অরূপ বসাক, মালবাজার: উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চল যেন জীববৈচিত্র্যের এক খনি। কালিম্পং জেলার প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদ লুংসেল তেমনই এক জায়গা। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ‘ন্যাফ’ এই গ্রামে আয়োজন করেছিল বিশেষ মথ পর্যবেক্ষণ শিবির। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪,৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই এলাকায় শিবিরে ছিলেন পরিবেশবিদরাও। শিবির শেষে তাঁদের অভিমত, লুংসেল শুধু মথ নয়, নানা প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর আরামপ্রিয় আবাস। উত্তরবঙ্গের সুন্দর পরিবেশে এ এক বিশেষ বৈচিত্র্যও বটে!
লুংসেলের এই শিবিরে অংশ নিয়ে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ রুদ্রপ্রসাদ দাস বলেন, “ন্যাফকে ধন্যবাদ, এমন জীববৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ একটি জায়গায় শিবির করার জন্য। এখানে প্রচুর মথ, প্রজাপতি ও পাখি দেখা গিয়েছে।” অপর এক বিশেষজ্ঞ, শিলিগুড়ির একটি সরকারি কলেজের অধ্যাপক নীনা সিং জানান, “এখানে বিশ্বের বৃহত্তম মথ অ্যাটলাস-সহ টাইগার, আউল, ওলিয়েন্ডার হকের মতো দৃষ্টিনন্দন মথও দেখা গেছে, যা জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।”
ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, “এই শিবিরে আমরা প্রায় ৫৫০ ধরনের মথ, ৫০ ধরনের প্রজাপতি ও ৬০ ধরনের পাখির সন্ধান পেয়েছি। রাতে একটি সাদা পর্দায় লাইটের আলো ফেলতেই ঝাঁকে ঝাঁকে মথ সেই পর্দায় এসে বসে। এত প্রজাতির পতঙ্গের উপস্থিতি প্রমাণ করে, এই এলাকায় উদ্ভিদের বৈচিত্র্যও কতটা বেশি। যা জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে অত্যন্ত ইতিবাচক।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও একটি অঞ্চলে যত বেশি প্রজাতির মথ পাওয়া যায়, বোঝা যায় সেই জায়গার পরিবেশ কতটা সুস্থ ও বৈচিত্র্যময়। লুংসেল তার প্রকৃতি ও পরিবেশে তাই এক অনন্য উদাহরণ হিসেবেই উঠে এল এবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.