ভারত: ২৪৭ (হারলিন ৪৬, রিচা ৩৫, ডায়না ৬৯/৪, ফতিমা ৩৮/২)
পাকিস্তান: ১৫৯ (আমিন ৮১, নাটালিয়া ৩৩, ক্রান্তি ২০/৩, দীপ্তি ৪৫/৩)
৮৮ রানে জয়ী ভারত।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুবাই হোক কিংবা কলম্বো। টুর্নামেন্ট বদলে যায়। কুশীলবও এক থাকে না। কিন্তু খেলার ফলাফল এক থাকে। সূর্যকুমারদের জায়গায় এখানে হরমনপ্রীতরা। বিশ্বকাপের মঞ্চে তাঁরা নেমেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। কিন্তু বাইশ গজে ওয়াঘার দু’পারের দুই দেশের দ্বন্দ্ব ফের জিতল ভারতীয় মহিলা দল। অর্থাৎ, মহিলাদের ভারত-পাক দ্বৈরথে ‘উইমেন ইন ব্লু’রা ১২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। ২৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের ইনিংস ভেঙে পড়ল ১৫৯ রানে। ভারত জয়ী ৮৮ রানে।
ভারতের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। প্রথম দুই ওভারে ওঠে মাত্র ৪ রান। চতুর্থ ওভারের মাথায় রান আউট হন মুনিবা আলি। যদিও তাঁর আউট নিয়ে কম নাটক হয়নি। ক্রান্তি গৌড়ের বল মুনিবার প্যাডে লাগে। লেগ বিফোরের আবেদন করেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। আম্পায়ার অবশ্য আউট দেননি। রিভিউও নেয়নি ভারত। কিন্তু সেখানেই থামেনি ঘটনা। দীপ্তি শর্মার নিখুঁত থ্রো উইকেট ভেঙে দেয়। যদিও ফিল্ড আম্পায়ার জানিয়ে দেন ক্রিজে ছিলেন পাক ব্যাটার।
বিতর্কের শুরু তার পরেই। মাঠের আম্পায়ারকে থামিয়ে দেন তৃতীয় আম্পায়ার। রিপ্লেতে দেখা যায়, মুনিবার ব্যাট ক্রিজের ভিতরে থাকলেও উইকেটে বল লাগার মুহূর্তে তাঁর ব্যাট ছিল হাওয়ায়। তৃতীয় আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত নেন। এমন সিদ্ধান্তের পর একেবারে হতবাক হয়ে যান মুনিবা। তাঁর দাবি ছিল, বলটা ডেড হয়ে গিয়েছে। তাই কোন যুক্তিতে তিনি আউট? এই সময় ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন পাক অধিনায়ক ফতিমা সানা। তিনি আম্পায়ারকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আম্পায়ার নিজের সিদ্ধান্ত বদল করেননি। পাকিস্তানের রান তখন ৬।
এরপর সিদরা আমিনের ক্যাচ ফসকান রিচা। কয়েক বল পরেই এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতে পারতেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেটারদের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। এরপর রিভিউও নেননি হরমনপ্রীতরা। পরে রিপ্লেতে দেখা যায় আউট ছিলেন পাক ব্যাটার। এরপর সাদাফ শামস (৬)-কে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখান ক্রান্তি। খানিক পরেই আলিয়া রিয়াজ মাত্র ২ রানেই আউট হন। পাকিস্তান তখন ৩ উইকেটে ২৬। এরপর নাটালিয়া পারভেজকে নিয়ে ৬৯ রানের জুটি গড়েন সিদরা। নাটালিয়াকে ৩৩ রানে ফেরান ক্রান্তি। এদিন ব্যাট চলেনি পাক অধিনায়ক ফতিমারও। দীপ্তির বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ২ রানে আউট হন তিনি। পাকিস্তানের রান তখন ১০২/৫।
হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না সিদরা আমিন। এখান থেকে ৪১ রানের জুটি গড়েন নওয়াজকে নিয়ে। তবে এই জুটি বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই নওয়াজকে আউট করেন স্নেহ রানা। উইকেটের অন্য প্রান্তে একা কুম্ভের মতো লড়ছিলেন আমিন। কিন্তু তাঁকে সঙ্গত দেওয়ার মতো কেউ ছিলেন না। শেষমেশ লড়াকু ৮১ রান করে স্নেহ রানার বলে আউট হন তিনি। এখানেই যেন লেখা হয়ে যায় ম্যাচের নিয়তি। শেষমেশ ১৫৯ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ভারতের হয়ে ক্রান্তি গৌড় এবং দীপ্তি শর্মার শিকার ৩ উইকেট। স্নেহ রানা নিয়েছেন ২ উইকেট। দু’টি রান আউট হয়েছে পাকিস্তানের ইনিংসে।
রবিবার টসে জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান। বৃষ্টির কারণে পিচ ছিল স্যাঁতসেঁতে। আকাশের মুখ ভার। যার ফায়দা তুলতে চেয়েছিলেন পাক অধিনায়ক ফতিমা সানা। তবে শুরুটা কিন্তু বেশ ভালোই করলেন ভারতের দুই ওপেনার প্রতিকা রাওয়াল এবং স্মৃতি মন্ধানা। ফতিমা সানার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ২৩ রানে সাজঘরে ফিরলেন স্মৃতি। ৩১-এর বেশি করতে পারলেন না প্রতিকাও।
মাত্র ১৯ রানের মাথায় আউট হলেন ভারত অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর। তবে লড়ছিলেন হারলিন দেওল। চার রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি মিস করলেন তিনি। ৩২ রানের বেশি করতে পারলেন না জেমাইমা রদ্রিগেজ। তিনি আউট হওয়ার আগে অবশ্য পোকার উপদ্রবে ১০ মিনিটের জন্য স্থগিত হয়ে যায় ম্যাচ। এরপর দীপ্তি শর্মা এবং স্নেহ রানার জুটিতে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ ৪২ রান। রানা (২০) আউট হতেই খেই হারিয়ে ফেলেন দীপ্তিও। তবে আট নম্বরে নেমে তাণ্ডব চালালেন বাংলার রিচা ঘোষ। ২০ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকলেন। তাঁর ঝোড়ো ইনিংসের সুবাদে ভারতের রান পৌঁছায় ২৪৭ রানে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একের পর এক উইকেট হারিয়ে পর্যুদস্ত হয় পাকিস্তান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.