Advertisement
Advertisement
Bhoot Chaturdashi

ভূত চতুর্দশীতে কেন ১৪ শাক খেয়ে চোদ্দো বাতি জ্বালানো হয়? জেনে নিন আসল কারণ

অনেকের কাছেই হয়তো এই রীতির কারণ অজানা।

Bengal's Bhoot Chaturdashi ritual of choddo shaak
Published by: Sayani Sen
  • Posted:October 18, 2025 12:22 pm
  • Updated:October 18, 2025 12:28 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভূত চতুর্দশী। শব্দ দু’টি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে অন্ধকার রাত। আর গা ছমছমে সেই রাতে তেনাদের বিচরণ। দীপান্বিতা অমাবস্যার আগে চতুর্দশী তিথিতেই পালিত হয় ভূত চতুর্দশী। হিন্দু শাস্ত্র মেনে অনেকেই এই দিনটিতে বাড়িতে চোদ্দো প্রদীপ জ্বালান এবং চোদ্দোরকমের শাক খেয়ে থাকেন। কিন্তু অনেকের কাছেই হয়তো এই রীতির কারণ অজানা। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঠিক কোনও বিশ্বাসে ভর করে এই নিয়ম পালিত হয় ঘরে ঘরে।

Advertisement

হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে, এদিন মৃত পূর্ব পুরুষরা মর্ত্যে আসেন৷ তাঁদের খুশি করতে এবং অতৃপ্ত আত্মাদের অভিশাপ থেকে বাঁচতেই কিছু প্রথা মানা হয়। সেই প্রথারই অংশ চোদ্দ শাক খাওয়া ও চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানো। হিন্দুদের বিশ্বাস, মৃত্যুর পর দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। অর্থাৎ আকাশ, মাটি, জল, হাওয়া, অগ্নি- প্রকৃতির এই পাঁচ উপাদানের মধ্যেই মিশে থাকেন পূর্বপুরুষরা। আর তাই প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করা ১৪ রকমের শাক মৃত ১৪ পুরুষের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। জয়ন্তী, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, ওল, পুঁই, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, নিম, পলতা, শৌলফ, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা ও শুষণী- মূলত এই ১৪ রকমের শাক রান্না করা হয়। ১৪ শাক ধুয়ে সেই জল ছিটিয়ে দেওয়া হয় বাড়ির প্রতিটি কোণে। একই সঙ্গে প্রেত ও অশুভ শক্তি দূর করতে এই দিন সন্ধেয় বাড়িতে ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকেন বাঙালি গৃহস্থরা।

Kali Puja 2025: Know the Rule Where to Place the Choddo Prodip in Your House on Bhoot Chaturdashi

পুরাণ মতে, দানবরাজ বলির স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখলের পরই নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে রাক্ষসরা। যে আক্রোশের শিকার হন দেবতারাও। বলির তাণ্ডব ঠেকাতে বৃহস্পতি বিষ্ণুকে একটি উপায় বলে দেন। বামনের ছদ্মবেশে আবির্ভূত হন বিষ্ণু। রাজা বলির কাছে তিন পা সমান জমি ভিক্ষা চান তিনি। তবে বলি বুঝতে পারেন, বামনের ছদ্মবেশে ইনি আসলে ভগবান বিষ্ণু। তা সত্ত্বেও ভিক্ষা দিতে রাজি হয়ে যান রাজা। এরপরই দু-পা দিয়ে স্বর্গ ও মর্ত্য দখল করে নেন বিষ্ণু। নাভি থেকে বেরিয়ে আসা তৃতীয় পা রাখেন স্বয়ং বলি রাজার মাথায়। বিষ্ণু পদস্পর্শে পাতালে নেমে যান বলি। সেই থেকে পাতালেই তাঁর বাস। তবে সব জেনেও বিষ্ণুকে ভিক্ষা দিতে রাজি হওয়ায় বলি হয়ে ওঠেন করুণার পাত্র। বিষ্ণু আশীর্বাদ দেন, প্রতি বছর মর্ত্যে তাঁর পুজো হবে। মনে করা হয়, সেই থেকে কালীপুজোর আগের রাতে বলি রাজা পাতাল থেকে পুজো নিতে মর্ত্যে আসেন। সহচর হিসেবে থাকে শত সহস্র ভূত ও অশরীরী!
তবে ১৪ শাক খাওয়া ও ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর পিছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। বৈজ্ঞানিক মতে, ঋতু পরিবর্তনের জন্য এই সময় নানা ধরনের অসুখ হয়ে থাকে। ১৪ শাক খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। আবার হেমন্তের শুরুতে পোকার উপদ্রব দূর করতে বাড়িতে ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ