সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সতেরো বছর কাটল, কেউ কথা রাখেনি। অপেক্ষার পর অপেক্ষায় কেটেছে কত আলো-অন্ধকারের রাত। মাথার ভিতর খেলা করেছে আশা-প্রত্যাশা থেকে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা। এবার বোধহয় আর নয়। নতুন চ্যাম্পিয়ন পাবে আইপিএল (IPL 2025)। হয় আরসিবি বা পাঞ্জাব কিংস, কোনও একটা দল প্রথমবার শিরোপা পাবে। না, নিছক শিরোপা নয়। আসলে সতেরো বছর ধরে পুষে রাখা হাহাকারের শাপমুক্তি হবে।
এই তো জীবন, কালীদা! যার জন্য এত আকাঙ্ক্ষা, সে ক্রমশ মরীচিকার মতো দূরে সরে যেতে থাকে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ভক্তদের থেকে সেটা আর ভালো কে জানে? শুধুমাত্র ইনস্টাগ্রামের হিসেব বলছে, ফলোয়ার সংখ্যা ২ কোটির সামান্য বেশি। এ নেহাতই কাগুজে হিসেব। সংখ্যা দিয়ে ভক্তদের মাতামাতি বিচার করাটা বাতুলতামাত্র। প্রতিটা মরশুম, প্রতিটা ম্যাচ চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে লাল-কালো জার্সির জোয়ার থেকে কে বলবে, উন্মাদনায় কমতি আছে? স্লোগান ওঠে, ‘এ শালা কাপ নামদে’। আর প্রতিবছরই মরশুম শেষ হয় হতাশা দিয়ে।
২০০৯ সালে প্রথম ফাইনালে (Final) উঠেছিল বেঙ্গালুরু। মাঝে ২০১১ ও ২০১৬। কিন্তু কাপের সঙ্গে দূরত্ব রয়েই গিয়েছে। তিনবার রানার আপ, ছয়বার প্লে অফে যোগ্যতা অর্জন। আরসিবি’র ইতিহাসে ধারাবাহিকতার অভাব নেই। আর নেই সাফল্যের চকমকি ঝলকানির। মঙ্গলবার সেই সবটা সুদে-আসলে তুলে নেওয়ার লড়াই।
আরেকজনের জন্যও বোধহয় এটাই সুবর্ণ সুযোগ। না, সফর এবারই শেষ হবে না। কিন্তু বেঙ্গালুরু যে গতিতে ছুটছে, তাতে মনে হচ্ছে সব অঙ্ক একটা অমোঘ লক্ষ্যে ছুটে চলেছে। ফাইনালে উঠে এক আঙুল তুলে সেটারই হয়তো ইঙ্গিত করেছিলেন বিরাট কোহলি। আর একটাই ম্যাচ বাকি। আইপিএলে সবচেয়ে বেশি, সবচেয়ে বেশি চার। তাঁর সব পেয়েছির দেশে শুধু আইপিএল ট্রফিটার জায়গাই ফাঁকা। আরসিবি ট্রফি জিতলে শুধু সমর্থকদের প্রাপ্তি হবে না। ক্রিকেটার কোহলিকেও শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়ে দেবে। সাবালকত্বের আইপিএল নিশ্চয়ই সেই সুযোগ এনে দিতে পারে।
সেই তুলনায় পাঞ্জাব কিংসকে নিয়ে আলোচনা কম। তাদের সফর এত গর্বোজ্জ্বলও নয়। ইতিহাস বলছে, পাঞ্জাব একবারই ফাইনালে উঠেছে। তাও সেটা ২০১৪ সালে। তারপর নাম বদলেছে, লোগো বদলেছে। অধিনায়কের পর অধিনায়ক বদলেছে। এমনকী স্টেডিয়ামও বদলেছে। কিন্তু ২০০৮-এ যিনি গ্যালারিতে আলো করে থাকতেন, আজও তিনি থাকেন। ‘বীর জারা’র ‘বীর’ শাহরুখ খান তিনবার আইপিএল জিতেছেন। আর ‘জারা’ প্রীতি জিন্টার আইপিএল ভাঁড়ার আজও শূন্য। মঙ্গলে সেই অপ্রাপ্তি ঘোচানোর মাহেন্দ্রক্ষণ।
উত্তরটা তো আরেকজনকেও দিতে হবে। ‘অবাধ্য’, ‘লোভী’ বলে কম কটাক্ষ সহ্য করতে হয়নি শ্রেয়স আইয়ারকে। আইপিএলের ইতিহাসে দুটি ভিন্ন দলের হয়ে ট্রফি জেতার সুযোগ তাঁর কাছে। পাঞ্জাব তাঁকে অনেক খোলা মনে খেলতে দিচ্ছে। সমর্থকদের প্রত্যাশাও অনেক। দলে পাঞ্জাবি ক্রিকেটারের অভাব নেই। যেটা ট্রফি জেতার জন্য বাড়তি উৎসাহ জোগাতে পারে। পাঞ্জাব কিংস কি পারবে আইপিএলের ‘কিং’ হয়ে উঠতে? সমর্থকদের উপর থেকে সতেরো বছরের অন্ধকার সরিয়ে দিতে? উত্তরটা মঙ্গল-সন্ধ্যার জন্য তোলা থাক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.