বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: এবার বর্ষায় ভোগান্তি চরমে উঠেছিল উত্তরে। হড়পা বান, ভূমিধসে বিধ্বস্ত হয়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। মৃত্যুমিছিল চলেছে। বর্ষা বিদায় নিতে স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক আশঙ্কা ও সতর্কতায় ফের প্রমাদ গুনছেন উত্তরের বাসিন্দারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ওসানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্থাৎ মহাসাগর এবং বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পূর্বাভাস প্রদানকারী সংস্থা জানিয়েছে ‘লা নিনা’-র প্রভাবে এবার সিকিম এবং দার্জিলিং পাহাড়ে শীতকালে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ঠান্ডা ও তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর সিকিমের লাচেন, লাচুংয়ের মতো উঁচু পর্যটনকেন্দ্রগুলোর রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রিতে নেমে আসতে পারে।
আবহাওয়া গবেষকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘লা নিনা’ হল প্রশান্ত মহাসাগরের জলবায়ু প্যাটার্ন। এর অর্থ ‘ছোট মেয়ে’। এটি ‘এল নিনো’-র বিপরীত। যেখানে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব ও মধ্য অংশে সমুদ্রপৃষ্ঠের জল স্বাভাবিকের চেয়ে শীতল থাকে এবং বায়ু প্রবাহ শক্তিশালী হয়। এর প্রভাবে বিশ্বজুড়ে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে। যেমন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং ব্রাজিলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ঘটে, শীতের প্রকোপ বাড়ে। মার্কিন ‘ন্যাশনাল ওসানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের গবেষণায় জানা গিয়েছে, ২০২৫-২০২৬ সালের শীতে দার্জিলিং ও সিকিমে স্বাভাবিকের চেয়ে ঠান্ডা এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকতে পারে।
ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের মাসগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রি থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময়কাল বেড়ে ১৫ থেকে ২০ দিন হতে পারে! লা নিনা-র প্রভাবে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার তীব্রতা বাড়বে, ভারী বৃষ্টি হবে এবং সান্দাকফু, ফালুট, টাইগার হিল, লাচেন, লাচুং এবং জিরো পয়েন্টের মতো উঁচু এলাকায় তুষারপাতের সম্ভাবনা বাড়বে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হতে পারে। উত্তর সিকিমের লাচেন, লাচুংয়ের মতো উঁচু এলাকায় রাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অথবা তার নিচে নেমে যেতে পারে। আরও উঁচু এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে। আবহাওয়া গবেষক মধুসূদন কর্মকার বলেন, “আন্তর্জাতিক মহাসাগর এবং বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত গবেষণা সংস্থা যে সম্ভাবনার কথা তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে সেটা হলে উত্তরে বর্ষার তুলনায় অনেক বেশি দুর্যোগ বাড়বে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.