ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃত্রিম ঘাসের মাঠ, যা অবস্থিত সাড়ে সাত হাজার ফুটেরও বেশি উপরে। পাহাড়ের ঠান্ডা আবহাওয়ায় প্রায় অচেনা প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হবে। তার উপর শেষ আট ম্যাচে টানা হার। প্রশ্নের মুখে ফুটবলারদের ফর্ম, ফিটনেস, এমনকি মানসিকতাও।
প্রথমবার এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে নামার আগে ইস্টবেঙ্গলের সামনে চ্যালেঞ্জ একেবারে কম নেই। শুক্রবার সেই তালিকায় ঢুকে পড়েছিল কোচ অস্কার ব্রুজোর বেঞ্চে বসার বিষয়টিও। এদিন প্রথামাফিক সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি তিনি। বরং দলের অন্যতম অধিনায়ক মহেশ সিংকে সঙ্গী করে উপস্থিত হয়েছিলেন সহকারী কোচ বিনো জর্জ। তবে কি শনিবার পারো এফসি-র বিরুদ্ধে বিনোর কোচিংয়েই খেলতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে? জানা গিয়েছে, আরইসিসি সংক্রান্ত সমস্যায় এখনও এএফসি-র কাছে অস্কার স্বীকৃতি পাননি হেড কোচ হিসাবে। তাই এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বসতে পারেননি তিনি। ইতিমধ্যেই জটিলতা মেটাতে পদক্ষেপ করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে লাল-হলুদ সমর্থকদের জন্য স্বস্তির বিষয়,, স্বীকৃতি না পেলেও বেঞ্চে বসতে বা কোচিং করাতে সমস্যা নেই তাঁর। ফলে পারোর বিরুদ্ধে সরকারিভাবে যাঁর নামই টিম লিস্টে থাক, দলের ব্যাটন থাকবে অস্কারের হাতেই। এদিন বিকালে মূল মাঠে তাঁর নজরদারিতেই ঘণ্টাখানেক অনুশীলন সারলেন ক্লেটন সিলভা, আনোয়ার আলিরা।
দীর্ঘ বিরতির পর ফের এএফসি-র মঞ্চে ফিরেছে ইস্টবেঙ্গল। তবে সেই প্রত্যাবর্তন সুখের হয়নি। এসিএল ২-এর যোগ্যতা অর্জন পর্বে ঘরের মাঠে সেই যে আগস্টে হেরেছেন ক্লেটনরা, তারপর আর জয় দূরের কথা, ড্রয়ের মুখও দেখেনি লাল-হলুদ। এমনকী কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের যুগ শেষে অস্কারের আমলেও ম্যাচের পর ম্যাচ হারছে দল। ইস্টবেঙ্গলের এই পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার কথা শুনিয়ে রেখেছেন পারো এফসি-র কোচ পুষ্পলাল শর্মা।
সে যা-ই হোক। যতটা সম্ভব, তৈরি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। মহেশ যেমন বলে গেলেন, এমন পরিবেশে ম্যাচ খেলা নতুন বিষয় নয় তাঁর কাছে। লাল-হলুদের তারকা মিডফিল্ডারের কথায়, “আমাদের অনেকেই হয়তো গত দশ বছরে এমন পরিবেশে খেলেনি। তবে যে অ্যাকাডেমিতে আমি খেলা শিখেছি, সেখানে পরিবেশটা এমনই ছিল। ফলে আমার সমস্যা হবে না।” চোটের জন্য শেষ দু’ম্যাচে খেলেননি মহেশ। পারো-র বিরুদ্ধেও তাঁর খেলা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বিনো দাবি করেছেন, দলে কোনও চোট সমস্যা নেই। সবাই খেলার জন্য তৈরি। সঙ্গে বললেন, “আমরা প্রতিপক্ষকে সম্মান করছি। ওদের দলে ভালো বিদেশিরা আছে। তাছাড়া কৃত্রিম মাঠে খেলা চ্যালেঞ্জের। তবে আমরা নিজেদের পরিকল্পনামাফিকই খেলব।” এই মরশুমে একটাই ম্যাচ কৃত্রিম মাঠে খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে সেই ম্যাচে শিলং লাজংয়ের কাছে হারেন শৌভিক চক্রবর্তীরা।
পারো-র বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে ক্লান্তিও। ১৯ অক্টোবর ডার্বি খেলার একদিন পরই হেক্টর ইউস্তেরা ভুবনেশ্বর গিয়েছেন ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে। সেখান থেকে ফেরার পরের দিনই ফের থিম্পু উড়ে গিয়েছে দল। সেখানে এদিন অনুশীলনের জন্য মাত্র এক ঘণ্টা সুযোগ পেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। অর্থাৎ ডার্বির পরদিন ছাড়া আর পুরোদমে নন্দকুমারদের অনুশীলন করানোর সুযোগ পাননি অস্কার। ফলে নতুন কোচের ভাবনার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া এখন চ্যালেঞ্জ ফুটবলারদেরও। এমনিতে এএফসি-র মঞ্চে ভালো খেলা নিয়ে আশাবাদী অস্কার। তাঁর বক্তব্য, “এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ আমাদের কাছে উন্নতির সুযোগ। এমনিতে ভারতীয় ক্লাবগুলি সবসময়ই এএফসি-র প্রতিযোগিতায় গ্রুপ পর্ব অতিক্রম করে যায়। আমরাও আগামী মার্চে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে খেলতে চাই।” তবে এই প্রতিযোগিতায় দলে বিদেশি ফুটবলার খেলানোর কোনও উর্ধ্বসীমা নেই। সেখানে লাল-হলুদের হাতে আছে মাত্র ছয় বিদেশি। সেটাও চিন্তায় রাখছে অস্কারকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.