রাস্তার দু'পাশে গাছ লাগিয়েছেন মাস্টারমশাই। নিজস্ব চিত্র
সুমন করাতি, হুগলি: বাজ পড়ার পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে। পথেঘাটে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। বাজ পড়া থেকে রক্ষা করতে পারে তালগাছ। গ্রামের মানুষকে বজ্রাঘাত থেকে রক্ষা করতে তালগাছ বসিয়ে চলেছেন পাণ্ডুয়ার ভূগোলের শিক্ষক ভাস্কর মণ্ডল। রাজ্যের বহু জায়গাতেই তিনি তালগাছ লাগিয়েছেন। প্রায় ৭৫ হাজার তালগাছ তিনি লাগিয়েছেন বলে জানা গিয়েছেন। এখনও সেই কাজ তিনি করেছেন। এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেন পড়ুয়ারা। বিভিন্ন জায়গা থেকে তালের বীজ সংগ্রহ করে সেইসব মাটিতে পোঁতা হয় বলে জানা গিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় তাঁর আদি বাড়ি। কর্মসূত্রে ৩২ বছর ধরে তিনি হুগলির পাণ্ডুয়াতে আছেন। গাছের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব সেই ছোট থেকে। পরবর্তীতে পড়াশোনার মধ্যে দিয়ে তিনি জানতে পারেন, খোলা এলাকায় বজ্রাঘাত আটকাতে পারে তালগাছ। সেই পড়াশোনার পরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন তালগাছ লাগানো হবে। সেই কাজই পরবর্তীতে নেশা হয়ে গিয়েছে তাঁর। প্রায় ২২ বছর ধরে পাণ্ডুয়ার বিভিন্ন জায়গায় তিনি গাছের চারা পুঁতেছেন। সেইসব গাছের চারা পরিচর্যাও করেছেন নিজের হাতেই। কেবল তালই নয়, বট, অশ্বত্থ, খেজুর, বেল, তেঁতুল, আম বিভিন্ন গাছ বসিয়ে থাকেন। প্রতি বছর জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিনি এই কর্মকাণ্ড মূলত করে থাকেন তিনি।
পাণ্ডুয়া ব্লকের অধিকাংশ এলাকা কৃষিপ্রধান। পাণ্ডুয়ার আত্তি মোড় থেকে রানাগড় যাবার পথে সবুজে ঘেরা প্রচুর গাছ লক্ষ্য করা যায়। তার মধ্যে অধিকাংশই রয়েছে ছোট-বড় তালগাছ। স্থানীয়দের দাবি সেই সমস্ত তালগাছ বসিয়েছেন ভাস্করবাবু। তীব্র দাবদাহে মানুষ যখন একটু বিশ্রামের আশ্রয় খোঁজে তখনই ছায়া শীতল পরিবেশে তালগাছের ছায়ায় আশ্রয় নেন অনেক পথচলতি মানুষ। ওই রাস্তার দু’পাশে রয়েছে প্রচুর চাষযোগ্য জমি। কৃষকরাও গাছের ছায়ায় এসে আশ্রয় নেন।
পাণ্ডুয়ার রানাগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভাস্কর মণ্ডল। প্রায় ২০০ পড়ুয়াদের নিয়ে ‘নেচারস লাভার ক্লাব’ নামে একটি সংগঠন করেছেন তিনি। ওই স্কুলের ভিতরের চারপাশ গাছগাছালিতে ভরা। গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে তালের আঁটি সংগ্রহ করার জন্য পিকআপ সেন্টার তৈরি করেছেন প্রধান শিক্ষক। কেউ জানালেই তাঁর বাড়িতে হাজির হয়ে যান শিক্ষক-সহ পড়ুয়ারা। ভাস্কর মণ্ডল বলেন, “এবছর আমাদের ১৫ হাজার গাছ লাগানোর টার্গেট রয়েছে। আমরা বাঁকুড়ার জয়পুর জঙ্গলের গাছ লাগানোর জন্য রেঞ্জার্সদের কাছে আবেদন জানিয়েছি। বিভিন্ন পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.