দুলাল দে: নতুন সংবিধান পাস না হওয়ায় এখনও পর্যন্ত আইএসএল আয়োজনের টেন্ডার এখনও ছাড়তে পারেনি ফেডারেশন। তবে আশা করা যাচ্ছে এই সপ্তাহেই সমস্যা মিটিয়ে টেন্ডার ছাড়বে ভারতীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা। তবে যা খবর, এফএসডিএলের সঙ্গেই কথা শুরু করেছে ফেডারেশন। প্রতি ক্ষেত্রেই দেখা যায় টেন্ডার ডাকার আগে বিভিন্ন আগ্রহী সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হয়। শোনা যাচ্ছে, আইএসএল আয়োজনের জন্য নতুন কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাই আগ্রহ দেখায়নি। টেন্ডার ছাড়লেও যে একাধিক সংস্থা সেই টেন্ডারে আগ্রহ প্রকাশ করবে তারও সম্ভাবনা ক্ষীণ। ফলে এফএসডিএলের কাছেই যেতে হচ্ছে ফেডারেশকে। ঠিক এই সময়েই এফএসডিএল ফেডারেশন কর্তাদের কাছে লম্বা চুক্তি চাইছে। সেই সময়টাও এক দু বছরের নয়। চোদ্দো থেকে পনেরো বছরের।
শেষবার ১৫ বছরের জন্য আইএসএল আয়োজনের জন্য এসেছিল এফএসডিএল। এবারও যদি এফএসডিএল আইএসএল আয়োজন করার জন্য টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে তা হলেও এই রকমই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি চায় তারা। না হলে আইএসএলে আসতে চাইছে না তারা। শোনা যাচ্ছে, ফেডারেশন যে টেন্ডার প্রকাশ করবে তাতে দশ থেকে পনেরো বছরের চুক্তির কথা উল্লেখ থাকবে। অর্থাৎ যে সংস্থাই আগামী আইএসএলের আয়োজনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে তাদের সঙ্গে ফেডারেশনের এই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিই হবে। তবে আগে যেমন তারা বার্ষিক পঞ্চাশ কোটি টাকা দিত এআইএফএফকে, এবার যদি তারা ফের এই দায়িত্ব নেয়, সেক্ষেত্রে আর্থিক চুক্তি কমতে পারে অনেকটাই। শুধুমাত্র আইএসএলের জন্য ফেডারেশনকে বার্ষিক সর্বোচ্চ ২৫ কোটি টাকা দিতে পারে এফএসডিএল।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুটি বিষয় নিয়ে। এক আইএসএলের অবনমন, আর দ্বিতীয় বিষয়টি প্রমোশন। আপাতত আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আগামী মরশুমে আইএসএলে সুযাগ পেয়ে গিয়েছে ইন্টার কাশী। এই বছর এই প্রমোশনের বিষয়টা হয়ে গিয়েছে। আপাতত আগামী কয়েক বছরের জন্য আইএসএলের শেষ কোনও দলের প্রমোশন হতে পারে এটাই। দ্বিতীয়টি, হল বর্তমান ফ্রাঞ্চাইজিদের অবনমন চায় না এফএসডিএল। তবে মহামেডানের প্রসঙ্গটি একটু অন্যরকম। তাদের আর্থিক অবস্থা যদি একই রকমই থাকে, তাহলে তাদেরও আগামী আইএসএলে খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। একমাত্র এফএসডিএল যদি আইএসএলের দায়িত্ব পায় তা হলেও ডিসেম্বরের মধ্যে আইএসএল শুরু হতে পারে। কারণ, তারা এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের ক্ষেত্রে পুরোপুরিভাবে অভিজ্ঞ। অন্যদিকে অন্য কেউ এলে তাকে পুরো সিস্টেমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগবে। শোনা যাচ্ছে, এফএসডিএল বাদে এমন কোনও আগ্রহী ব্যক্তিরও খোঁজ নেই ফেডারেশনের কাছে। ইতিমধ্যেই ফেডারেশন কর্তারা বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন, কিন্তু এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলে লগ্নি করতে আগ্রহী ব্যাক্তির খোঁজ মেলেনি সেইভাবে। পাশাপাশি ফ্রাঞ্চাইজি দলগুলোও তাকিয়ে রয়েছে এই পুরো বিষয়টির ওপর।
সূত্রের খবর, আরও একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে ফেডারেশন কর্তাদের সঙ্গে, যেহেতু নতুন সংবিধান অনুযায়ী আইএসএলকে আয়োজন করার দায়িত্ব থাকতে হবে ফেডারেশনকেই। নতুন নিয়মে তৃতীয় কোনও সংস্থা শীর্ষ লিগ চালাতে পারবে না। এই বিষয়টি নিয়েও ফেডারেশন কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেই খবর। এফএসডিএলের ভূমিকা ঠিক কী হবে সেটাও এখন আলোচনা চলছে বলেই খবর। শোনা যাচ্ছে, অবনমনের ইস্যু নিয়ে ফেডারেশনের তরফ থেকে আদালতের কাছে আবেদন করা হতে পারে। সেই আবেদনে বলা হতে পারে কয়েক বছরের এই নিয়মের শিথিলতা আনার বিষয়ে। আবেদন করা হতে পারে এই অবনমন আর প্রমোশনের বিষয়টি আরও কয়েক বছর পর আইএসএলে অন্তর্ভুক্তির। তবে পুরো বিষয়টাই আলোচনার স্তরে।
আগে থেকেই ঠিক ছিল শনিবার ফেডারেশেনের কর্মসমিতির সদস্যদের কথা শুনবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাগেশ্বর রাও। এদিন ভার্চুয়ালি সদস্যদের কথাও শুনলেন। তবে সিদ্ধান্ত জানালেন না। রবিবার রয়েছে ফেডারেশনের বিশেষ সাধারণ সভা। সেই সভায় পাস হবে সংস্থার নতুন সংবিধান। আর সোমবার নাগেশ্বর রাও তাঁর মতামত জানাবেন। এদিনের ভার্চুয়ালি সভায় ছিলেন আদালত বান্ধব গোপালশঙ্করনারায়ণ। ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটিতে রয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লানজিঙ্গলোভা হামার। ফেডারেশনের নতুন সংবিধান পাস হলে তিনিও পরবর্তী ক্ষেত্রে কার্যকরী কমিটিতে থাকতে পারবেন না। এদিন তিনিও ভার্চুয়ালি সভায় উপস্থিত ছিলেন। যদিও সবকিছু বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত হয়েছে সোমবার নাগেশ্বর রাও নিজের মতামত জানাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.