ভারত: ২০২/৫ (অভিষেক ৬১, তিলক ৪৯*, থিকসানা ৩৬/১)
শ্রীলঙ্কা: ২০২/৫ (নিশঙ্কা ১০৭, কুশল ৫৮, হার্দিক ৭/১)
সুপার ওভার
শ্রীলঙ্কা: ২/২
ভারত ৩/০
ভারত সুপার ওভারে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খাতায়-কলমে এশিয়া কাপের নিয়মরক্ষার ম্যাচ। সেখানে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বহু কষ্টে জিতল ভারত। বলা যেতে পারে, শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার সাহায্যে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন সূর্যকুমাররা। অঘটন হয়তো ঘটল না, কিন্তু ফাইনালের আগে তা যেন টিম ইন্ডিয়ার জন্য ‘শিক্ষা’। একা পাথুম নিশঙ্কাই ভারতের হাত থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কুলদীপ যাদবরা সঠিক সময়ে জ্বলে না উঠলে সেটা হয়েও যেত। তাও ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সূর্যরা নাটকীয় ম্যাচ জিতলেন সুপার ওভারে। তবে রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফাইনালের আগে হর্ষিত রানাদের পারফরম্যান্স একগুচ্ছ প্রশ্ন রেখে গেল কোচ গৌতম গম্ভীরের জন্য।
সুপার ফোরে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল নিয়মরক্ষার। ভারত আগেই ফাইনালে চলে গিয়েছে। শ্রীলঙ্কার আবার সেই সম্ভাবনা নেই। কিন্তু যেটা আছে, সেটা হল অভিষেক শর্মার দাপট। ৪ রান করে শুভমান গিল আউট হয়ে যান। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব (১২) এদিনও রান পেলেন না। যেটা নিঃসন্দেহে চিন্তায় রাখবে টিম ইন্ডিয়ার থিঙ্ক ট্যাঙ্ককে। কিন্তু অভিষেক শর্মা লক্ষ্যে অবিচল। ৮টি চার মারলেন, ছক্কার সংখ্যা ২। স্ট্রাইক রেট ১৯৬.৭৭। শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৬১ রান করে আউট হন।
অভিষেক আউট হয়ে যাওয়ার পরও রানের কমতি হয়নি। সেই ব্যাটনটা এগিয়ে নিয়ে যান সঞ্জু স্যামসন ও তিলক বর্মা। আশ্চর্যজনকভাবে এই দুজনের ব্যাটিং পজিশন নিয়েই যত পরীক্ষানিরীক্ষা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ম্যাচে তিলক খেলেন ৭ বল। সঞ্জু ব্যাট করার সুযোগই পাননি। আর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সঞ্জু ৩৯ রান করেন। তিলক অপরাজিত থাকেন ৪৯ রানে। শেষে অক্ষর প্যাটেলও ২১ রান করেন। অসাধারণ ক্যাচ ধরে হার্দিককে ফেরান দুষ্মন্ত চামিরা। এই ম্যাচে অনেকগুলো ভালো ক্যাচ ধরে ভারতকে ক্যাচ ধরাও ‘শেখালেন’ লঙ্কান ক্রিকেটাররা। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে ভারত ২০২ রান করে।
এবারের এশিয়া কাপে এটাই সর্বোচ্চ রান। অপ্রতিরোধ্য ভারতীয় দলের সামনে শ্রীলঙ্কা হিমশিম খাবে, এরকমই আশা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা অন্য। হারজিতের বাইরে এই ম্যাচ দেখিয়ে দিল ভারতের দুর্বলতা। জশপ্রীত বুমরাহকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। ছিলেন না শিবম দুবেও। সুযোগ পেয়েছিলেন হর্ষিত রানা ও অর্শদীপ সিং। এর মধ্যে প্রথমজনকে নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। গম্ভীরের ‘প্রিয়পাত্র’কে দেখেশুনে বাউন্ডারির ওপারে ফেললেন পাথুম নিশঙ্কা ও কুশল পেরেরা। লাইন-লেংথের কোনও ঠিকানা নেই। হর্ষিত কোনটা বাউন্সার, কোনটা শর্টপিচ দেবেন, তা যেন বল করার আগেই বোঝা যাচ্ছিল। অন্যদিকে অর্শদীপকে বসিয়ে রেখে রেখে যেন ধারটাই নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। দুজনে মিলে রান বিলিয়ে বুমরাহও অভাব যেন আরও স্পষ্ট করে দিলেন। শেষে বরুণ চক্রবর্তী আর কুলদীপ যাদব এসে রানের গতিতে রাশ টানলেন। কুশলকে (৫৮) স্পিনমন্ত্রে জব্দ করেন বরুণ। কিন্তু নিশঙ্কাকে আটকাবে কে? ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি করলেন। কোনও বোলারকেই সেভাবে রেয়াত করলেন না।
তবে নাটক বাকি ছিল শেষ ওভারে। বল করতে এলেন ৩ ওভারে ৪৪ রান দেওয়া হর্ষিত। ম্যাচ জিততে শ্রীলঙ্কার দরকার ১২ রান। প্রথম বলেই নিশঙ্কাকে (১০৭) ফেরালেন হর্ষিত। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানেও একপ্রস্থ নাটক। শ্রীলঙ্কা সেখানে মাত্র ২ রান করে। কিন্তু দাসুন শনাকাকে আউট দিয়েও তা ফিরিয়ে নেন আম্পায়ার। কারণ প্রথমে ক্যাচ আউট হলেও পরে রান আউট হন। অথচ রিভিউ নিয়ে দেখা যায় ক্যাচ ছিল না। যেহেতু বল ‘ডেড’, তাই রান আউটও দেওয়া হয়নি। যাই হোক, অর্শদীপ সিং ২ উইকেট তোলেন। আবার ভারত প্রথম বলেই ম্যাচ জিতে যায়।
ফাইনালে সামনে পাকিস্তান। যাদের আগের দুই ম্যাচে হারিয়েছে ভারত। আত্মবিশ্বাস যেন আত্মতুষ্টিতে পরিণত না হয়, এই ম্যাচ তার ‘শিক্ষা’ দিয়ে গেল। ক্যাচ এই ম্যাচেও পড়েছে, ফিল্ডিংয়ে অনেক সমস্যা, বোলিংয়ের খামতিগুলো প্রবলভাবে চোখে পড়েছে। সব মিলিয়ে এই ম্যাচ ভারতের জন্য যেন ‘ওয়েক আপ কল’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.