সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৭৭ সালের আগস্টে যাত্রা শুরু করেছিল ভয়েজার ২। গত পাঁচ দশক ধরে মানুষের এই স্বপ্নযান ভেসে চলেছে ভিনগ্রহীদের কাছে মানুষের খবর পৌঁছে দেবে বলে। বেশ কয়েক বছর হল সে রয়েছে ইন্টারস্টেলার স্পেসে। অর্থাৎ সূর্যের চৌহদ্দির বাইরে। ৩৬ বছর আগে নেপচুনের এক ছবি তুলেছিল ভয়েজার-২। গত বছর যা প্রকাশ্যে এনেছে নাসা। সেই ছবি ঘিরে বিস্ময় আজও অব্যাহত।
কিন্তু কেন এই ছবি স্পেশাল? সেই প্রথম নেপচুনের এমন ‘ক্লোজ আপ’ ছবি তোলা সম্ভব হয়েছিল। ১৯৮৯ সালের ২৫ আগস্ট ভয়েজার ২ ছিল পৃথিবী থেকে ৪.৭ বিলিয়ন অর্থাৎ ৪৭০ কোটি কিলোমিটার দূরে। ফলে নেপচুন ছিল একেবারেই কাছে। ফলে ছবিতে তাকে অতিকায় দেখিয়েছে। পাশেই দৃশ্যমান ছিল নেপচুনের বৃহত্তম উপগ্রহ ট্রাইটন। এই ছবি তোলার পরই কমে আসা পাওয়ার সাপ্লাইকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে ভয়েজার ২-এর অপটিক্যাল ক্যামেরা বরাবরের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার তোলা শেষ ছবিটি বিজ্ঞানীদের চমকিত করে রেখেছে।
উল্লেখ্য, ভয়েজার ২-তে রয়েছে এক খণ্ড ইউরেনিয়াম যার ভিতরে অবস্থিত তেজস্ক্রিয় ঘড়ি। যে ঘড়ি দেখলে যানটির উৎক্ষেপণের সময়টা জানা যাবে। রয়েছে সোনার রেকর্ড। ১২ ইঞ্চির ওই রেকর্ডগুলিতে রয়েছে সৌরজগতের মানচিত্র। রয়েছে সারা বিশ্বের সুরের নমুনা-সহ (বিঠোভেন থেকে মোৎজার্ট) মানুষের পাঁচহাজার বছরের সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞান। রয়েছে তিমির ডাক, পাখির ডাক এবং আরও কত জন্তুজানোয়ারের ডাক! এদের বলা যেতে পারে ‘টাইম ক্যাপসুল’। অর্থাৎ এককথায় মানুষের ইতিহাস, চেতনা, দর্শনের এক সমষ্টি। যা অন্য কোনও জগতের জীবদের সংস্পর্শে এলে তারা জানতে পারবে আমাদের কথা।
‘চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়।’ ভয়েজারেরও থাকবে না। এই বছরের পর আর বিজ্ঞানের তথ্য সে সংগ্রহ করতে পারবে না। ভয়েজার ১ ও ২, দুই যানেরই পাওয়ার ব্যাঙ্ক থেমে যাবে। তবে তাদের সংগৃহীত তথ্য এরপরও জমা হতে থাকবে পৃথিবীর রিসিভারে! মোটামুটি ২০৩৬ সালের মধ্যেই আর ডিপ স্পেস নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যাবে তারা। তবে এরপরও ভেসে চলবে অন্তরীক্ষে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.