প্রতীকী ছবি।
ভারত (প্রথম ইনিংস): ২২৪ (করুণ ৫৭, সুদর্শন ৩৮, অ্যাটকিনসন ৩৩/৫, টং ৫৭/৩)
ইংল্যান্ড (প্রথম ইনিংস): ২৪৭ (ক্রলি ৬৪, ব্রুক ৫৩, প্রসিদ্ধ ৬২/৪, সিরাজ ৮৬/৪)
ভারত (দ্বিতীয় ইনিংস): ৩৯৬ (যশস্বী ১১৮, আকাশ ৬৬, টং ১২৫/৫, অ্যাটকিনসন ১২৭/৩)
ইংল্যান্ড (দ্বিতীয় ইনিংস): ৩৬৭ (ব্রুক ১১১, রুট ১০৫, প্রসিদ্ধ ১২৬/৪, সিরাজ ১০৪/৫)
ওভালে ৬ রানে জয়ী ভারত।
ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট ২-২ ব্যবধানে ড্র।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চম দিনের ওভালে কি কোনও নাটক অবশিষ্ট থাকবে? দিন শুরুর আগে ভারতের দরকার ছিল ৪ উইকেট। ইংল্যান্ডের ৩৫ রান। শেষদিনে কি নাটক থাকবে? বল হাতে ম্যাজিক করতে পারবেন ভারতীয় পেসাররা? নাকি ইংরেজ ব্যাটাররা ওভাল টেস্ট (Oval Test) ম্যাচ ছিনিয়ে নেবেন? সেটা ঘটতে দিলেন না ভারতের পেসাররা। ওভালে অবিশ্বাস্য জয় পেল টিম ইন্ডিয়া। পেস ব্যাটারির চার্জে ইংল্যান্ডকে ছারখার করে ৬ রানে জিতল গিলের ‘নতুন ভারত’। সেই সঙ্গে সিরিজও ড্র রেখে বিলেত থেকে ফিরছে টিম ইন্ডিয়া। টেস্ট ক্রিকেটকে ‘জিতিয়ে’ জিতল টিম ইন্ডিয়া।
চলতি সিরিজের সব টেস্টই পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। আর তাতে নাটকের কমতি হয়নি। ওভালেও ঠিক তাই হল। দিনের শুরুতে ওভারটনের দুটো চার দিয়েই। তারপরেই ক্যাচ পড়ল। তাহলে কি আশা শেষ? না, সিরাজের বলে জুরেলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ধ্রুব জুরেল। ভারতের দরকার তিন উইকেট, ইংল্যান্ডের ২৭ রান। আরও একটি উইকেট তুললেন সিরাজ। এলবিডব্লু করলেন ওভারটনকে। ইংল্যান্ডের তখনও দরকার ২০ রান। একটা আবেদন খারিজ হল। শেষের দিকে কাঁধে চোট নিয়েও ব্যাট করতে নামলেন ক্রিস ওকস। টেস্ট ক্রিকেটের ‘মজা’ পুরোপুরি উসুল করে নিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
একদিকে অ্যাটকিনসন। অন্যদিকে সোয়েটারের ভিতর হাত ঢোকানো ওকস। সিরাজের বল অ্যাটকিনসন প্রায় চোখ বন্ধ করেই হাঁকালেন। আকাশ দীপ ক্যাচ ছাড়লেন, ছয়ও করে দিলেন। ওভারের শেষ বলে এক রান নিতে ছুটলেন দুজনে। ধ্রুব জুরেল বল স্টাম্পে লাগাতে পারলেন না। পরের ওভারেও ব্যাটিংয়ে সেই অ্যাটকিনসন। সেই অ্যাটকিনসনকে ফেরালেন সিরাজ (১০৪/৫)। ক্যাচ থেকে শেষ উইকেট তোলা। তিনিই ভারতের ‘নায়ক’।
ম্যাচের ফয়সালা হয়তো চতুর্থ দিনের শেষেই হয়ে যেত। আচমকাই খারাপ আলোর জন্য দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়। শেষবেলায় তেতে উঠেছিল ভারতীয় পেস ব্যাটারি। সেঞ্চুরির পর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ (১২৬/৪) আর বিপজ্জনক হয়ে উঠতে দেননি জো রুটকে। ১০৫ রানে আউট হন ইংরেজ ব্যাটার। তার আগেই আউট হয়েছিলেন হ্যারি ব্রুক (১১১)। সেই সময় যে ‘মোমেন্টাম’টা ভারতীয় পেসাররা পেয়েছিল, তাতে মনে হচ্ছিল, সম্ভব, কামব্যাক সম্ভব। কারণ ওভালে জিতলে ২-২। হারলে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজে পরাজয়। সেটা করতে দিলেন না গিলরা।
প্রথম ইনিংসে ভারত করেছিল ২২৪ রান। জবাবে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে ওঠে ২৪৭। ২৩ রানে পিছিয়ে থেকে ইংল্যান্ডের জন্য ৩৭৪ রানের বিরাট লক্ষ্য রাখে ভারত। ওভালে সর্বোচ্চ ২৬৩ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ছিল। ফলে নতুন নজির গড়তে হত ইংরেজদের। কাঁধের চোট নিয়ে ড্রেসিংরুমে পায়চারি করছেন ক্রিস ওকস। প্রয়োজনে নামতেও তৈরি। কিন্তু আচমকা মাঠের দখল নিলেন বরুণদেব। টানটান উত্তেজনার ম্যাচ থমকে গেল ঝাঁপিয়ে নামা বৃষ্টিতে। সেই বারিধারা এতখানি যে চতুর্থ দিনের খেলা বন্ধ হয়ে গেল। অর্থাৎ, ম্যাচ গড়াল পঞ্চম দিনে।
সেখানে একঘণ্টার বেশি ম্যাচ হল না। তবে সেটুকুই যথেষ্ট। ভারত জিতল ৬ রানে। মাথা ঠান্ডা, চোয়াল শক্ত। কামব্যাকের মন্ত্র যে এই টিমটাও জানে, সেটা বুঝিয়ে দিলেন শুভমান গিল। অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ড থেকে সিরিজ ড্র করে রেখে ফেরা। ‘নৈতিক জয়’ বললে কি খুব ভুল বলা হয়? রোহিত-বিরাট জমানা যে অতীত, সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছে ‘নতুন ভারত’। ভুলভ্রান্তি হয়েছে, অনেক কিছু শোধরাতেও হবে। তবু এই কামব্যাক ভবিষ্যতের জন্য ভারতকে মন্ত্র দিয়ে গেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.