Advertisement
Advertisement
কামাখ্যায় কালীপুজো

নরকাসুর বধের স্মৃতি নিয়ে আজও দীপাবলিতে মাতেন কামাখ্যার বাসিন্দারা

কথিত আছে, শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুরকে বধ করার পর আলোয় সেজেছিল কামরূপ থেকে দ্বারকা।

People celebrate kali puja in maa kamakhya temple in Guwahati

ফাইল ফোটো

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:October 26, 2019 7:33 pm
  • Updated:October 26, 2019 7:35 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রত্যেক পীঠস্থানে লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। কখন সাধকদের চোখে তা ধরা পড়ে তো কখনও অধরাই থাকে তা। ভারতের মধ্যে যত প্রাচীন শক্তিপীঠ আছে সেগুলি অপার রহস্যের আধার বলেই বিশ্বাস করেন ভক্তরা। তবে যোনিপীঠ কামাখ্যাকে ঘিরে সাধুসন্ত থেকে সাধারণ মানুষ সবাই যেরকম কৌতূহলী। সবার মনে যে অন্তহীন জিজ্ঞাসা ও বিস্ময় আছে। তার সঙ্গে মনে হয় কোনও কিছুরই তুলনা হয় না। পৌরাণিক কাহিনি ও ইতিহাসের সঙ্গে অসংখ্য লোকগাথা ও মিথ মিশে মহীরুহের আকার ধারণ করেছে। আর কালীপুজো বা দীপাবলির সূচনা এখান থেকেই হয়েছিল বলে উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক মানুষের ধারণা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ব্রাত্য গঙ্গাজল, কারনবারি দিয়েই পুজো হয় দাঁইহাটের সিদ্ধেশ্বরী মাতার]

কামরূপ-কামাখ্যা সম্পর্কিত বই থেকে জানা যায়, পুরাণে বর্ণিত নরকাসুরের জন্ম হয়েছে বরাহরূপী বিষ্ণুর ঔরসে ধরিত্রী বা পৃথিবীর গর্ভে। উপযুক্ত বয়স হওয়ার পর অতীতে প্রাগজ্যোতিষপুর নামে খ্যাত কামরূপ রাজ্য তার হাতে তুলে দেয় তার বাবা। পরে এখানে অধিষ্ঠিত দেবী কামাখ্যাকে সাধনায় সন্তুষ্ট করে তাঁর কৃপায় মহাপরাক্রমশালী হয়ে ওঠে নরকাসুর। আর তারপর শুরু করে সীমাহীন অত্যাচার। স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতালের বাসিন্দারা তার দাপটে ত্রাহি ত্রাহি ডাক ছাড়ে। এমনকী অনেক দেবতাও তার ভয়ে নির্জন স্থান লুকিয়ে পড়ে। এই সুযোগে দেবতা, দানব, গন্ধর্ব ও মানুষ নির্বিশেষে ১৬ হাজার সুন্দরী মহিলাকে অপহরণ করে নরকাসুর। তারপর একটি পাহাড়ে বন্দিশালা তৈরি করে আটকে রাখে। শুধু তাই নয়, উদ্ধত নরক দেবরাজ ইন্দ্রকে পরাজিত করে দেবমাতা অদিতির কর্ণভূষণ লুট করে।

এই কথা শুনেই তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দ্বারকাধিপতি শ্রীকৃষ্ণ। নরকাসুরের নারকীয় কুকীর্তির কথা শুনে সৈন্যসামন্ত নিয়ে রওনা দেন প্রাগজ্যোতিষপুরের দিকে। দু’জনের মধ্যে চরম যুদ্ধ হওয়ার পর সুদর্শন চক্র দিয়ে নরকাসুরের মাথা কাটেন শ্রীকৃষ্ণ। বন্দি থাকা সুন্দরী মহিলাদের উদ্ধারও করেন। এই ঘটনা উপলক্ষে প্রাগজ্যোতিষপুর থেকে দ্বারকা পর্যন্ত এলাকার বাড়িগুলি সেজে উঠেছিল লক্ষ লক্ষ প্রদীপে। উজ্জল আলোকমালায় নরকাসুরের অত্যাচারের কালিমা ধুয়ে গিয়েছিল নিমিষে।

[আরও পড়ুন: কলকাতার প্রাচীন কালীবাড়ি গুলির অজানা ইতিহাস, আজ শেষ পর্ব]

আজ সেই স্মৃতি মাথায় রেখে আজও সেজে ওঠে একান্ন পীঠের অন্যতম পীঠস্থান কামরূপ-কামাখ্যা। মূলত আষাঢ় মাসের অম্ববাচী উৎসবের জন্য মানুষ এই মন্দিরের নাম শুনেছেন। তবে দেবী ভাগবত, দেবী পুরাণ, তন্ত্র চূড়ামণি, কালিকা পুরাণ ও যোগিনী তন্ত্রে উল্লেখিত ভারতের শক্তি সাধনার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র কামাখ্যায় মহাশক্তি মহাকালীর পুজোও হয় খুব ধুমধাম করে। নীলাচল পাহাড়ে থাকা মা কালীর মন্দিরে মূলত কালীপুজো হলেও প্রচুর মানুষ ভিড় করেন মা কামাখ্যার মন্দিরেও।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement