেও পুরোদস্তুর ইকু্যইটি ফান্ডে লগ্নি করতে পারতাম। না, সেটা না করে মাল্টি অ্যাসেটের স্বপক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছি। কারণটা বুঝতেই পারবেন – গোল্ড এবং সিলভার, দুইয়ের জন্যই এই পদ্ধতিটি আমার পছন্দ। ইদানিং দুই কমোডিটিই বেশ জোর কদমে এগিয়ে যাচ্ছে। সোনা বা রুপো ইনভেস্টররা কিনতে আগ্রহী। এবং ফিজিক্যাল পদ্ধতি ছেড়ে আধুনিক পন্থাই তাঁদের পছন্দ।
কেন আর ফিক্সড ডিপোজিট আমার পছন্দ নয়?
এর উত্তরও সহজে বুঝবেন সবাই। আমানতে সুদের হার দেখুন। গড়পড়তা ইনভেস্টর কতটুকুই বা হাতে পান? ট্যাক্স দেওয়ার পর নিট ফলাফল কি অাদৌ সোয়াস্তি দেবে আমানতকারীদের? আমার বিশ্বাস আপনাদের অনেকেই আমার সঙ্গে সহমত হবেন। মানছি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষরা অসন্তুষ্ট হবেন, তাঁদের তো ডিপোজিট লাগবেই, তবুও বলি ইনভেস্টরদের স্বার্থে, সামান্য সুদে আর সাধারণ মানুষ পরিতুষ্ট নন। জিনিসপত্রের দাম দেখুন, কী হারে সব বেড়ে যাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে তো কম সুদ কিছুতেই প্রাসঙ্গিক নয়। এছাড়াও মনে রাখতে হবে, ম্যাচুরিটির আগে উইথড্র করার নানারকম অসুবিধা আছে, শর্ত মেনে তা করতে হয় বেশিরভাগ ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে। আজকালকার ইনভেস্টরদের জন্য এই বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর।
আপনারা যদি সঞ্চয়ী লগ্নিকারীর দলে পড়েন, তবে অবশ্যই কয়েকটি বিষয় জেনে নেবেন। আমি এই নিয়মগুলি মেনে চলি, কিঞ্চিৎ আলোচনাও করি প্রফেশনাল অ্যাডভাইসরের সঙ্গে।
১) পরিকল্পনা করে নিন গোড়াতেই। তারপর তা ‘এক্সিকিউট’ করার দায় কিন্তু আপনারই।
২) ‘বড় টাকা না থাকলে সক্রিয় লগ্নি নয়’– এই চিন্তা না করাই উচিত, বিশেষত বয়সে ছোটদের বলছি।
৩) হাতে বাড়তি টাকা এলে ধার-দেনা (যদি থাকে) মিটিয়ে নেওয়ার কথা ভাবুন। খুব উচ্চ হারে লোন থাকলে তা অবশ্যই শোধ করার চেষ্ট করুন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.