সংবাদ প্রতিদিন-এর জন্য কলম ধরলেন কিংবদন্তি রোমারিও
সোজাসুজি বলছি, বিশ্বকাপে থার্ড প্লেস ম্যাচের বড় ভক্ত আমি নই। বিশ্বকাপ লোকে খেলতে আসে, ট্রফি জেতার জন্য। সেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলে, সেমিফাইনালে হেরে গেলে, সব শেষ। কিন্তু তার পরেও কিছু কিছু জিনিস মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। ফুটবল বিশ্বকাপে থার্ড প্লেস ম্যাচ, ঠিক সেরকমই একটা ব্যাপার। আর যেহেতু একটা পদক বরাদ্দ থাকে ম্যাচটার জন্য, তাই এরও আলাদা একটা গুরুত্ব আছে। অতএব, আমার ব্যক্তিগতভাবে তৃতীয়স্থানের ম্যাচ ভাল লাগল কি না, মিডিয়ার আগ্রহ আছে কি না, এসবের কোনও মানে নেই। তার চেয়ে বিশ্বকাপে থার্ড প্লেস ম্যাচের গুরুত্ব আছে, মেনে নেওয়াই ভাল।
বেলজিয়াম আর ইংল্যান্ডের ম্যাচটা মন দিয়ে খেলার কারণও আছে। দু’টো টিমেই প্রচুর তরুণ প্লেয়ার। যারা রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর চেষ্টা করবে ২০২০ ইউরোতে ভাল কিছু করার। আর তাই, নতুন যুদ্ধ শুরু করার আগে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটা জিতে থাকলে, সেটা বেশ ভাল ব্যাপার। দু’টো টিমের একটাও বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে মারাত্মক কোনও ভুল করেনি। শুধু হেরে গিয়েছে। শনিবারের ম্যাচটা যে জিতবে, সে অন্তত বিশ্বাস করতে পারবে তাদের প্রসেসটা ভুল ছিল না। সমর্থকরাও টিমের উপর ভরসা ফিরে পাবেন।
নিজে স্ট্রাইকার ছিলাম বলে, বেলজিয়াম বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের আরও একটা আকর্ষণ আছে আমার কাছে। সেটা হল গোল্ডেন বুট কে জিতবে? হ্যারি কেনের ছ’টা গোল হয়ে গিয়েছে বিশ্বকাপে। ইংরেজ স্ট্রাইকার হয়তো ভাবছেও যে, সোনর বুট ও-ই নিয়ে যাবে। কিন্তু বেলজিয়ামের রোমেলু লুকাকুও খুব পিছিয়ে নেই। কেনের গোলসংখ্যা ছয় হলে, লুকাকুর চার। শনিবার যদি কেন গোল না করতে পারে, তাহলে সম্ভাবনা আছে লুকাকুর ওকে ধরে ফেলার। বরং আমি বলব, যারা এখনও বিশ্বকাপে টিকে আছে সেই আন্তোনিও গ্রিজম্যান আর কিলিয়ান এমবাপের পক্ষে শেষ ম্যাচে কেনের ছ’গোল ছোঁয়া কঠিন। কারণ, সেটা করতে হলে ওদের হ্যাটট্রিক করতে হবে। আর ১৯৬৬ বিশ্বকাপ বাদ দিলে বিশ্বকাপ ফাইনালে আর হ্যাটট্রিক হয়নি।
Did you know? 🤔 have won only two of their 22 matches against – but they tasted victory against in the last month!
More stats and facts ahead of 👉
— FIFA World Cup 🏆 (@FIFAWorldCup)
হ্যারি কেন নিয়ে একটু বলি। ও পুরনো ঘরানার স্ট্রাইকার। যার শটের সঙ্গে হেডও জোরালো। রাশিয়া বিশ্বকাপে ছ’টা গোলের মধ্যে তিনটে ও করেছে পেনাল্টি থেকে। কেনকে দেখে ভালই লেগেছে আমার। তবে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে সহজ একটা সুযোগ নষ্ট করেছে ও। সোনার বুট একটা বিশাল স্বীকৃতি। আমি নিশ্চিত, কেন চেষ্টা করবে সেটা জেতার। গ্যারি লিনেকারকে ছোঁয়ার। গ্যারি লিনেকারই শেষ ইংরেজ যে কি না ১৯৮৬ বিশ্বকাপে সোনার বুট জিতেছিল। কেনের চেয়ে লুকাকু অনেক বেশি ফিজিক্যাল খেলে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচের পর লুকাকু আর গোল পায়নি বিশ্বকাপে। কেন আর লুকাকু দু’জনেই কাল খিদে নিয়ে নামলে থার্ড প্লেস ম্যাচ কিন্তু জমে যাবে।
আরও কয়েকটা ব্যাপার আছে, যা কি না শনিবারের সন্ধেটা জমিয়ে দিতে পারে। বিশ্বকাপে সম্ভবত এটা একমাত্র ম্যাচ, যেখানে হেরে গেলে কেউ দোষ দেয় না। প্লেয়াররা অনেক রিল্যাক্সডভাবে খেলতে পারে। ইংল্যান্ড এবং বেলজিয়াম দু’টো টিমেই প্রতিভা প্রচুর। খিদেটাও আছে। এবার দু’টো টিমই যদি নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলে, আক্রমণের ঝড় তোলে, গোল করার দিকে মন দেয়, দেখার মতো ম্যাচ হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.