সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনন্ত সময়ের কোলে বিলীন হয়ে গেলেন ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’-এর লেখক স্টিফেন হকিং। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, ৭৬ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন এই বিখ্যাত বিজ্ঞানী। ইউকে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিজ্ঞানীর পরিবারের মুখপাত্র এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
চলতি বছরই ৭৬তম জন্মদিন পালন করেছিলেন। এতদিন তাঁর বেঁচে থাকাই যেন অনন্ত এক বিস্ময়। বিরল ‘মোটর নিউরন’ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই ধরনের রোগে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি সাধারণত রোগ ধরা পড়ার চার বছরের বেশি বাঁচেন না। তাঁর রোগ ধরা পড়েছিল ১৯৬৩ সালে। অর্থাৎ তারপরও ৫৫ বছর বেঁচে থাকা মিরাকলের চেয়ে কম কিছু নয়। তবে আরও আশ্চর্য তাঁর গবেষণা। এই রোগে আক্রান্ত হয়েও যেভাবে তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টি সন্ধানে রত হয়েছিলেন তা গোটা পৃথিবীকেই চমকে দিয়েছিল।পৃথিবীর অস্তিত্ব ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমাগত বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন তিনি। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর বই ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম।’ বলা যায় নক্ষত্রদের দুনিয়াতেই ছিল তাঁর বাস। সৃষ্টির আদি থেকে প্রথম কয়েক মিনিটের রহস্য, বিগ ব্যাং থেকে ব্ল্যাক হোল নিয়ে যুগান্তকারী তত্ত্বে বিজ্ঞান দুনিয়াকে আলোড়িত করেছেন। গোটা পৃথিবীর কাছে তিনি ছিলেন বিস্ময়। শুধু বিজ্ঞানী হিসেবে নয়, প্রতিবন্ধকতাকে পেরিয়ে কী করে নক্ষত্র হয়ে ওঠা যায়, তাঁর থেকে ভাল উদাহরণ বোধহয় আর কেউ নন। সেই নক্ষত্র পতনে শোকগ্রস্ত পৃথিবী। সময়ের ব্ল্যাক হোলে চিরতরে হারিয়ে গেলেন পৃথিবীর এই উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক।
Professor has died at the age of 76, says famiউly spokesperson: UK Media
— ANI (@ANI)
তাঁর তিন সন্তান- লুসি, রবার্ট ও টিম জানিয়েছেন, তাঁদের বাবা পৃথিবী ছেড়ে চলেই গিয়েছেন। বিশ্বের কাছে যেমন তা অপূরণীয় ক্ষতি, তেমন আমাদের পরিবারের কাছেও। তবে ব্যক্তিগত পরিবার ছাড়িয়েও স্টিফেনের সংসার ছিল প্রসারিত। সুদূর নক্ষত্রমণ্ডলের ছোট-বড় তারা থেকে বিশ্বের সমস্ত বিজ্ঞানীরা যেন তাঁর সে সংসারের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। সময় সময়ে নানা তত্ত্ব নিয়ে তিনি হাজির হয়েছেন। চলেছে তর্ক-বিতর্ক। কখনও কখনও তাঁর থিওরির উপরও বাজিও ধরা হয়েছে। হেরেওছেন হকিং। তবু মহাবিশ্বের সৃষ্টি, অস্তিত্ব, সময় ও সময়ের প্রবাহ নিয়ে বিজ্ঞানে তাঁর যা অবদান, তা হয়তো আত্মানুসন্ধানেরই অন্য নাম।তাই এই বিজ্ঞানীর লেখাতে শেষমেশ উঠে আসে ঈশ্বরের কথাও। তা নিয়ে কম তর্ক হয়নি। হকিংয়ের চলে যাওয়া সেই তর্কের উপর, সেই আলোচনার উপরই পর্দা পড়ে যাওয়া। শুধু নতুন তত্ত্ব নয়। এই চিন্তাশীল মননের শূন্যতা সত্যিই অপূরণীয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.