সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দুধর্মে ভূদেবী হলেন পৃথিবীর প্রতিনিধিত্বকারী দেবী। তিনি লক্ষ্মীর তিনটি রূপের মধ্যে একটি। আর শস্য-শ্যামলা বসুন্ধরায় উৎপাদিত ধানকে এই দেবীরই প্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ধান চাষকে ভক্ত এবং ভূদেবীর মধ্যে একটি সংযোগের মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। বৈদিক যুগ থেকেই এই স্বীকৃতি রয়েছে। হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে ধান উৎসর্গ করার রীতি রয়েছে। ধান এবং ভূদেবীর মধ্যে এই সংযোগ হিন্দু অনুষ্ঠানরীতিতে ‘অক্ষত চাল’-এর গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
পুজোর উপাচার হিসেবে এই চালকেই নৈবেদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে যেনতেন ভাবে থালাতে স্রেফ চাল সাজিয়ে দিলেই তা সাঙ্গ হয় না। এই চাল দিয়েই দেবীকে অর্ঘ্য দেওয়া হয়। ঘট স্থাপন এবং অন্যান্য কাজেও অক্ষত চাল আবশ্যক। কোনও কোনও ক্ষেত্রে চালের সঙ্গে মেশানো হয় সিঁদুর কিংবা হলুদগুঁড়ো। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পঞ্চ দেবতার পুজোর ক্ষেত্রে এই চাল আবশ্যক। গণেশ, দুর্গা, শিব, বিষ্ণু এবং রামের পুজো অক্ষত চাল ছাড়া সম্ভব নয়।
হিন্দু ধর্মের একাধিক আচার পালনের ক্ষেত্রেও অক্ষত চাল ছিটানো হয়। যে উপাচারেই পুজো হোক না কেন, পঞ্চোপাচার বা ষড়শোপাচার- সব ক্ষেত্রেই অক্ষত চাল মূল উপাচার। আবার পুজোর উপকরণে অন্যান্য দ্রব্য ঠিকমতো জোগাড় করতে না পারলেও এই অক্ষত চাল ব্যবহার করে পুজো করা সম্ভব।
শাস্ত্রমতে অক্ষত চাল অখণ্ডতার প্রতীক। এই উপাচারেই যাবতীয় দৈব শক্তির সঞ্চার হতে পারে। অনেক সময় পুজোর শেষে মন্ত্রপুত চাল রেখে দেওয়ার কথাও শোনা যায়। এ আসলে ওই অক্ষত চাল-ই যা দেবপুজোয় ব্যবহার করায় তার মধ্যে শুভ শক্তির সঞ্চার ঘটেছে। শাস্ত্রজ্ঞদের মতে, ভগবানকে নৈবেদ্য প্রদানের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে চাল যেন কোনওভাবেই ভাঙা না হয়। অল্প হলেও, যেটুকু ব্যবহার করা হবে তা যেন অখণ্ড হয়। আর বলাইবাহুল্য, লালবাবা রাইস এমনই এক চাল যা দেবীপুজোয় আমান্ন নৈবেদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। স্বাদে ও সুগন্ধে প্রতিটি দানাই অখণ্ড ও সম্পূর্ণ। এই অক্ষত চালই দুর্গাপুজোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.