ছবি ইস্টবেঙ্গলের সোশাল মিডিয়া
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বসেছিল চাঁদের হাট। ১ আগস্ট ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। এ বছর ইস্টবেঙ্গলের ভারত গৌরব সম্মান পেলেন কিংবদন্তি হকি তারকা পি আর শ্রীজেশ। ভারত গৌরব সম্মান পেয়ে তিনি জানালেন, তাঁর মধ্যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রভাব রয়েছে। ‘দাদা’র আগ্রাসনের প্রশংসাও করেন তিনি।
এদিন ইস্টবেঙ্গলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মোহনবাগান ক্লাবের তরফ থেকে গিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “আমি মোহনবাগান সমর্থক। কিন্তু আমি তিন প্রধানের তত্ত্বে বিশ্বাসী। মোহনবাগান যদি ইস্টবেঙ্গলকে না হারায় আর ইস্টবেঙ্গল যদি মোহনবাগানকে না হারায়, তাহলে ফুটবলের আসল মজাটা কোথায় যাবে বলুন তো? মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল পরিপূরক। মোহনবাগান যদি স্বাধীনতার লড়াইয়ের প্রতীক হয়, তাহলে ইস্টবেঙ্গল সংগ্রামের প্রতীক। বাংলার ফুটবল, বাঙালির ফুটবল এগিয়ে চলুক।” তাছাড়াও মহামেডানের তরফ থেকে উপস্থিত ছিলেন ইস্তিয়াক আহমেদ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন গৌতম ভট্টাচার্য। প্রথমে বক্তৃতা দেন মুরারীলাল লোহিয়া। এ বছর ইস্টবেঙ্গলের ভারত গৌরব সম্মান পেলেন কিংবদন্তি হকি তারকা পি আর শ্রীজেশ। ভারতীয় হকির সেরাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। টোকিওর পর প্যারিস, টানা দুই অলিম্পিকে দেশের হয়ে জিতেছেন ব্রোঞ্জ পদক তিনি।
ইস্টবেঙ্গল দিবসের মঞ্চে হকি তারকাকে জার্সি পরিয়ে দিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁকে মিষ্টিমুখও করান ক্রীড়ামন্ত্রী। ভারত গৌরব সম্মান পেয়ে আপ্লুত শ্রীজেশ বলেন, “আমি অনেকটা ধোনি ও কোহলির মিশ্রণ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরও কিছুটা প্রভাব আছে। লর্ডসে দাদার জার্সি ঘোরানোর মুহূর্ত আজও মনে আছে। অধিনায়ক হিসেবে অনেক সময় আগ্রাসী হতে হয়। আবার কখনও কখনও পরিস্থিতি বুঝে ধোনির মতো মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়। বুঝতে হবে, কোন প্লেয়ারকে কীভাবে অনুপ্রাণিত করা যায়।” গতবছরের অলিম্পিক নিয়ে তিনি বলেন, “ব্রোঞ্জজয়ের ম্যাচ সবসময় চাপের। কারণ এই ম্যাচে হারলে কিছুই পাওয়া যাবে না। আমরা সোনা জিততেই চেয়েছিলাম।”
এদিন অরূপ বিশ্বাস বলেন, “অন্ধকার আছে। আলোও আছে। রাতও আছে। সকালও আছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সকালে কিন্তু সূর্য উঠেছে। ডার্বিতেই কিন্তু তার প্রমাণ হয়েছে। মাঠে খেলোয়াড়রা খেলেন। কিন্তু দর্শকদেরও বিরাট ভূমিকা থাকে। খেলোয়াড়দের উদ্বুদ্ধ করতে দর্শকদেরও ভূমিকা নিতে হবে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে অন্য ক্লাবের পার্থক্য হল, এই ক্লাব অতীতকে কখনও ভোলে না। তারা খেলোয়াড়দের যথাযোগ্য সম্মান দেয়। মঞ্চে তাদের দেখা যায়। তাদের নিয়ে ফটোসেশন হয়। এটাই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের বড় কৃতিত্ব। তারা সম্মান দিতে জানে।”
ভারত গৌরব ও জীবনকৃতি সম্মানের পাশাপাশি বর্ষসেরা ফুটবলার এবং ক্রিকেটারদেরও সম্মান জানানো হয়। এ বছর জীবনকৃতি সম্মান পেলেন প্রাক্তন অধিনায়ক সত্যজিৎ মিত্র ও মিহির বসু। তবে এদিন অনুষ্ঠানে ছিলেন না তিনি। বিদেশে থাকায় প্রাক্তন লাল-হলুদ অধিনায়কের হয়ে পুরস্কার নেবেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বর্ষসেরা ফুটবলারের সম্মান পেলেন সৌভিক চক্রবর্তী ও সৌম্যা গুগুলথ। সেরা উদীয়মান ফুটবলারের পুরস্কার পেলেন পিভি বিষ্ণু। বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসাবে সম্মান পান কণিষ্ক শেঠ। সেরা কোচ হিসাবে পিকে ব্যানার্জি স্মৃতি সম্মান পেলেন সঞ্জয় সেন ও অ্যান্টনি অ্যান্ড্রু। প্রাক্তন ফুটবলার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ও কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের হাত থেকে সম্মান নেওয়ার পর সঞ্জয় সেন বলেন, “ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে আমার কোনও অবদান নেই। তবু আমাকে সংবর্ধনা দিল। আজকের ওই শূন্যতা সাময়িক। আগামী দিনে ভালো কিছু হবে। যদি আমার কাছে কখনও সুযোগ আসে, তাহলে সুদে-আসলে মিটিয়ে দেব। এই সংবর্ধনা আমাকে আরও ভালো কিছু করতে অনুপ্রাণিত করবে।”
এ ছাড়া সেরা রেফারি হিসাবে সম্মান পেলেন করুণা চক্রবর্তী ও কার্তিক ইন্দু। ‘প্রাইড অফ বেঙ্গল’ স্বীকতি দেওয়া হয় ইস্টবেঙ্গল ও ভারতীয় মহিলা দলের ফুটবলার সঙ্গীতা বাসফোরকে। সঙ্গীতা বলেন, “অনেক কষ্টের জীবন নিয়ে মাঠে নেমেছি। তাই মাঠে নামলে শুধু মনে রাখি, দলের জন্য ভালো কিছু করতে হবে।” গ্র্যান্ডমাস্টার দাবাড়ু আরণ্যক ঘোষকেও সংবর্ধনা জানানো হল। মঞ্চে তোলা হয় প্রাক্তন এবং বর্তমান দলের খেলোয়াড়দের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.