ছবি এক্স
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এভাবেও জবাব দেওয়া যায়। এভাবেই জবাব দেওয়া যায়। ইংল্যান্ড সফরের আগে তাঁর পরিসংখ্যান নিয়ে অনেকেই কটাক্ষ করেছিলেন। SENA দেশগুলিতে তাঁর রেকর্ড খারাপ। রানের গড় বলার মতো নয়। বিদেশের মাটিতে ব্যাট করতে গেলে পা কাঁপে। কীভাবে নেতৃত্ব দেবে? এমন অসংখ্য বাছা বাছা শব্দ হজম করতে হয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার টেস্ট অধিনায়ক শুভমান গিলকে। সমস্ত সমালোচনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে গিলের নেতৃত্বে একবাস্টনে প্রথমবার টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছে ভারত। এমন দুর্ধর্ষ জয়ের পর সাংবাদিক সম্মেলনে ভারত অধিনায়কের স্পষ্টবাদী অবতারের আবির্ভাব ঘটল। সেখানে তিনি খুঁজলেন সেই সব সাংবাদিককে, যাঁরা ইংল্যান্ড সফরের আগেই ‘গেল গেল’ রব তুলেছিলেন। এ যেন অনেকটা ৮৩’র বিশ্বকাপের ‘মান সিং-ডেভিড ফ্রিথ’ প্রসঙ্গ উসকে দিল।
ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পর হালকা মেজাজে থাকা গিল বলেন, “কই, আমার প্রিয় সাংবাদিককে তো দেখতে পাচ্ছি না। তিনি কোথায়? তাঁকে এখানে আশা করেছিলাম।” উল্লেখ্য, ৮৩’র বিশ্বকাপের ভারতীয় দলকে নিয়ে তেমন একটা উৎসাহ ছিল না কারওরই। ঠিক তেমনই লাল বলের ক্রিকেটে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির অবসরের পর শুভমান গিলের দল নিয়েও আশাবাদী হতে পারেননি অনেকেই। ৪১ বছর আগে যখন কপিল দেবের ভারত বিশ্বকাপ খেলতে যায়, সেই সময় উইজডেন ক্রিকেট মান্থলির সম্পাদক ডেভিড ফ্রিথ লিখেছিলেন, “একদিনের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত না হওয়া অবধি কোনও বিশ্বকাপ খেলা উচিত নয় ভারতের।” এখানেই শেষ নয়, একটা সময় তিনি বলেছিলেন, এই ভারত বিশ্বকাপ জিতলে তাঁর নিবন্ধের প্রকাশিত কপি গিলে ফেলবেন।
ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের পর দলের ম্যানেজার পিআর মান সিং চিঠি লিখেছিলেন ওই সাংবাদিককে। সেই চিঠিতে ডেভিড ফ্রিথের পুরনো নিবন্ধটি উদ্ধৃত করে তিনি ফ্রিথকে তাঁর কথা গিলে ফেলার জন্য চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ওই সাংবাদিক লর্ডসের প্রেস বক্সে বসে এক হাতে রেড ওয়াইনের গ্লাস আর অন্য হাতে তাঁর নিবন্ধের প্রকাশিত কপি ধীরে ধীরে গিলে ফেলেছিলেন। ৪১ বছর পর গিলও কিন্তু অনেকটা একই ভঙ্গিকে সাংবাদিককে খুঁজলেন। সেই সাংবাদিক হয়তো তাঁকে বারবার পরিসংখ্যানের কথা স্মরণ করিয়ে কঠিন সমালোচনা করেছিলেন।
গিলের সংযোজন, “ইতিহাস, পরিসংখ্যানের উপর আমি সত্যিই বিশ্বাস করি না। এ কথা টেস্টের আগেও বলেছিলাম। এখানে ভারতীয় দল ৫৬ বছরে ৯টি টেস্ট খেলেছে। বিভিন্ন দল এখানে এসেছে। মনে করি, ইংল্যান্ডে আসা সেরা দল আমরাই। ওদের হারিয়ে সিরিজ জেতার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী খেলতে পারলে সিরিজ জেতার স্মরণীয় স্মৃতি নিয়েই দেশে ফিরব।” এখানেই শেষ নয়। আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ে ভারতের টেস্ট অধিনায়কের কথায়, “সেরা ১৬ জনকেই ইংল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বুমরাহ বিশ্বের সেরা বোলারদের একজন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বোলিং ইউনিট হিসেবে যে কোনও পরিস্থিতিতে বিপক্ষের ২০ উইকেট তোলার ক্ষমতা রয়েছে আমাদের।” কে বলতে পারে, সাংবাদিক সম্মেলনে না এসে আড়ালে থাকা ওই সাংবাদিক গিলের মুখে এমন আত্মবিশ্বাসের ঝলক দেখে অনুতাপে ভুগছেন কি না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.