Advertisement
Advertisement
Kali Puja 2025

বাংলার ঘরে ঘরে মাতৃরূপে দেবী কালিকার আরাধনা কীভাবে শুরু হয়েছিল? জেনে নিন সেই কাহিনি

কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ দেবীকে কীভাবে সাকার রূপ দিয়েছিলেন, তা নিয়ে রয়েছে বহু গল্পকথা।

Kali Puja 2025: How did the worship of Goddess Kalika as a mother begin in every household of Bengal, Know the story
Published by: Buddhadeb Halder
  • Posted:October 13, 2025 6:15 pm
  • Updated:October 13, 2025 6:18 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর কয়েকদিন পর কালীপুজো। এ বছর সোমবার, ২০ অক্টোবর কার্তিক অমাবস্যা তিথিতে পড়েছে মায়ের আরাধনার শুভ মুহূর্ত। বর্তমানে ঘরে ঘরে পূজিতা হন দেবী কালিকা। অথচ এক সময় দেবী ছিলেন একশ্রেণির কাপালিকের কুক্ষিগত সম্পদ। শ্রীচৈতন্য সমসাময়িক কাপালিটোলাগুলির কর্মকাণ্ড এমনই প্রমাণ রেখে গিয়েছে। কিন্তু তাদের হাত থেকে দেবীকে মুক্ত করে বাঙালির ঘরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সাধকশ্রেষ্ঠ কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ। লড়াইটা সহজ ছিল না মোটেও। কী ঘটেছিল? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

Advertisement

Kali Puja 2025: How did the worship of Goddess Kalika as a mother begin in every household of Bengal, Know the story

চৈতন্য পূর্ববর্তী সময়কাল থেকেই নবদ্বীপ ছিল শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদের ভূমি। শাক্ত সাধনার বেশ চল ছিল সেখানে। সেখানে দেবী কালীর আরাধনা করতেন তান্ত্রিক ও কাপালিকেরা। সেই দেবীকে তাঁরা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রেখেছিলেন। এই সময় সাধারণ কাপালিকদের কর্মকাণ্ড ছিল বিভীষিকাময়। ফলে, সাধারণ মানুষ ভয়মিশ্রিত ভক্তিতে দূর থেকে দেবীকে দেখেছে। কোনও দিন আর ভক্তির আবেশে ঘরের ‘মা’ বলে ডাকার সাহস করে উঠতে পারেনি।

সপ্তদশ শতকের কথা। কাপালিটোলাগুলির অশাস্ত্রীয় কার্যকলাপের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করলেন কৃষ্ণানন্দ। কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। একদিকে যখন সাধারণ মানুষের জীবন অতীষ্ঠ করে তুলেছে কাপালিকেরা, ঠিক তখনই ভয়াল দেবী থেকে আদরণীয়া মা-কে ঘরে প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লেন কৃষ্ণানন্দ। ‘তন্ত্রসার’ পুঁথি রচনায় নিজেকে বিভোর রাখলেন। সেই সময় শুদ্ধাচারে তন্ত্র সাধনা প্রতিষ্ঠিত করে ঘরে ঘরে শক্তি আরাধনা প্রবর্তন করার জন্য কৃত সংকল্প হলেন তিনি। কিন্তু দেবীকে আকার দিতে কালীযন্ত্রের বদলে প্রতিমা প্রয়োজন পড়বে। মায়ের রূপ যে ভয়াল নয়, তিনি যে বাঙালির ঘরেরই মা, তা সকলকে বোঝানো দরকার।

Kali Puja 2025: How did the worship of Goddess Kalika as a mother begin in every household of Bengal, Know the storyকীভাবে কৃষ্ণানন্দ দেবীকে সাকার রূপ দিয়েছিলেন তা নিয়ে নানা গল্প আছে। তবে সবচেয়ে প্রচিলত যেটি, তা বড় রোমাঞ্চকর। কথিত আছে, রাতভর মায়ের নাম স্মরণ করে সকালে কৃষ্ণানন্দ গঙ্গাস্নানে যাচ্ছিলেন। তখনও দিনের ব্যস্ততা শুরু হয়নি। ব্রাহ্ম মুহূর্তের পূর্ব মুহূর্ত। অন্ত্যজ পল্লী দিয়ে পথ চলার সময় আগমবাগীশ দেখলেন, এক কিশোরী মাটির দেওয়ালে ঘুঁটে দিচ্ছে। মেয়েটির গাত্রবর্ণ ঘোর কৃষ্ণ। কেশরাজি কোমর স্পর্শ করেছে। পরনের বস্ত্র অসংলগ্ন। আচমকা কৃষ্ণানন্দকে দেখে লজ্জায় জিভ কাটল মেয়েটি। তা দেখে কৃষ্ণানন্দের সারা শরীর শিহরিত হল। এই চিত্রটি তাঁর মনে গেঁথে গেল। মানসপটে আঁকা এই ছবিটিকেই গঙ্গামাটিতে মায়ের রূপ দিলেন তিনি। বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হল মূর্তিরূপে দেবী কালীর আরাধনা। করাল বদনা ভয়াল দেবী ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন বাঙালির আদরণীয়া ও মঙ্গলময়ী মূর্তি।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ