Advertisement
Advertisement
Rivers diverted

বিশ্বের ৬০ শতাংশ নদীর গতিপথ বদল! বাঁধেই লুকিয়ে জল-প্রলয়ের বীজ, প্রকাশ্যে ভয়াবহ রিপোর্ট

মানুষের জেরে পৃথিবীর ৪০ শতাংশ ভূমি চরম সমস্যার মুখে।

Bracing for disaster, Over 60 percent of world’s rivers diverted or dammed
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:October 12, 2025 3:42 pm
  • Updated:October 12, 2025 3:42 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাহিদা অফুরন্ত। সেই চাহিদার যোগান দিতে প্রকৃতিকে নিংড়ে নিচ্ছে মানুষ। বিদ্যুৎ আহরণের জন্য নদীর উপর বসছে বিশাল সব বাঁধ। বদলে যাচ্ছে নদীর গতিপথ। এর ফলও মিলছে হাতেনাতে। নিউটনের তৃতীয় সূত্র মেনে, গোটা বিশ্ব সাক্ষী হচ্ছে মহাপ্রলয়ের। পৃথিবীজুড়ে চলতে থাকা ধ্বংসলীলার মধ্যেই সামনে এল এমনই এক ভয়াবহ রিপোর্ট। যেখানে দাবি করা হচ্ছে, মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিশ্বের ৬০ শতাংশ নদীর গতিপথ বদলে দেওয়া হয়েছে অথবা বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যা জলের জীব বৈচিত্র নষ্ট করছে না, মানুষের জন্যও তা ভয়ংকর বিপদের কারণ হয়ে উঠেছে।

Advertisement

‘গ্লোবাল ল্যান্ড আউটলেট’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মানুষ এই পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ জমির চরিত্র সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। যার জেরে জীব বৈচিত্রে বিরাট প্রভাব পড়েছে। ‘ইউনাইটেড নেশান কনভেনশন টু কমব্যাট ডেসার্টিফিকেশন’ (UNCCD) ও কনজারভেশন অফ মাইগ্রেটরি স্পিসিস অফ ওয়াইল্ড অ্যানিমেল (CMS)-এর রিপোর্ট বলছে, নদী, জঙ্গল, মাটির স্বাভাবিক চরিত্র সম্পূর্ণরূপে বদলে গিয়েছে। এর ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের ৬০ শতাংশ নদীর উপর ভয়াবহ কাটাছেড়া করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, একটা সময় এশিয়ার মেকংকে মাছের জন্য আদর্শ জায়গা বলে বিবেচনা করা হত। নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে সেখানে মাছেরা এখন সংকটে। মাছেদের স্বাভাবিক যাত্রা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। বিলুপ্ত হয়েছে বহু প্রজাতির প্রাণী। লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন খাদ্য সংকটের মুখোমুখি। নদী ছাড়াও রেলপথ, রাস্তাঘাটও বাস্তুতন্ত্রের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে।

রিপোর্ট আরও বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। যা বাস্তুতন্ত্রের উপর চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি মাটিকে ধসপ্রবণ করে তুলবে, বন্যা ও খরার মতো সমস্যা বাড়াবে। ইতিমধ্যেই মানুষের জেরে পৃথিবীর ৪০ শতাংশ ভূমি চরম সমস্যার মুখে। যা বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যার জন্য হুমকিস্বরূপ। ইউএনসিসিডির এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ইয়াসমিন ফুয়াদ বলেন, পৃথিবী ও জলের স্বাভাবিক সমন্বয়ের কারণে পৃথিবীতে জীবন সম্ভব হয়েছে। আমরা যদি এই স্বাভাবিকতাকে প্রভাবিত করি তাহলে আমাদের উপরেই বিপদ নেমে আসবে। যত দ্রুত বাস্তুতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা উচিত আমাদের।

শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্টে বাঁধ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। দাবি করা হয়েছে, বাঁধগুলিতে এত পরিমাণ জল সঞ্চয় করা হয়, যে কোনও কারণে যদি এই বাঁধ ভাঙে তবে বিরাট এলাকা জলের নিচে চলে যেতে পারে। দেশের বহু বাঁধ ইতিমধ্যেই ভগ্ন অবস্থায় রয়েছে। এমনিতে মানুষের তৈরি কোনও পরিকাঠামোরই একটি নির্দিষ্ট আয়ুষ্কাল থাকে। এবং তা ভেঙে পড়তে বাধ্য। বিজ্ঞানীদের দাবি, যে সব অঞ্চলে বাঁধ রয়েছে সেই সব জায়গা ভূমিকম্পের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ভারতে, তেহরি, ভাকরা, হিরাকুদ, নাগার্জুন, বাগলিহার, নাথপা, কাদানা, চান্ডিল এবং সর্দার সরোবরের মতো বাঁধগুলির বর্তমানে জীর্ণ অবস্থা। এইসব বাঁধ অদূর ভবিষ্যতে মহাপ্রলয়ের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ