ইস্টবেঙ্গল: ৩ (জেসিন, সায়ন, ডেভিড)
মোহনবাগান: ২ (লেওয়ান, কিয়ান)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডার্বি তো ডার্বিই হয়। তুলনায় ছোটদের দল খেলুক বা বড়রা। যুবভারতীতে হোক বা কল্যাণীতে। বড় ম্যাচের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়বেই। তাকে রুখতে কে? কল্যাণীতে কলকাতা লিগের ডার্বিতে শেষ হাসি হাসল ইস্টবেঙ্গল। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে মরশুমের প্রথম ডার্বি তারা জিতল ৩-২ গোলে। স্কোরবোর্ড দেখেই পরিষ্কার, কতটা টানটান লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল বাংলার আপামর ফুটবল জনতা। দাড়িপাল্লার মতো ম্যাচের ভাগ্য প্রতিমুহূর্তে বদলাতে থাকল। শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সেখান থেকে কামব্যাকের লড়াই শুরু করে মোহনবাগান। যদিও শেষরক্ষা হল না। গোল করে ও করিয়ে নায়ক সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিকল্পনা মতোই জুনিয়র ফুটবলারদের পাশাপাশি দুই দলে কয়েকজন সিনিয়র ফুটবলার ছিলেন। লাল-হলুদ জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন দেবজিৎমজুমদার, এডমুন্ড লালরিন্ডিকা, মার্তণ্ড রায়না, ডেভিডরা। অন্যদিকে মোহনবাগানও নামিয়েছিল দীপেন্দু বিশ্বাস, কিয়ান নাসিরি, সুহেল ভাটদের। বিশেষ নজর ছিল কিয়ানের উপর। আইএসএলের ডার্বিতে তাঁর হ্যাটট্রিক রয়েছে। একবছর পর ফের সবুজ-মেরুন জার্সিতে কামব্যাকে কেমন খেলেন, সেদিকে তাকিয়েছিলেন ভক্তরা।
শুরুটা অবশ্য দুই দলই খানিক ঢিমেতালে খেলে নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছিল। আচমকাই আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। নিজেদের মধ্যে ওয়ান-টু খেলে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে জেসিন টিকে’কে পাস। বাঁপায়ের আলতো টোকায় গোল করতে ভুল করতে ভুল করেননি এদিনের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক। ম্যাচের রাশও আস্তে আস্তে নিজেদের হাতে তুলে নিতে শুরু করে তারা। যদি গোলের একেবারে সহজ সুযোগ এসেছিল মোহনবাগানের কাছে। ৩০ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে ভেসে আসা বলটি ঠিকমতো রিসিভ করতে পারলেন না সুহেল। ফলে ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদারকে একা পেয়েও জালে বল জড়াতে পারলেন না তিনি। ফাঁকা গোল পেয়েও ফিরতি বল বারে মারেন কিয়ান। প্রথমার্ধের শেষ লগ্নে মোহনবাগান গোলকিপারের ভুলে বল পেয়ে যান ডেভিড। কিন্তু তিনিও ফাঁকা গোলে বল বাইরে মারেন। যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্ষতিপূরণ করেন সায়ন। প্রথমার্ধের একেবারে শেষের দিকে একাধিক কর্নার পেয়েছিল মোহনবাগান। কিন্তু সেখান থেকে হঠাৎ কাউন্টার অ্যাটক শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। সবুজ-মেরুনের রক্ষণভাগকে দাঁড় করিয়ে রেখে দ্রুতবেগে উঠে গোল করে যান সায়ন। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল।
কিন্তু এটা যে ডার্বি! কখন যে কীভাবে পাশা বদলে যায়, কে বলতে পারে? দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান পাসাং দোরজি তামাংকে নামাতেই ম্যাচের ছবিটা বদলাতে শুরু করে। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্রমাগত আক্রমণে উঠতে শুরু করে মোহনবাগান। খেলার বয়স তখন ৫৩ মিনিট। কর্নার থেকে ভেসে আসা ফিরতি বলে গোলার মতো শটে ব্যবধান কমান লেওয়ান। ৬৭ মিনিটে সমতা ফেরান কিয়ান। ডানদিক থেকে লেওয়ানে মাপা ক্রসে দারুণ হেডে গোল করে যান তিনি। আশা করা হচ্ছিল, ফের হয়তো কিয়ানের ম্যাজিক দেখা যেতে পারে। কিন্তু ঠিক পরের মিনিটেই আমনের ক্রস থেকে ডেভিড ৩-২ করে দেন। বক্সের মধ্যে ডেভিড যে প্রায় ফাঁকায় দাঁড়িয়ে আছেন, তা যেন মোহনবাগান রক্ষণের কেউ খেয়ালই করেননি। ৮২ মিনিটে তিনি আরেকটি গোলের সুযোগ নষ্ট না করলে ব্যবধান আরও বাড়ত। অন্যদিকে সুহেলও সুযোগ হাতছাড়া করেন। শেষদিকে মুর্হুমুহু আক্রমণে উঠে এসেছিল মোহনবাগান। বাজে ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখলেন লাল-হলুদের আমন সিকে। তাতেও ইস্টবেঙ্গলের ৩-২ ব্যবধানে জয় আটকাতে পারেনি মোহনবাগান।
তবে এই ম্যাচেও বিতর্ক পিছু ছাড়ল না কলকাতা লিগকে। ডার্বি চলাকালীনই কল্যাণী স্টেডিয়ামের একটি বাতিস্তম্ভের আলো নিভে যায়। ফলে ফের অব্যবস্থা কলকাতা লিগ ঘিরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.