প্রতীকী ছবি
জীবন সহজ হয়, সুখের হয় পরিকল্পনামাফিক চললে। সঞ্চয়ের দুনিয়াও এই নিয়ম মেনে এগোয়। ফলে যত দ্রুত পরিকল্পনা করবেন, যত যথাযথভাবে পরিকল্পনা করবেন, তত মধুর ফল পাবেন শেষে গিয়ে। বিস্তারিত আলোচনায় সর্বাণী সাধু
জীবন হোক বা সঞ্চয়, ঠিকঠাক পরিকল্পনা না করা থাকলে আমাদের প্রায়শই কোনও না কোনও অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। তাই আজ আমরা আলোচনা করব সঞ্চয়-এর যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে।
ধরে নেওয়া যাক, কোনও একজন ব্যক্তি, যিনি কোনও এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। এবার তঁার যদি সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করা হয়, তাহলে তঁার নির্দিষ্ট দায়বদ্ধতা (এক্ষেত্রে কোনও ঋণ থাকলে তা বাড়ি হোক বা গাড়ি, সাংসারিক খরচ, নিজস্ব খরচ এবং যদি সন্তান থাকে তাহলে তঁার প্রতিপালনের প্রয়োজনীয় খরচ) প্রথমে জানতে হবে এবং সেইমতো তঁার পরিকল্পনা করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ আমরা তার সম্পূর্ণ সঞ্চয়ের পরিকল্পনাকে মোট চারটি ভাগে বিভক্ত করব।
প্রথমত, আমরা তার জন্য একটি ইমার্জেন্সি বা আপৎকালীন ফান্ড তৈরি করব যাতে কোনওরকম বা তাৎক্ষণিক বা আকস্মিক অর্থনৈতিক প্রয়োজন তিনি এই অংশ থেকে মেটাতে পারেন। যাতে তাঁর কোনওরকম দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আকস্মিকভাবে নষ্ট না হয়।
এই জাতীয় খাত তৈরি করার সময় আমরা কখনোই ঝুঁকিপূর্ণ ফান্ডে নিবেশ করব না কারণ এই টাকা যে কোনও সময় তুলতে হতে পারে এবং যাতে আমাদের পুঁজি অক্ষত থাকে তাও সুনিশ্চিত করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ লিকুইড ফান্ড, আল্ট্রা শর্ট টার্ম ফান্ড, ওভার নাইট ফান্ডে টাকা রাখা যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, স্বল্পমেয়াদী খাত– এই খাতে আমাদের ২-৩ বছরের উদ্দেশ্যে যে কোনও নিবেশ গ্রহণযোগ্য, উদাহরণ হিসাবে কোনও বড় ক্রয় যেমন বাড়ি অথবা গাড়ি কেনার প্রাথমিক মূল্য (Down Payment), কোথাও বেড়াতে যাওয়া, কোনও শখের জিনিস কেনা–এ সবকে বিবেচনা করতে পারি। এক্ষেত্রে আমরা ডেট ফান্ড বা একদম কম ঝুঁকিপূর্ণ হাইব্রিড ফান্ডকে বেছে নিতে পারি।
তৃতীয়ত, মধ্যমেয়াদী খাত – এই খাতে আমরা ৩-৫ বছরের জন্য নিবেশ করতে পারি। উদাহরণস্বরূপ– সন্তানের স্কুলে ভর্তির প্রাথমিক টাকা, বিদেশ ভ্রমণ, কোনও বেশি সুদে চলাকালীন ঋণের কিছুটা অংশ পরিশোধ (কিছুক্ষেত্রে পুরোটা)–এ সবকে বিবেচনা করতে পারি। এক্ষেত্রে অ্যাগ্রেসিভ হাইব্রিড, মাল্টি অ্যাসেট, লার্জ ক্যাপ বা ফ্লেক্সিক্যাপ ফান্ডকে আমরা কাজে লাগাতে পারি।
চতুর্থত, দীর্ঘমেয়াদী খাত – ৫-১০ বছর বা তার বেশি যে কোনও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা দীর্ঘমেয়াদী খাতের অন্তর্ভুক্ত, যেমন বাচ্চার উচ্চতর শিক্ষা, নিজেদের অবসরের পরিকল্পনা ইত্যাদি।
এক্ষেত্রে আমরা চোখ বন্ধ করে স্মলক্যাপ, মিড ক্যাপের মতো ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করতে পারি। কারণ যেহেতু আমাদের হাতে অনেকটা সময় আছে তাই ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ আমাদের সাধারণের থেকে বেশ কিছুটা বেশি লভ্যাংশ পেতে সাহায্য করবে।
পরিকল্পনা আমাদের জীবনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। আর্থিক বা বিনিয়োগের পরিকল্পনা আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোকে মজবুত করে। তাই অতি অবশ্যই যথাযথ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করে বিনিয়োগ করুন এবং সেটা যতটা আগে আমরা করতে পারব, আমাদের অর্থনৈতিক পথ তত বেশি মসৃণ হবে।
(লেখিকা কো-ফাউন্ডার, বৃশাঙ্ক ফিনান্সিয়াল সার্ভিস)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.