সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্বাসপ্রশ্বাস মানেই জীবন। আর জীবনদায়ী গ্যাস অক্সিজেন। সাধারণ বিজ্ঞান এটাই বলে। একমাত্র উদ্ভিদই কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে অক্সিজেন বাতাসে ছাড়ে। সেই অক্সিজেন নিয়ে আমরা প্রাণ বাঁচাই। জীবমাত্রই এই শ্বাসপ্রণালী প্রযোজ্য। কিন্তু না, এই সাধারণ জ্ঞানে কিছুটা ব্যতিক্রম আছে বইকী! এক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের মাধ্যমে শ্বাসকার্য চালায় না। বরং বিদ্যুৎ তৈরি করতে করতে শ্বাস নেয় তারা। সম্প্রতি এমন এক বিশেষ প্রজাতির ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন টেক্সাসের রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের।
‘সেল’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ‘এক্সট্রাসেলুলার রেসপিরেশন’ বা বহিঃকোষীয় শ্বসন পদ্ধতিতে ওই ব্যাকটেরিয়ার প্রাণ বাঁচে। যার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না। শ্বাসকার্যের সময় তাদের শরীর থেকে ইলেকট্রন বেরয় যা বাতাসের সংস্পর্শে এসে বিদ্যুতে পরিণত হয়। সেই কারণে আপাতভাবে মনে হয় যে ব্যাকটেরিয়াটি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করছে। দীর্ঘ গবেষণার পর ব্যাকটেরিয়ার শ্বাসক্রিয়ার নেপথ্যে এই পদ্ধতির কথা বুঝতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত বিকি বাপি কুণ্ডুর ব্যাখ্যা, ”নতুন সমীক্ষার পর মনে হচ্ছে, এই পদ্ধতি অতি সহজ। এধরনের প্রক্রিয়াকে বলা হয় ন্যাপথোকুইনোন। এখানে অণুগুলি বাহক হিসেবে কাজ করে। তার মাধ্যমে ইলেকট্রন বাতাসে সংস্পর্শে এসে ভেঙে যায়। সেটাই ব্যাকটেরিয়ার খাবার এবং শক্তির মূল উৎস।”
জীবজগতের ক্ষেত্রে এ ধরনের শ্বাসক্রিয়া অতি বিরল বলে বর্ণনা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে আগামী দিনে শক্তিক্ষেত্র এবং জৈবপ্রযুক্তি বা বায়োটেকনোলজি ক্ষেত্রে এই বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা অতি তাৎপর্যপূর্ণ। এদের বাঁচিয়ে রাখার উপযুক্ত পরিবেশ জল-বাতাস নয়। দরকার সুপরিবাহী কোনও তল। কারণ, এর বাঁচার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন নেই। দরকার বিদ্যুৎ। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই ব্যাকটেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত একটা সময়ে শক্তির অভাব মিটিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়ে উঠবে। আর তা হলে আধুনিক পৃথিবীতে বড়সড় বিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.