দুলাল দে: মাঠের ভিতর লড়াই চালাচ্ছেন মোহনবাগান কোচ-ফুটবলাররা। মাঠের বাইরে কর্তারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় মোলিনা যখন ম্যাকলারেনদের নিয়ে যুবভারতীতে ডার্বির প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ঠিক সেই সময় তাঁবুতে বৈঠক ডেকে ডার্বির আগে মাঠের বাইরে সমর্থকদের উজ্জীবিত করছেন কর্তারা, মানে সচিব সৃঞ্জয় বোস এবং সভাপতি দেবাশিস দত্ত। তার আগেই সাংবাদিক সম্মেলনে কোচ মোলিনা সমর্থকদের কাছে আবেদন করেছেন, ‘নব্বই মিনিট’ সময়টুকু তাঁদের সমর্থনের জন্য দিতে। শেষ রাতের খবর, কোচ-কর্তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে শনিবার শিল্ড ফাইনালের ডার্বিতে প্রিয় দলকে সমর্থন করার জন্য গ্যালারিতে হাজির থাকবেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা।
ইস্টবেঙ্গলে অবশ্য এসব মান-অভিমানের পালা নেই। কলকাতা লিগের পর ডুরান্ডেও ডার্বি জিতে লাল-হলুদ সমর্থকদের সঙ্গে কোচ-ফুটবলারের সম্পর্ক এখন, মিলে সুর মেরা তুমহারা। তারপর জাপানি স্ট্রাইকার হিরোশিকে পাচ্ছেন কোচ অস্কার ব্রুজো। ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে ডার্বিতে মোহনবাগানের সামনে পড়লেই যেরকম গুটিয়ে থাকত ইস্টবেঙ্গল ড্রেসিংরুম। শিল্ড ফাইনালের প্রাক মুহূর্তে এই চাপটা হঠাৎই যেন চলে এসেছে মোহনবাগান শিবিরে। অবশ্য যতটা না মাঠের ভিতরের কারণে, তার থেকে বেশি মাঠের বাইরের কারণে। আর এই একটা ডার্বি জয় চাপের মধ্যে থাকা পরিস্থিতিটাকে পুরোটাই বদলে দিতে পারে।
শিল্ডের গ্রুপ পর্যায়ের শেষ ম্যাচে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল, দুটো দলই জিতলেও কেউই বিশেষ আহামরি ফুটবল খেলেনি। রবসনের বল নিয়ন্ত্রণ দারুণ। কিন্তু কিছুটা গতি মন্থরতায় ভুগছেন। সেরকম ইস্টবেঙ্গলে মিগুয়েল। এসবের মধ্যে জয় গুপ্তা আর কেভিন আসার পর ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স যেরকম আগের থেকে অনেকটাই শক্তিশালী, মোহনবাগানেও সেরকম মেহতাব সিং যোগ দেওয়ায় ডিফেন্স আগের থেকে অনেক বেশি আঁটসাঁট। তার উপর আলড্রেড আর আলবার্তো দারুণ ফর্মে। তবে মোহনবাগান সমর্থকদের আসল ভরসা স্থল কিন্তু সেই জেমি ম্যাকলারেন। অস্ট্রেলিয়া ফুটবলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। কখন যে একটা পঞ্চাশ-পঞ্চাশ বলকে একশো শতাংশ গোলে পর্যবসিত করে দেবেন, আপনি ধরতেই পারবেন না। শুধু দেখবেন, গোলকিপার জালের ভিতর থেকে বল বার করছেন।
এই মরশুমে অস্কারের কোচিংয়ে এই ইস্টবেঙ্গল অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী। মোহনবাগান যেরকম দু’জন বিদেশি ডিফেন্ডার খেলাতে পারছেন, ইস্টবেঙ্গল সেরকম দু’জন বিদেশি মিডফিল্ডার সল ক্রেসপো আর রশিদকে নিয়ে খেলার পক্ষে। স্ট্রাইকারে হয়তো দীর্ঘদেহী হিরোশি চমক হতে চলেছেন ডার্বির। কারণ, এটাই যে তাঁর প্রথম ম্যাচ। বলতে গেলে মোলিনা আর অস্কারের মধ্যে দুই ফুটবল মস্তিষ্কের লড়াইও। ফলে শিল্ডের পারফরম্যান্স দেখার ভিত্তিতে কিছুতেই বলা সম্ভব নয়, কোনও একটি দল, শিল্ড ফাইনালের আগে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। এই যে ডার্বি এলেই সবাই বলেন, পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। এই প্রথমবার মনে হচ্ছে কথাটা একদমই সত্যি। শিল্ডের গ্রুপ পর্যায়ের পারফরম্যান্স দেখার পর সত্যিই বলা সম্ভব নয়, আদৌ কি কোনও দল সামান্য এগিয়ে শনিবার মাঠে নামছে? মনে হয় না। তবে হিরোশি কী চমকে দেখাবেন, সেটা তো কেউ জানেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.