ফাইল ছবি।
স্টাফ রিপোর্টার: শুভমান গিল থাকবেন? নাকি থাকবেন না? জশপ্রীত বুমরাহ খেলবেন? না খেলবেন না? মহম্মদ সিরাজকে নেওয়া হবে? না হবে না? শ্রেয়স আইয়ার-যশস্বী জয়সওয়ালেরও বা কী হবে? তাঁদের কি অন্তর্ভুক্তি ঘটবে কোনও ভাবে?
যত সময় এগোচ্ছে, আসন্ন এশিয়া কাপের দল নির্বাচনকে ততটাই জটিল দেখাচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে, আগামী ১৯ কিংবা ২০ আগস্ট দল নির্বাচন করে নেওয়া হবে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচকদের সামনে তাঁর আগে যে সমস্যা, তার নাম প্রবলেম অফ প্লেন্টি। অর্থাৎ, আধিক্যের সমস্যা।
সূর্যকুমার যাদব নেতৃত্বাধীন ভারতের যে টি-টোয়েন্টি টিম তা এমনিতে যথেষ্ট শক্তিশালী। যথেষ্ট ভারসাম্যও রয়েছে তাতে। কিন্তু আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আরব আমিরশাহিতে শুরু হতে চলা এশিয়া কাপে লেখার মুখবন্ধে বলা প্রতিটা নাম আবার নির্বাচনযোগ্য। সাবজেক্ট টু সিলেকশন। শুভমান গিল। জশপ্রীত বুমরাহ। মহম্মদ সিরাজ। শ্রেয়স আইয়ার। যশস্বী জয়সওয়াল। এঁরা প্রত্যেকে এশিয়া কাপ খেলতে আগ্রহী এবং ফিট। যার পর প্রশ্ন উঠছে, অজিত আগরকর নেতৃত্বাধীন জাতীয় নির্বাচক কমিটি এবার করবে কী? ভারতের যে টি-টোয়েন্টি টিম সাধারণত খেলেন, তাঁদের নিয়েই এশিয়া কাপের দল গড়বেন? নাকি গিল-যশস্বী-বুমরাদের কথা ভাবতে হবে এবার?
আসলে এশিয়া কাপ এমন একটা টুর্নামেন্ট, যেখানে এক নয়, দুই নয়, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে তিন-তিন বার সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অপারেশন সিঁদুরের পর পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা কোনও অংশে ‘জঙ্গ’-এর কম হবে না। দেশবাসী যেনতেন প্রকারেণ পাকিস্তানের হার দেখতে চাইবে। তাই জাতীয় নির্বাচকদের উপর চাপটা দ্বিগুণ। কারণ, তাঁদের নির্বাচিত এশিয়া কাপের দলে কোনও ফাঁকফোঁকর থাকা চলবে না।
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে এঁরা কেউ ছিলেন না। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, সেটা নিছকই ছিল ঘরের মাঠে একটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। এশিয়া কাপ তার চেয়ে অনেক, অনেক আলাদা। আর ইংল্যান্ড সফর উত্তর সময়ে গিল আর সিরাজ দেশের নয়নের মণি। কারণ, তাঁরা বারবার প্রমাণ করেছেন, কঠিন পরিস্থিতিতে পারফর্ম করতে সক্ষম। সবচেয়ে সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে গিলকে নিয়ে। দেশের হয়ে শেষ বার গিল টি-টোয়েন্টি খেলেছেন, এক বছর হয়ে গিয়েছে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্বে তিনি টিমের ট্রাভেলিং রিজার্ভ ছিলেন। কিন্তু সেই সময় আর এই সময়, এক নয়। ইংল্যান্ড সফর থেকে ৭৫৪ রান করে দেশে ফিরেছেন গিল। আর ফিরে যে বিশ্রাম নিচ্ছেন ভারতের টেস্ট অধিনায়ক, মোটেও তা নয়। ফিরে এসেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি দলীপ ট্রফি খেলবেন। ভারতীয় বোর্ড এবং জাতীয় নির্বাচকদের বার্তা দিয়ে যে, তিনি সব রকম ক্রিকেট খেলতে আগ্রহী। সব ধরণের ক্রিকেট তিনি খেলতে চান।
অতএব, সেই শুভমান গিলকে বাদ দিয়ে এশিয়া কাপের দল নির্বাচন করা সহজ হবে না। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁকে এশিয়া কাপের টিমে জায়গা করে দেওয়াও সমান কঠিন হবে। গিল খেললে, খেলবেন কোথায়? কোন পজিশনে? ওপেনিংয়ে সঞ্জু সম্যাসন আর অভিষেক শর্মা সেটল করে গিয়েছেন। এরপর পরপর আসবেন তিলক বর্মা, অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব, শিবম দুবে, রিঙ্কু সিং এবং হার্দিক পাণ্ডিয়া। যাঁরা প্রত্যেকে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফর্মাটে পরীক্ষিত অস্ত্র। তবে আবার এটাও ঠিক, এঁদের অনেকের চেয়েই গিল পারফরম্যান্স এবং কোয়ালিটি-দু’টোতেই এগিয়ে। গত আইপিএলে দারুণ ফর্মে ছিলেন শুভমান। মরশুম জুড়ে সাডজে ছ’শো রান করেছিলেন। দেড়শোর উপর স্ট্রাইক রেটে। আইপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী তালিকায় প্রথম পাঁচে ছিলেন তিনি। চার নম্বরে। তাই জাতীয় নির্বাচকদের গিলকে উপেক্ষা করা কঠিন নয়, খুব কঠিন। সাধারণ দৃষ্টিতে দেখতে গেলে ভারতের টেস্ট অধিনায়কের অনায়াসে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে জায়গা করে নেওয়া উচিত। প্রশ্ন হল, কার জায়গায়?
সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড সিরিজে গিল যদি সবচেয়ে বেশি রান করে থাকেন, তা হলে সবচেয়ে বেশি উইকেট আবার নিয়েছেন মহম্মদ সিরাজ। সবচেয়ে বেশি ওভার বলও করেছেন তিনি। তবে গিলের মতো সিরাজও এক বছরের উপর টি-টোয়েন্টি খেলেননি। কিন্তু তাঁকে স্কোয়াডে রাখা হবে কি না, তর্কের বিষয়। কারণ, গিলের মতো তুখোড় আইপিএল সিরাজের যায়নি। ১৫-টা ম্যাচ খেলে ১৬-টা উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। বরং প্রসিদ্ধ কৃষর গত আইপিএল পারফরম্যান্স সিরাজের চেয়ে ভালো। ১৫ ম্যাচে ২৫ উইকেট। এটা ধরেই নেওয়া যায়, বুমরাহকে রাখা হবেই। তিনি যখন নির্বাচনযোগ্য, এশিয়া কাপের টিম তাঁকে ছাড়া ভাবা হবে না। কিন্তু তার পরেও যথেষ্ট ভালো রকম ব্যালেন্স করতে হবে নির্বাচকদের। কারণ যশস্বী জয়ওয়াল এবং শ্রেয়স আইয়ারও রয়েছেন। যাঁদের টিমে নেওয়ার প্রলোভন থাকলেও, দু’জনকেই একসঙ্গে নেওয়া মোটেও সহজ নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.