সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে সাহিল। ছবি: সংগৃহীত
অর্ণব দাস, বারাসত: নিম্নবিত্ত পরিবারের নিত্যদিনের সঙ্গী অনটন। তবুও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন অ্যাম্বুল্যান্স চালকের ছেলে। অবশেষে মিলল সাফল্য, জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি পরে মাঠে নামতে চলেছেন হাবড়ার সাহিল হরিজন। কলকাতা মাঠে পরিচিত মুখ ইউনাইটেড স্পোর্টসের এই ফুটবলার। এবার অনূর্ধ্ব-২৩ দলেও ফুল ফোটাতে তৈরি সাহিল।
১৯ বছর বয়সি ফুটবলারের বাড়ি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায়। বাবা অজয় হরিজন পুরসভার অস্থায়ী অ্যাম্বুল্যান্স চালক, মা গৃহবধূ। ছোটবেলা থেকে সাহিলের ফুটবলের প্রতি টান দেখে বাবাই তাঁর প্রথম প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নেন। তখনই সাহিলের প্রতিভা চোখে পড়ে। অভাব থাকা সত্ত্বেও সাহিলকে অশোকনগরের একটি ফুটবল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করায় পরিবার।
তখন বয়স ছয় বছর। সেই থেকেই মা-বাবার কষ্ট কমাতে, ফুটবলে ভবিষ্যৎ তৈরির লক্ষ্যে চোয়াল শক্ত করে মাঠে অনুশীলন শুরু করেন সাহিল। কল্যাণীর ইউনাইটেড স্পোর্ট ক্লাবে খেলা থেকেই নজরে পড়তে শুরু করেন। সেখান থেকেই জেলা, সন্তোষ ট্রফি, কলকাতা লিগ, সেকেন্ড ডিভিশন আই লিগ খেলে নাম ছড়াতে থাকে সাহিলের। এরপর দীর্ঘ এই পরিশ্রমে ফসল হিসাবে অনূর্ধ্ব ২৩ ভারতীয় ফুটবল দলে ডাক পেলেন তিনি।
জাতীয় দলের জার্সি পরে এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপ কাপে মাঠে দেখা যাবে তাঁকে। সামাজিক মাধ্যমে সাহিলের এই কৃতিত্বের জন্য শুভেচ্ছার বন্যা বয়ে চলেছে। ভীষণ খুশি তাঁর পাড়া-প্রতিবেশীরা। বাবা অজয় হরিজন জানিয়েছেন, “ছেলেকে ভালো প্রশিক্ষণ দিতে পারিনি, তেমন কোনও চাহিদাই পূরণ করতে পারিনি। কঠোর পরিশ্রম করে ছেলে আজ দেশের হয়ে খেলার ডাক পেয়েছে। খেলার মাঠে ও যেন সেরাটা দিতে পারে, দেশকে যেন জয় এনে দিতে পারে, সেই কামনা করি।” সাহিলের প্রথম ফুটবল কোচ সৌরজিৎ দাস বলেন, “প্রথম দিন থেকেই সাহিলের পায়ে অসাধারণ স্কিল দেখেছি। একইসঙ্গে আছে দুরন্ত গতি। আমার বিশ্বাস, দেশের হয়ে সাহিল সেরাটা উজাড় করে দেবে।” দেশের হয়ে খেলার জন্য ইতিমধ্যে হাবড়ার মাটি ছেড়ে ব্যাঙ্গালোরে পৌঁছেছেন সাহিল। সেখানেই চলছে জাতীয় দলের হয়ে খেলার প্রস্তুতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.