Advertisement
Advertisement
Cheetah

দুু’দিন বয়সে মাতৃহারা, ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ সুইটিকে চোখে হারায় বেঙ্গল সাফারি

সুইটি এখন বেঙ্গল সাফারির নয়নমণি।

Lost  mother at the age of two days, Bengal Safari save life of Cheetah
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:August 21, 2025 1:53 pm
  • Updated:August 21, 2025 1:53 pm  

নিরুফা খাতুন: রাখে হরি তো মারে কে? বেঙ্গল সাফারির সুইটি যেন প্রবাদটির জ্বলন্ত উদাহরণ। চা বাগানে মৃত মায়ের পাশে পড়ে তিন সদ্যোজাত শাবক। একটি মৃত। অন্য দু’টি মৃতবৎ। তাদেরই একটি হল সুইটি। তাকে উদ্ধার করে ৪৪ কিলোমিটার পথ উজিয়ে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারির পশু হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। দু’দিনের সেই অনাথ চিতাবাঘের ছানাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে নজির গড়েছে বেঙ্গল সাফারি। যমের সঙ্গে পশু চিকিৎসকদের টানাহ্যাঁচড়ার সে আখ্যান প্রকাশিত হয়েছে ইন্ট্যারন্যাশনাল জার্নাল অফ ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রিতে।

Advertisement

২০২৩ সালের ১৬ মে কার্শিয়াংয়ে ঘোষপুকুর রেঞ্জের চা বাগানে সুইটির মা তিন শাবকের জন্ম দেয়। দু’দিন বাদে চিতাবাঘিনির মৃত্যু হয়, অনুমান সর্পাঘাতে। সাপের কামড়ে তার শরীরে বিষক্রিয়া হয়েছিল। সদ্যেজাতরা মায়ের দুধ পান করে, তাতে একটির মৃত্যু হয়। বাকি দু’টি মায়ের মৃতদেহর পাশে চা বাগানের স্যাঁতসেঁতে মাটিতে পড়ে থাকে। তাদের জলশূন্য শরীর তখন ঠান্ডা।

বনকর্মীরা উচ্চপদস্থ কর্তাদের ফোন করে খবর দেন। আশপাশে পশু চিকিৎসালয় না থাকায় শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন কর্তারা। গাড়িতে প্রায় দেড় ঘণ্টার রাস্তা। ফোনে পশুচিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দুই শাবককে গাড়িতে তুলে বনকর্মীরা রওনা দেন। মাঝপথে এক শাবকের জীবনপ্রদীপ নিভে যায়। জীবস্মৃত অন্যটিকে বাঁচাতে মরণপণ লড়াইয়ে নামেন বেঙ্গল সাফারির চিকিৎসকরা। তার নাম রাখা হয় সুইটি।

অনাথ লেপার্ড শাবক দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। ছুটি পাওয়ার পরে তার ঠিকানা হয়েছে বেঙ্গল সাফারির খাঁচা, সেখানে সে পাঁচ সঙ্গীও পেয়েছে। দু’বছরের সুইটি এখন শিকার করতে পারে। বেঙ্গল সাফারির অধিকর্তা ই বিজয় কুমারের কথায়, “অনেক বাঘ ও চিতাবাঘের বাচ্চা মা ছাড়া সাফারিতে বড় হয়েছে। বনকর্মীরা তাদের লালনপালন করেছেন। কিন্তু সুইটির লড়াই ছিল ভীষণ কঠিন। ওর প্রাণ বাঁচানো আমাদের সকলের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে।” বেঙ্গল সাফারির পশুচিকিৎসক নিক দোলে, কিপার-সহ সকল কর্মী ও আধিকারিকের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মৃত্যুকে জয় করা গিয়েছে। অধিকর্তার মতে, এই সাফল্য বন্যপ্রাণ গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। সুইটি এখন বেঙ্গল সাফারির নয়নমণি। কেউ তাকে চোখে হারাতে চায় না।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement