Advertisement
Advertisement
Kali Puja 2025

দক্ষিণাকালী ও শ্মশানকালীর পুজোয় তফাত কোথায়? জেনে নিন শাস্ত্রের ব্যাখ্যা

দেবীর দুই রূপের পুজোয় ফারাক রয়েছে বিস্তর।

Kali Puja 2025: What is the difference between Dakshinakali and Smashan Kali
Published by: Buddhadeb Halder
  • Posted:October 18, 2025 4:15 pm
  • Updated:October 18, 2025 4:15 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিভিন্ন নামে ও রূপে দেবী কালিকা এই বাংলায় অনন্তকাল ধরে পূজিত হয়ে আসছেন। তোড়ল তন্ত্র অনুসারে কালী অষ্টধা—আটটি রূপ। আবার মহাকাল সংহিতা অনুসারে কালীর ন’টি রূপ। দেবী আদ্যাশক্তি। স্থির, নিষ্ক্রিয় অবস্থায় তিনি ব্রহ্ম। ব্রহ্ম যখন সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখনই তিনি কালী রূপে প্রতিভাত হন। তাই, দেবীকে নানা রূপে আরাধনা করাই ব্রত। দেবীর রয়েছে একাধিক রূপ ও নাম। সেই মতো পূজা পদ্ধতিও ভিন্ন। কালিকাপুরাণ ও অন্যান্য তন্ত্র গ্রন্থগুলিতে দেবী কালিকার বিভিন্ন রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়। কালীর বিভিন্ন রূপের মধ্যে একটি হল শ্মশানকালী। অন্যটি দক্ষিনাকালী। এই দুটি রূপেই পূজিতা হন দেবী। কিন্তু দুই-এর পুজোয় ফারাক রয়েছে বিস্তর।

Advertisement

Kali Puja 2025: What is the difference between Dakshinakali and Smashan Kali

রামপ্রসাদ সেনের গুরু কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ স্বপ্নে আদেশ পান কালীর প্রসন্ন ভাবমূর্তি তৈরি করার। স্বপ্নে দেবী তাঁকে জানান পরবর্তী ভোরে যে নারীকে তিনি সবার আগে দেখবেন তার রূপ অনুযায়ী কালীর এক প্রসন্ন প্রতিমূর্তি তৈরি করতে। পরবর্তী ভোরে যে নারীকে প্রথম তিনি দেখেন তিনি কৃষ্ণবর্ণা। তাঁর ডান-পা সামনে। উন্মুক্ত কালো কেশ এবং বাম হাত উত্তোলনের দ্বারা দেওয়ালে গোবর স্থাপন করছেন। আকস্মিক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশকে সামনে দেখে সেই মহিলা খুব লজ্জা পেলেন এবং তাঁর জিভ বার করে দাঁত দিয়ে চাপলেন। সেই নারীর রূপ অনুসরণ করে আগমবাগীশ মহাশয় কালীতন্ত্রের মূর্তিতত্ত্ব অনুযায়ী দক্ষিণাকালীর মূর্তি তৈরি করেছিলেন। দক্ষিণাকালী করালবদনা, ঘোরা, মুক্তকেশী, চতুর্ভুজা এবং মুণ্ডমালাবিভূষিতা। তাঁর বাম করযুগলে সদ্য ছিন্ন নরমুণ্ড ও খড়া। দক্ষিণ করযুগলে বর ও অভয় মুদ্রা। তাঁর গাত্রবর্ণ মহামেঘের ন্যায় (কখনো-বা অঞ্জন পর্বতের ন্যায়) ঘোর শ্যাম, কপূরাদি স্তোত্রে “ধ্বান্তধারাধররুচি”। সকল রং যেমন কালোতে মিশে যায়-লয় পায়, তেমনি জীবাত্মা-পরমাত্মা সনাতনী পরমাপ্রকৃতি সত্যস্বরূপিণী দক্ষিণাকালীতেই বিলীন হয়। দক্ষিণাকালীর ডান পা শিবের বুকের উপর থাকে। তিনি কালীর অন্যান্য রূপ থেকে আলাদা এবং তাঁকে গৃহে ও মন্দিরে পূজা করা হয়। দক্ষিণাকালীর পুজো সাধারণত পুরোহিতেরা ধ্যান-মন্ত্র জপ করে সাধারণ নিয়মেই করে থাকেন।

Kali Puja 2025: What is the difference between Dakshinakali and Smashan Kali

দশম মহাবিদ্যার প্রথম বিদ্যা বা কালীর প্রথম রূপ হল শ্মশানকালী। বাংলার প্রায় সব শ্মশানেই শ্মশানকালী পুজো হয়। কোথাও শ্মশানে মন্দির করে প্রতিদিন পুজো হয়। কোথাও বা বাৎসরিক পুজো পেয়ে থাকেন দেবী। এই দেবীর বর্ণনায় বলা হয়েছে- ইনি কৃষ্ণবর্ণ ও শুষ্ক শরীরবিশিষ্টা। চোখ রক্তবর্ণ। এই দেবীর ডান হাতে থাকে সদ্য ছিন্ন নরমুণ্ড। আর বাম হাতে থাকে নরমুণ্ড নির্মিত পানপাত্র। এই পুজো তান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়ে থাক। দেবীর উপাচারে তান্ত্রিকরা মৎস, মাংস ও মদ্য ব্যবহার করেন। যদিও এটি একটি সংকেত মাত্র। এই শ্মশানকালীর পুজোয় দক্ষিনাকালী পুজোর চেয়ে কিছুটা আলাদা হলেও মায়ের মূল বীজমন্ত্র যেকোনও রূপভেদেই এক।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ