Advertisement
Advertisement

Breaking News

ISRO

২০৪৭ পর্যন্ত মিশন সাজানো! কলকাতায় মহাকাশ গবেষণার ‘ওডিসি’ তুলে ধরলেন ইসরো চেয়ারম্যান

গগনযান, চন্দ্রযান-৫, নিজস্ব স্পেস স্টেশন - ইসরোর পরিকল্পনার তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর।

ISRO chairman V Narayanan shares long plans till 2047 in a programme at Science City, Kolkata
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 22, 2025 9:46 pm
  • Updated:May 23, 2025 2:59 pm  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ২০৪৭ সাল, স্বাধীনতার ১০০ বছর। আর এই সময় পর্যন্ত পরপর মিশন সাজানো ইসরোর। যাকে ‘স্পেস ক‌্যালেন্ডার’ বললে কিছুই বলা হয় না। ইসরো যার নামকরণ করেছে ‘ইন্ডিয়ান স্পেস ওডিসি’ বা ভারতের মহাকাশ গবেষণার ‘মহাকাব‌্য’। ২০২৫-এর গ্রীষ্মে কলকাতায় সায়েন্স সিটির একটি অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে সেই পরিসংখ‌্যান দিয়ে গেলেন ইসরোর চেয়ারম‌্যান ড. ভি নারায়ণন।

Advertisement
সায়েন্স সিটির অনুষ্ঠানে ইসরো চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন। ছবি: কৌশিক রায়।

চলতি বছরের শেষে হবে প্রথম গগনযান অভিযান। আগামী তিন বছরে এই অভিযানকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দুটি অভিযান হবে কোনও ক্রু মেম্বার অর্থাৎ অভিযাত্রী ছাড়াই। যানটি নিরাপদে মহাকাশে গিয়ে ফিরে আসতে পারছে কিনা, সেটি পরখ করে দেখা হবে। থাকবে শুধু ‘ব্যোমমিত্রা’ – একটি রোবট। শেষের অর্থাৎ মূল অভিযানে থাকবে চারজন অভিযাত্রী। এঁদের প্রশিক্ষণের একটা বড় অংশ হয়েছে রাশিয়ার সহযোগিতায়। সেই অভিযান হওয়ার কথা ২০২৭-এর প্রথম কয়েকমাসের মধ্যে। ড. নারায়ণনের কথায়, এই অভিযানে ‘সেফ ল‌্যান্ডিং’ অত‌্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে চন্দ্রযান ৪, চন্দ্রযান ৫ অভিযানেরও।

২০২৮-এ সামনে আসতে পারে দেশের নিজস্ব স্পেস স্টেশনের মডিউল। তবে সেটি চূড়ান্ত রূপ পেতে আরও খানিকটা দেরি। তার আগে রয়েছে লম্বা চমক! এবছরের আগস্টে নাসার সঙ্গে মিলে একটি লঞ্চপ‌্যাড তৈরি করে ফেলবে ইসরো। অর্থাৎ স্পেস স্টেশন তৈরির প্রথম ধাপ।

বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এত সব পরিকল্পনা নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় এই পর্বেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এক কথায় ‘ফ‌্যান্টাস্টিক ম‌্যান’ বলে সম্বোধন করলেন ইসরোর চেয়ারম‌্যান। তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রী অনেক স্বপ্ন দেখে রেখেছেন। তিনি একবার মজা করে বলেছিলেন, চাঁদে কবে মানুষকে নিয়ে যেতে পারবে ভারত? প্রধানমন্ত্রীর একটাই লক্ষ‌্য, মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় সংক্রান্ত খবর হোক, কৃষিক্ষেত্র হোক, টেলি-কমিউনিকেশন হোক – সব দিকের খেয়াল রাখতে হবে।”

এরপরই দেশের ‘স্পেস ওডিসি’-র বাকি তালিকাটা সামনে রাখলেন ড. নারায়ণন। অভিযান হবে শুক্র, মঙ্গল গ্রহেও। প্রথমবারের চেষ্টায় সব থেকে কম খরচে মঙ্গলে উপগ্রহ পাঠিয়েছে ভারত। সেটি ছিল প্রদক্ষিণ করার অভিযান। নতুন উপগ্রহটিকে মঙ্গলে নামানোর পরিকল্পনা চলছে।

রাজা রামমোহন রায়ের জন্মদিনে তাঁর মূর্তিতে মালা দিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন ড. ভি নারায়ণন। ছবি: কৌশিক রায়।

২০৩৫-এ পরিকল্পনা রয়েছে মহাকাশে দেশের নিজস্ব স্পেস স্টেশন তৈরির। ২০৪০-এর মধ্যে লক্ষ‌্য রয়েছে চাঁদের মাটিতে ভারতবাসীকে নিয়ে যাওয়ার। তার জন‌্য চন্দ্রযান পরপর পরীক্ষা চালাবে। চন্দ্রযান ৪ আপাতত চাঁদ থেকে মাটি নিয়ে ফিরবে। তা পরীক্ষার পর চন্দ্রযান ৫ শক্তিশালী রোভার নিয়ে নামবে চাঁদের মাটিতে।

এর আগে ২০২৩ সালে চন্দ্রযান ৩ যে রোভার পাঠিয়েছিল, তা মাত্র ১৪ দিন ঘুরে বেড়িয়েছে চাঁদের দক্ষিণ প্রান্তে। শেষে প্রবল শীতে চলে গিয়েছে চিরঘুমে। চন্দ্রযান ৫-এর রোভারের আয়ু ১০০ দিন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বহরেও বড় হবে সেই যান। স্বাভাবিকভাবে ওজন প্রায় দেড় হাজার কেজি বেড়ে যাবে। জাপানের সঙ্গে যৌথভাবে হবে এই অভিযান। রকেটের চরিত্রেও বদল আসছে। যে ‘ফ‌্যাটবয়’ চন্দ্রযান ৩-কে নিয়ে বিরাট লাফ দিয়েছিল, তাকে প্রতিস্থাপিত করা হবে নতুন প্রজন্মের এলভিএম ৩, আসবে এসএসএলভি। সুতরাং সবমিলিয়ে ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এই দীর্ঘ সূচিকে ফিল্মি ভাষায় বলাই যায়, ‘কুর্সিকি পেটি বাঁধ লিজিয়ে…’।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement