স্টাফ রিপোর্টার: বছর দেড়েক আগের কথা। ওডিআই বিশ্বকাপ ফাইনালের সময় হোটেল নিয়ে হাহাকার দেখা গিয়েছিল আমেদাবাদে। তার বছর খানেক আগে জিটি বনাম সিএসকে আইপিএল ফাইনালের সময়ও দেখা গিয়েছিল তেমনই ছবি। কিন্তু শনিবারের আমেদাবাদ একেবারে নিরুত্তাপ। দেখে বোঝার উপায় নেই আগামী তিনদিনে দু’টো মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হবে মোতেরায়। যার প্রথমটা হবে রবিবার। যে ম্যাচ ঠিক করে দেবে ফাইনালের লাইন আপ। বিশ্ব ক্রিকেটের দুই মহাতারকা- বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মা প্রথমবার কোনও ফাইনালে মুখোমুখি হবেন? নাকি নতুন চ্যাম্পিয়ন পাবে আইপিএল?
ম্যাচটা পাঞ্জাব কিংস বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এই দুই দলের কোনও একটা ফাইনাল খেলবে বিরাটের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতেই এলিমিনেটরে মুলানপুরে গুজরাট টাইটান্সকে হারিয়েছে মুম্বই। তারপর চার্টাড ফ্লাইটে ভোর চারটে নাগাদ আহমেদাবাদ নেমেছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচ খেলেই বিমানযাত্রার ধকল সামলাতে সারাটা দিন বিশ্রাম নিয়েই কাটালেন রোহিত, হার্দিক পাণ্ডিয়ারা। ব্যতিক্রম দু’জন ক্রিকেটার। দীপক চাহার এবং রিস টপলে। প্রথমজন হাঁটুর চোট সারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে নামতে মরিয়া। আর শেষ ম্যাচে রিচার্ড গ্লেসন চোট পাওয়ার ফলে তাঁর দলে ফেরাটা গুরুত্বপূর্ণ মুম্বইয়ের জন্য। ফলে বাকিরা বিশ্রাম নিলেও কোচ মাহেলা জয়বর্ধনের তত্ত্বাবধানে মাঠে হাজির হলেন দুই পেসার। সেখানে একপ্রস্থ ফিটনেস টেস্ট দিলেন দীপক। শুরুতে কিছুক্ষণ দু’পায়ে রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড পরে ডানদিক-বাঁদিকে ছুটলেন। তারপর কিছুক্ষণ জগিংয়ের পর দৌড়দৌড়িও করলেন। তখনও চাহারের বাঁ হাঁটুর উপরে ও নিচে প্যাড লাগানো ছিল। এমনিতে মোতেরা বিশ্বের অন্যতম সেরা মাঠ। কিন্তু হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যা থাকলে এই স্টেডিয়াম এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ কোনও প্রয়োজনে মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে যেতে হলে অনেকটা ওঠা-নামা করতে হয়। এদিন অবশ্য দীপককে দেখা গেল বাড়তি সতর্কতা নিয়ে হাঁটতে। রবিবাসরীয় সকালে ফিটনেস টেস্টের পরই বোঝা যাবে যে, তিনি ফিরছেন নাকি পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে টপলের অভিষেক হবে মুম্বই জার্সিতে।
পাঞ্জাব শিবিরে আবার চোট ইস্যুতে স্বস্তি রয়েছে। ডান কবজির সমস্যা মিটিয়ে ম্যাচ ফিট হয়ে উঠেছেন যুজবেন্দ্র চহাল। এদিন ট্রেনিং সেশনে দেখা গিয়েছে, ফুটবল খেলা থেকে ক্যাচ ধরা সবই করছেন তিনি। যা খবর, তাতে ১৮ মে শেষবার মাঠে নামা এই স্পিনারের খেলতে বিশেষ সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এমনিতেই প্রতিপক্ষে রোহিত, জনি বেয়ারস্টো, সূর্যকুমার যাদব, জশপ্রীত বুমরাহর মতো নাম রয়েছে, যাঁরা প্রত্যেকেই শেষ ম্যাচটা দুরন্ত খেলেছেন। সেখানে আরসিবি-র বিরুদ্ধে প্রথম কোয়ালিফায়ারে মাত্র ১০১ রানে গুটিয়ে গিয়েছে পাঞ্জাব। চাপের মুখে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে তাদের ব্যাটিং। ফলে ১১ বছর পর ফের ফাইনাল খেলতে হলে পারফরম্যান্স গ্রাফ যে অনেকটাই তুলে আনতে হবে, অজানা নয় প্রভসিমরন সিং, অর্শদীপ সিংদের। এমন অবস্থায় চাহালের প্রত্যাবর্তন বিকল্প বাড়াবে পাঞ্জাব বোলিংয়ে। তবে বুমরাহ-ট্রেন্ট বোল্টের পেস অ্যাটাক সামলানোর কাজটা কয়েকদিন আগেই করেছেন জশ ইংলিশরা। মরাবাঁচার ম্যাচে নামার আগে সে রেকর্ড স্বস্তি দেবে পাঞ্জাবকে।
শনিবার স্টেডিয়ামে পৌঁছে পিচ দেখতে গিয়েছিলেন জয়বর্ধনে। সেসময় অবশ্য উইকেট ঢাকা ছিল। পরে মাঠকর্মীরা এসে মিনিট পাঁচেকের জন্য দু’টো পিচ দেখান মুম্বই কোচকে। যে সাত ও এগারো নম্বর উইকেট দেখলেন তিনি, দু’টোতেই আগে ব্যাট করা দল জিতেছে এবার। শুধু তাই নয়, দু’বারই দু’শোর বেশি রান করে তা ডিফেন্ড করেছে জয়ী দল। আর আহমেদাবাদে শিশিরের প্রভাব বিশেষ একটা নেই। ফলে রবিবার টসের উপর অনেকটাই নির্ভর করছে ম্যাচের ভাগ্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.