একচালা দেবী প্রতিমা। টানা চোখ। দুই পাশে ছেলে-মেয়েরা। দেবী দুর্গার এই রূপের সঙ্গেই বাঙালির পরিচয় দীর্ঘদিনের। তবে থিমের রমরমায় হারিয়ে যাচ্ছে সেই চিত্র। বনেদি বাড়ির পুজো ছাড়া মায়ের এই রূপ প্রায় দেখাই যায় না। কিন্তু আজও কিছু বারোয়ারি পুজো এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে।
দক্ষিণ কলকাতার আদি বালিগঞ্জ সর্বজনীন দুর্গাপুজো পরিষদ। এবার তাদের পুজোর বয়স ৯৯ বছর। দক্ষিণ কলকাতার দ্বিতীয় পুরনো পুজো। কলকাতাজুড়ে পুরনো বারোয়ারি পুজোর বিচারে চতুর্থ তারা।
ভবানীপুরের বলরাম বসু ঘাট রোড বারোয়ারি, মধ্য কলকাতার পটলডাঙা, বাগবাজারের পরই এই পুজোর স্থান। গড়িয়াহাট সন্নিহিত গোলপার্কের এই পুজোর মূল আকর্ষণ আজও সাবেকিয়ানা।
এই পুজো কমিটির এবারের ট্যাগ লাইন '৯ পিঠে ৯, না দেখলেই নয়।' বহু ঝড় ঝাপটা সহ্য করে ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে তারা। দেবীর বোধন থেকে বিসর্জন সবটাই হয় নিয়ম মেনে।
এই বারোয়ারি পুজোর প্রতিমার উচ্চতা ২১ ফুট। সাবেকিরূপেই মাকে সাজানো হয়েছে। মণ্ডপের সামনে থাকবে শিবের একটি ফাইবার গ্লাসের মূর্তি।
কাপড়ের মণ্ডপের গায়ে দেখা যাবে ফোম শিটের উপর কারুকার্য। সেই সঙ্গে মানানসই আলোকসজ্জা। যার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য ইসকন মন্দিরের চূড়ার রেপ্লিকায় আলোকমালা।
এই বারোয়ারি পুজোর প্রতিমা তৈরি করেছেন শিল্পী কুমারটুলির জিতেন পাল অ্যান্ড সন্স। প্রতিমার রূপদান করেছেন নব পাল। কুমারটুলির মৃৎশিল্পীদের কথায়, "বাংলার ঠাকুর বিরাজমান হবেন গোলপার্ক আদি বালিগঞ্জের শিবালয়ে।"
এই বারোয়ারি পুজো কমিটির বক্তব্য, আটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে কলকাতায় শুরু হয় থিমের পুজো। সাবেকি ডাকের সাজের একচালার প্রতিমা দর্শনার্থীদের কাছে ব্রাত্য হয়ে যায়। গড়িয়াহাট সন্নিহিত এই পুজো কমিটি সাবেকিয়ানা থেকে সরে আসেনি বলে জানাচ্ছেন তারা।
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.