ষষ্টিতে যেমন তেমন, কিন্তু সপ্তমী পড়ে গিয়েছে! ফলে সকাল থেকে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে আট থেকে আশি...অগুন্তি মানুষের ভিড়। দক্ষিণের এই পুজোগুলো না দেখলেই নয়। গড়িয়াহাট থেকে রাসবিহারীর পথেই যেমন ত্রিধারা সম্মিলনীর পুজো। এবারের থিম ‘চলো ফিরি’। এই থিমের হাত ধরে আপনি পৌঁছে যাবেন অঘোরীদের ডেরায়!
দক্ষিণ কলকাতায় এবার ‘দক্ষিণ ভারত'! নেপথ্যে ৬৬ পল্লী পুজো কমিটি। উত্তর কেরলের বিখ্যাত আদি নৃত্যশৈলি 'থাইয়ম'কে উপজীব্য করে এবার সেজে উঠেছে কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত পুজোর মণ্ডপ এবং ঠাকুর। ৭৫তম বর্ষে দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে ৬৬ পল্লীর চমকে দেওয়া শারদ আয়োজন।
দর্শনার্থীদের মতোই পুরস্কার কমিটিগুলিও ৬৬ পল্লীর আয়োজন দেখে মুগ্ধ। ইতিমধ্যে একাধিক সম্মান পেয়েছে দক্ষিণের অন্যতম সেরা কমিটি। এর মধ্যে অন্যতম হল বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান। সেরা সাবেকি পুজো বিভাগে পুরস্কার জিতে নিয়েছে দক্ষিণ কলকাতায় ‘দক্ষিণ ভারত'!
পুজো মানেই কেবল চমক আর রঙিন আলোর ঝলকানি নয়। পুজো মানে ঐতিহ্যের পথ ধরে হাঁটাও। ২০২৫ সালের শারদ আয়োজনে সেকথা মনে করাল সমাজসেবী সংঘ। ৮০তম বর্ষে নিজেদের ক্লাবের দীর্ঘ পথচলার কাহিনি ফুটে উঠেছে এই মণ্ডপে।
একটি পুজোর বয়স যখন আট দশক হয়, তখন চোখের সামনে জন্ম নেয় বহু ইতিহাস। সেই ইতিহাসকে, 'পথের পাঁচালী'কে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপসজ্জায়। হ্যাঁ, সমাজসেবী সংঘের এবারের থিম 'পথের পাঁচালী'। আরও একবার দর্শকদের মন জয় করেছেন শিল্পী প্রদীপ দাস।
দক্ষিণ কলকাতার আদি পুজোর মধ্যে একটি হল বালিগঞ্জ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন৷ ৭৫তম বর্ষে তাদের থিম 'প্রথা'। এই 'প্রথা'-র মধ্য দিয়েই ক্লাব কর্তৃপক্ষ তুলে ধরেছে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার অদ্ভুত এক মেলবন্ধন।
বালিগঞ্জ কালচারালের মণ্ডপের আশপাশের পুরনো বাড়িগুলিও হয়ে উঠেছে থিমের অংশ। দর্শনার্থীরা যখন মণ্ডপে প্রবেশ করবেন, তাঁরা যেন সময়ের স্রোতে পিছিয়ে যাবেন। দেবীর রূপেও প্রতিফলিত হয়েছে সাবেকিয়ানার ছোঁয়া।
হিন্দুস্থান ক্লাবের থিম 'চেতনায় রঙিন আলপনা'। অপূর্ব মণ্ডপটি সাজিয়ে তুলেছেন শিল্পী শিবশংকর দাস। প্যান্ডেল জুড়ে আলপনার কাজ। পুজোমণ্ডপের আবহ সাজানো হয়েছে নবরাত্রির ধাঁচে। রাজস্থান এবং বাংলার মিনেকারি কাজে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ।
হিন্দুস্তান পার্কের এবারের এই পুজো মণ্ডপের থিম লোকজ। অর্থাৎ লোক-সংস্কৃতিকে তুলে ধরা। পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় বঙ্গের ঐতিহ্য আদিবাসী মানুষের সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে এখানে। পুজো মণ্ডপে তৈরি হয়েছে বিশেষ স্টেজ। সেখানে হলুদ-লাল শাড়ি পরে সাঁওতালি নাচ নাচছেন মহিলারা। বাজছে ধামসা-মাদল।
হিন্দুস্তান পার্কের মাতৃপ্রতিমাতেও রয়েছে আশ্চর্য চমক। এখানে দেবীর সঙ্গে চেনা বাহন সিংহকে দেখা গেলেও তার পিঠে বসেননি মা। বরং মাদুর্গা বসে আছেন চেয়ারে। মা যে সবার, তিনি যে বিভিন্ন জায়গায় এক এক রূপে পূজিত হন, সেই ভাবনাই তুলে ধরা হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম আকর্ষণ এই পুজো মণ্ডপে।
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.