নিরুফা খাতুন: কলকাতার সবুজায়নে গাছ প্রতিস্থাপনে জোর দিতে চাইছে বনদপ্তর। আগামী বছর থেকে বনমহোৎসবে শহরাঞ্চলগুলিতে গাছ প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছে বনদপ্তর। নিজেদের নার্সারিতে চারা তৈরি করে সেখানে তাদের পরিচর্যা করে বড় করে তোলা হবে। চারাগাছগুলি মাথা তুলে দাঁড়ানোর পরই তাদের নার্সারি থেকে তুলে এনে শহরে প্রতিস্থাপন করা হবে। প্রতিস্থাপনের পর একবছর গাছের রক্ষণাবেক্ষণও করবে আরবান রিক্রিয়েশন ফরেস্ট্রি বিভাগ।
প্রতি বছর বনমহোৎসব উপলক্ষে শহরাঞ্চলে ৪০ লক্ষর মতো চারাগাছ বিলি করে থাকে দপ্তর। কলকাতায় প্রায় পাঁচ লক্ষর মতো চারাগাছ বিলি করা হয়। বৃক্ষরোপণের দায়িত্ব সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিয়ে থাকে। কিন্তু সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় না কেউ। এত চারা বিলি করেও শহরে সবুজ বাড়ছে না। অথচ এই চারা তৈরি করতে গিয়ে দপ্তরের মোটা টাকা খরচ হচ্ছে প্রতি বছর। তাই গাছ প্রতিস্থাপনের কথা ভাবছে। এতে শহরে দ্রুত সবুজায়নও হবে। এক বন আধিকারিক জানান, চারাগাছ বড় হতে সময় নেয়। তাদের পরিচর্যা করতে হয় অনেকদিন ধরে। যে কারণে অনেকে দায়িত্ব নেয় না। শহরাঞ্চলে যদি গাছ প্রতিস্থাপন করা যায় এতে সুফল মিলবে ভালো। তাঁর কথায়, নিজেদের নার্সারিতে চারা তৈরি করা হয়। সেগুলি নার্সারিতে বড় করা হবে। গাছগুলির উচ্চতা ১০-১২ ফুট হলে সেগুলি নার্সারি থেকে তুলে নিয়ে এসে প্রতিস্থাপন করার কথা ভাবা হচ্ছে। তার আগে শহরাঞ্চলে সমীক্ষা করবে বনদপ্তর।
কলকাতা, নিউটাউন-সহ পার্শ্ববর্তী শহরাঞ্চলের ঠিক কোন কোন রাস্তা ও ফুটপাথে চারাগাছ অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেগুলি চিহ্নিত করবে আরবান রিক্রিয়েশন ফরেস্ট্রি বিভাগ। চিহ্নিতকরণের পর ওই রাস্তা ও ফুটপাথগুলোয় গাছ প্রতিস্থাপন করা হবে। বনদপ্তরের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “শহরাঞ্চলে চারাগাছের যত্ন হয় না। সেখানে বনদপ্তরের নার্সারিতে গাছ তৈরি করে প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা সুবজায়ন বাড়াবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে গাছের প্রতিস্থাপন যেন সফল হয়।” তাঁর কথায়, “চারাগাছে নিয়মিত একটু জল দিলেই বেড়ে ওঠে। কিন্তু প্রতিস্থাপনের পর গাছের শুশ্রূষার দরকার পড়ে। বিশেষ করে প্রতিস্থাপন করা গাছে ছত্রাকের আশঙ্কা থাকে।” ইউআরএফের এক আধিকারিক জানান, প্রতিস্থাপনের পর গাছের নজরদারিও করা হবে। ওষুধ, জল, সবই দেওয়া হবে। একবছর ওই গাছগুলি রক্ষণাবেক্ষণও করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.