সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় বলে, যার শেষ ভাল তার সব ভাল। গোটা টুর্নামেন্টে দুরন্ত পারফর্ম করে অপরাজিত থাকা দলটার সেই ফিনিশিং টাচটাই ঠিকঠাক হল না। আর তাতেই ডুবল তরী। রবি সকালটা যে লেখা ছিল ‘এলএম টেন’-এর নামেই। তাই তো একদিকে যখন মেসিকে তুলে শূন্যে ছুঁয়ে দিয়ে সেলিব্রেশনে মেতেছেন সতীর্থরা, তখন না পাওয়ার জ্বালা আর বুকফাটা কান্নায় মাঠে ভেঙে পড়লেন নেইমার (Neymar)। তবে এ কঠিন সময় তো পার করে এসেছেন খোদ মেসিও। এক নয়, একাধিকবার। ট্রফি হাতছাড়া হওয়ার যন্ত্রণাকে তো হাড়ে হাড়ে চেনেন তিনি। তাই নেইমারের ব্যর্থতার গ্লানি মুছে দিতে সেলিব্রেশন থামিয়ে এগিয়ে আসেন মেসি। জড়িয়ে ধরেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারকাটিকে। থামান কান্না। আর সেই মুহূর্তে যেন নিঃশব্দে জিতে যায় ফুটবল।
গতবার হইহই করে কোপা (Copa America) এসেছিল ব্রাজিলের ঘরে। কিন্তু সেই সেলিব্রেশনের অংশ হয়ে উঠতে পারেননি ব্রাজিলীয় পোস্টার বয়। তখন তিনি চোটে কাতর। তাই ভেবেছিলেন, এবার খেতাব জিতে নতুন করে ইতিহাস গড়বেন। রিও দি জেনেইরোয় তাঁর হাত ধরেই উঠবে নতুন সূর্য। কিন্তু স্বপ্ন কি সবসময় সত্যি হয়? আর উলটোদিকে যখন থাকেন মেসির মতো অন্যগ্রহের তারকা, তখন তো সে স্বপ্নের পথ মুড়ে যায় কাঁটার চাদরে। এদিনও যেন তেমনটাই হল। টুর্নামেন্টে অনবদ্য ছন্দে থাকা তিতের দল আজ একটিও গোল করতে পারল না। বারবার শত্রু ডেরায় হানা দিয়েও ব্যর্থ ব্রাজিল। একটি গোল আবার বাতিল হয়ে যায় অফসাইডের কারণে। আর তখনই যেন ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। দেশের হয়ে অলিম্পিকে সোনা জেতানো নেইমারকে ফিরতে হল খালি হাতে।
🏆
A brilliant moment between Lionel Messi and Neymar at the end of the match!
Sport is ❤️❤️❤️
📽️
— Vinay Chandra (@VinayChandra01)
অদ্ভুতভাবে এবারই অতিমারীর জেরে প্রায় শেষ মুহূর্তে ঠিক হয়, কোপা হবে ব্রাজিলে (Brazil)। যে প্রস্তাব প্রথমে একেবারেই মেনে নিতে রাজি ছিলেন না ব্রাজিলের ফুটবলাররা। করোনার দাপটে তাঁরা টুর্নামেন্ট না করার পক্ষে সওয়ালও করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ শুরু হয় কোপা। মাঠের বাইরের প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ভুলে আরও একবার নিজেদের উজার করে দিয়েছিলেন সেলেকাওরা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। মাঠেই পড়ে রইল অপ্রাপ্তির কষ্ট। তবে ইতিহাস রচনার দিন নিজেকে ভুলে সেই ক্ষতে মলম লাগাতে এগিয়ে আসেন খোদ মেসি (Lionel Messi)। সে পাওনাই বা কম কী।
গত বিশ্বকাপে মাঠে বারবার পড়ে যাওয়ায় রীতিমতো হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছিলেন নেইমার। চোট পাওয়ায় তাঁর ‘অতিরিক্ত অভিনয়’ নিয়ে নিন্দুকরা হাজারো গালমন্দ করেছেন। কিন্তু তাতে দমে যাননি পিএসজি স্ট্রাইকার। বরং বডি ল্যাঙ্গোয়েজেই বারবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তাঁর ট্রফিজয়ের খিদে। তাই তো ৯০ মিনিটের হুইসেল বাজতেই কান্না ধরে রাখতে পারেননি। তবে আজ নিন্দুকরাও যেন নিশ্চুপ। আজ আর চর্চায় উঠে আসছে না নেইমারের ‘অভিনয় দক্ষতা’র কথা। বরং তাঁর অদম্য চেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়ে চোখের কোণই ভিজেছে আপামর ফুটবলপ্রেমীর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.