সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাতে গোনা আর ক’দিন। তারপরই মর্ত্যে দেবীর আগমন। গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতীকে নিয়ে ভরা সংসারে দেবী চারদিনের জন্য বাপের বাড়ি আসেন। ভক্তেরা এই চারদিন দেবী আরাধনায় মগ্ন থাকেন। এই সময় ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী– প্রতিটি দিনই দেবীকে নৈবেদ্য দেওয়ার প্রথা রয়েছে। দুর্গাপুজোর অকালবোধনে দেবী আমন্ত্রণের মাধ্যমে এই নৈবেদ্য দেওয়ার সূচনা ঘটে।
নৈবেদ্য হিসেবে দেবীকে প্রতিদিন নানা ধরনের ভোগ দেওয়ার বিধি রয়েছে। অন্নভোগে খিচুড়ির প্রাধান্যই বেশি। এমনকী মনসামঙ্গলেও এর উল্লেখ রয়েছে। মা দুর্গা স্বয়ং নিজে ডাবের জল দিয়ে চালে-ডালে ফুটিয়ে মহাদেবকে খিচুড়ি রান্না করে দিয়েছিলেন। সেই অন্ন গ্রহণ করে মহাদেব সন্তুষ্ট হন।
তবে কুলাচার মেনে বিভিন্ন স্থানে ভোগের পার্থক্য দেখা যায়। কোনও কোনও জায়গায় দেবীর পুজোয় প্রাধান্য পায় অন্নভোগ। আর এই অন্নভোগেরও রয়েছে অনেক ভাগ। দুর্গাপুজোর চিরাচরিত প্রথা মেনে বহু জায়গাতেই খিচুড়ি ভোগের চল রয়েছে। বড় বড় সাইজের কড়াইয়ে সুগন্ধী চালের খিচুড়ি ভোগ রান্না হতে দেখা যায়। পুজোর সময় ঠাকুর দেখতে আসা মানুষের মধ্যে সেই ভোগ বিতরণ করা হয়।
অন্নভোগে খিচুড়ি ছাড়াও রয়েছে ঘি-ভাত, পোলাও, এমনকী পান্তা ভাতও। চারশো বছরেরও বেশি পুরনো সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বাড়ির পুজোকেই ধরা যাক। ১৬১০ সাল থেকে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। এখানে সপ্তমীর ভোগে মা-কে নিবেদন করা হয় খিচুড়ি। সঙ্গে নানা ধরনের তরিতরকারি, চাটনি, পাঁপড় প্রভৃতি। আবার অষ্টমীতে ভোগ হিসেবে থাকে ভাত, শুক্তো, এঁচোড়, মোচা, মাছ। আর সন্ধিপুজোতে ভোগে থাকে খিচুড়ি ও ল্যাটামাছ। আবার অন্নভোগে দেবীকে পান্তা দেওয়ার চলও রয়েছে। দশমীতে আদরের মেয়েকে পান্তা খাইয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠানোর বিধি রয়েছে রায়চৌধুরী বাড়িতে।
কাজেই একেক জায়গায় পুজোর একেক বিধি ও ঐতিহ্য মেনে অন্নভোগ দেওয়া হয়। কিন্তু মায়ের অন্নভোগের জন্য বিশুদ্ধ ও অক্ষত চাল ব্যবহারের নিদান রয়েছে শাস্ত্রে। অখণ্ড চালের দানা হিসেবে লালাবাবা রাইসের কোনও তুলনা চলে না। এই চাল দেবীর ভোগ রান্নায় স্বাদে গুণে আরও ভরিয়ে তুলবে বাঙালির এই শ্রেষ্ঠ উৎসবকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.