Advertisement
Advertisement
Jagannath Dev Snana Yatra

মাহেশে সমারোহে স্নানযাত্রা, কী এর পৌরাণিক ব্যাখ্যা?

মাহেশের জগন্নাথ অর্চনা ৬২৮ বছরের প্রাচীন।

Mythological significance of Jagannath Dev Snana Yatra
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:June 22, 2024 3:59 pm
  • Updated:June 22, 2024 3:59 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং প্রভু জগন্নাথ। মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্নকে বলেছিলেন, আবির্ভাব তিথিতে যেন তাঁকে বাইরে মণ্ডপে এনে স্নান করানো হয়। জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার এটিই গোড়ার কথা। তবে এর নেপথ্যে আছে আরও এক পৌরাণিক কাহিনি। কলিতে যিনি জগন্নাথ, বিশ্বাস মতে দ্বাপরে তিনিই তো ছিলেন কৃষ্ণ। গোপীদের স্নান আর বস্ত্রহরণের কাহিনি তো সুবিদিত। সেদিন রাধারানি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, এমন দিন আসবে যখন জগতের সামনেই হবে জগতের প্রভুর স্নান। সেই পুণ্যস্নানের মহালগ্নই কলিতে প্রভু জগন্নাথের স্নানযাত্রা। দেশের সব প্রান্তের জগন্নাথ মন্দিরে (Jagannath Temple) এই তিথির উদযাপন পরম ভক্তিভরে। একইভাবে মাহেশে মহাসমারোহে হল এবছরের স্নানযাত্রা।

Advertisement

Mythological significance of Jagannath Dev Snana Yatra

মাহেশের এই জগন্নাথ অর্চনা ৬২৮ বছরের প্রাচীন। মাহেশের সেবাইত তমালকৃষ্ণ অধিকারী জানাচ্ছেন, স্বপ্নাদিষ্ট দারুমূর্তি আজও একই রকম ভাবে আছে, যা মাহেশের বিশেষ মাহাত্ম্য। এত বছর ধরে ঘড়া ঘড়া জল-দুধে স্নান সত্ত্বেও মূর্তি আছে অবিকল। মাহেশের স্নান প্রক্রিয়ারও আছে নিজস্বতা। ভাদ্রমাসে এই এলাকায় দেখা দেয় ষাঁড়াষাঁড়ি বান। সেই জল তুলে রাখা হয় জগন্নাথের স্নানের জন্য। বিশেষ সেই জলের সঙ্গে থাকে দেড় মন দুধ। সকলের সামনেই অনুষ্ঠিত হয় এই পুণ্যস্নানের মুহূর্ত। ভক্তমনের বাঞ্ছা পূর্ণ করতেই জগন্নাথের এই লীলা।

Mythological significance of Jagannath Dev Snana Yatra

[আরও পড়ুন: রত্নভাণ্ডার খোলার কোনও প্রস্তাবই আসেনি, এএসআইয়ের দাবি ওড়াল ওড়িশা সরকার]

মাহেশের রথেরও আছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। পুরীতে (Puri) জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার জন্য তিনটি আলাদা রথ থাকে। মাহেশে ত্রিমূর্তি থাকেন একটিই রথে। সেই রথের উচ্চতা ৫০ ফুট। পুরীর রথের থেকেও এই রথ উচ্চতায় বেশি। মনে করা হয়, জগন্নাথের এত উচ্চ রথ আর দ্বিতীয়টি নেই। উচ্চতা অনুযায়ী রথের ওজনও বেশ ভারী, এই রথ ১২৫ টনের। শ্যামবাজারের বসু পরিবারের কৃষ্ণরাম বসু এই রথ দান করেছিলেন। তার নেপথ্যেও আছে এক কাহিনি, শোনাচ্ছিলেন তমালকৃষ্ণ- ‘আগেকার দিনে অনেকেই ভাবতেন, রথে যদি প্রাণ দেওয়া যায়, তাহলে স্বর্গ লাভ হবে। এরকম ঘটনা ঘটেছিল। অনেকে রথের চাকার তলায় শুয়ে পড়তেন। ফলে বারবার রথের চাকা, বা রথ পরিবর্তন করতে হত। সেই সমস্যা দূর করতেই এই লোহার রথ তৈরি করে দিয়েছিলেন কৃষ্ণরাম বসু। চার তলা এই রথেরও আছে নিজস্ব ব্যাখ্যা- চৈতন্যলীলা, রামলীলা, কৃষ্ণলীলা এবং শীর্ষে আরোহণ করেন প্রভু জগন্নাথ।’

Mythological significance of Jagannath Dev Snana Yatra

[আরও পড়ুন: ১০৮ কলসির জলে স্নান করবেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা, কোন পূণ্যলগ্নে এবারের স্নানযাত্রা?]

স্নানযাত্রা থেকে রথযাত্রার এই অন্তর্বতী সময়ে অন্তরালে থাকেন জগন্নাথ (Shree Jagannath)। কথিত আছে, এই সময় জ্বরে ভোগেন তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে কবিরাজ এসে পাঁচন তৈরি করে প্রভুর নিরাময়ের ব্যবস্থা করেন। তারপর আসে রথযাত্রার মুহূর্ত। কথিত আছে, রথে উপবিষ্ট জগন্নাথকে দর্শন করলে আর পুনর্জন্মের ভয় থাকে না। স্নানযাত্রা থেকেই সেই মহালগ্নের সূচনা হয়ে গেল মাহেশেও।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ