সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আঘাত সে যে পরশ তব, সেই তো পুরস্কার।’ এটা ক্রিকেটের দীর্ঘ ফরম্যাটের পুরস্কার বলতে পারেন। ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টের প্রথম দিন রিভার সুইপ মারতে গিয়ে পায়ে চোট পেলেন ঋষভ পন্থ। দ্বিতীয় দিন শুরুর আগে জানা গেল, ইংল্যান্ড সিরিজ থেকেই ছিটকে গিয়েছেন। ছ’সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। কিন্তু দেশের দরকারে তিনি সবটুকু উজাড় করে দিয়েও তিনি আছেন। সেই উদাহরণই তুলে ধরলেন ম্যাঞ্চেস্টার। দলের প্রয়োজনে চোট নিয়েও ব্যাট করতে নামলেন পন্থ। তাঁর এই সাহসী মনোভাব মনে পড়াল অনিল কুম্বলের কথা।
২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে অনিল কুম্বলে চোয়াল ভেঙে যাওয়া সত্ত্বেও ব্যান্ডেজ বেঁধে মাঠে নেমে বোলিং করেছিলেন। ব্যাটিং করার সময় মারভিন ডিলনের একটি বাউন্সারে চোয়াল ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। এই ঘটনার পর তিনি ১৪ ওভার বোলিং করেছিলেন। কুম্বলের সাহসী মনোভাবের কথা আজও স্মরণীয়। এবার অনুরূপ স্মৃতিও ফেরালেন ঋষভ পন্থ। দ্বিতীয় দিনে ভারতের রান তখন ৩০০-র গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে। টিম ইন্ডিয়ার ড্রেসিংরুমে তখন হঠাৎই দেখা গেল ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ঋষভ পন্থ। ক্যামেরায় তাঁর মুখ ভেসে উঠতেই মাঠে উপস্থিত দর্শকরা তাঁকে অভিবাদন জানান। তখনই বোঝা গিয়েছিল, দলের দরকারে ব্যাট করতে নামবেন তিনি।
শার্দূল ঠাকুর ৪১ রানে সাজঘরে ফেরার পর যখন ব্যাট করতে নামলেন পন্থ, দর্শকরা উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। ক্রিস ওকসের বল রিভার সুইপ করতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন পন্থ। বুধবার চোটের পর আর ব্যাট করার মতো অবস্থায় ছিলেন না পন্থ। গলফ কার্টে করে দ্রুত তাঁকে মাঠের বাইরে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে ইন্ডোরে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা চলে। শুভমান গিল, ব্যাটিং কোচ সীতাংশু কোটাক তখন ঋষভের পাশে দাঁড়িয়ে। টিমের ডাক্তার এসে ঋষভের চোট পরীক্ষা করেন। তারপর অ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় ঋষভকে।
এক নেট নাগরিক লিখেছেন, ‘তিনি আহত হতে পারেন। তাঁর মনোবলও হয়তো ঠিক নেই। কিন্তু দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে নিতে দ্বিধা করলেন না পন্থ। কারণ তিনি কেবল একজন খেলোয়াড় নন, তিনি একজন যোদ্ধা।’ আর-এক নেটিজেনের কথায়, ‘সবাইকে অবাক করে দিলেম তিনি।’ দ্বিতীয় দিনে ভারতীয় দল যখন স্টেডিয়ামে পৌঁছায়, দেখা গিয়ে পন্থকেও। তাঁর হাতে ছিল ক্র্যাচ। ডান পায়ে ছিল বিশেষ জুতো। বোঝাই যাচ্ছিল, বড় চোট পেয়েছেন। এই অবস্থাতেও তিনি নামলেন। লাঞ্চের আগে ব্যক্তিগত ঝুলিতে আরও দু’টো রান যোগও করলেন। প্রত্যেক রানের জন্য দর্শকদের অভিবাদন কুড়োলেন। এটাই হয়তো টেস্ট ক্রিকেটের মাহাত্ম্য। এই কারণেই মহাকাব্যের সঙ্গে তুলনা করা হয়। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে রবীন্দ্র জাদেজা (২০)-র উইকেট হারালেও শার্দূল ঠাকুর এবং ওয়াশিংটন সুন্দর দক্ষ হাতে ভারতের ইনিংসকে ৩০০-র গণ্ডি পেরতে সহয়তা করেন। বৃষ্টি আসায় নির্ধারিত সময়ের কিছু আগেই লাঞ্চ ঘোষণা করা হয়। ভারতের রান তখন ৬ উইকেটে ৩২১। পন্থ (৩৯*)-এর সঙ্গে ক্রিজে অপরাজিত রয়েছেন ওয়াশিংটন সুন্দর (২০*)।
Here comes Rishabh Pant…
A classy reception from the Emirates Old Trafford crowd 👏
— England Cricket (@englandcricket)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.