সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ৪৮ বছর আগে পৃথিবী ছেড়েছিল সে। ভয়েজার-১। মানুষ প্রেরিত সবচেয়ে দূরগামী যান। নাসার এই মহাকাশযান ১২ বছর আগেই চলে গিয়েছিল সূর্যের সংসারের বাইরে। তার দোসর ভয়েজার-২ ২০১৮ সালে পেরিয়ে যায় সৌরজগতের সীমা। কিন্তু তারপরও ওই দুই মহাকাশযানের সঙ্গে যোগাযোগের সুতো ছিঁড়ে যায়নি। এবার জানা গেল ভয়েজার-১ পৌঁছেছে এমন এক জগতে যেখানে তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে! অথচ সেখানে নেই কোনও আগুনের উপস্থিতি।
সৌরজগতের একেবারে প্রান্তে রয়েছে হেলিওপজ। এ এমন এক প্রান্ত যেখানে সৌর বাতাসও শক্তি হারিয়ে ফেলে। এটা পেরিয়ে গেলেই শুরু ইন্টারস্টেলার জগৎ। সেই অঞ্চল পেরিয়ে আপাতত নিজের মতো করে এগিয়ে চলেছে ভয়েজার-১। এখন সে রয়েছে ‘ফায়ারওয়াল’-এ। কিন্তু তার নামেই ‘ফায়ার’, কিন্তু আগুনের ছিটেফোঁটাও সেখানে নেই। কিন্তু তাহলে এত বিপুল তাপমাত্রা তৈরি হল কীভাবে? জানা যাচ্ছে, এখানে আসলে রয়েছে প্রচণ্ড এনার্জিসম্পন্ন কণা! যা ছড়িয়ে রয়েছে বিরাট অঞ্চল জুড়ে।
কিন্তু কেন ওই বিপুল তাপমাত্রায় ঝলসে যাচ্ছে না ভয়েজার-১? এর পিছনে কারণ একটাই। তাপমাত্রা যতই বেশি হোক, কণাগুলির ঘনত্ব নেহাতই স্বল্প। অর্থাৎ তাপ বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো ক্ষমতা তাদের নেই। ফলে ওই তাপমাত্রায় গায়ে আঁচড়ও লাগেনি ভয়েজারের।
প্রসঙ্গত, ভয়েজার-১ ও ভয়েজার-২ দুটি যানেই রয়েছে সোনার রেকর্ড। ১২ ইঞ্চির ওই রেকর্ডে রয়েছে সৌরজগতের মানচিত্র। রয়েছে এক খণ্ড ইউরেনিয়াম যার মধ্যে রয়েছে তেজস্ক্রিয় ঘড়ি। যে ঘড়ি দেখলে এটির উৎক্ষেপণের সময়টা জানা যাবে। তবে এবার সময় হয়ে এসেছে যখন চিরতরে কাজ করা বন্ধ করে ভয়েজারের পাওয়ার ব্যাংক। তবে তখনও এর যাত্রা অব্যাহত থাকবে। আকাশগঙ্গার পেট চিরে এগিয়ে চলবে মানুষের তৈরি স্বপ্নযান। ২০৩৬ সালে সে চলে যাবে মানুষের নাগালের একেবারে বাইরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.