Advertisement
Advertisement
India Football Team

দেশি কোচেই ফিরল দেশের মান, ৫৪ ধাপ এগিয়ে থাকা ওমানকে হারিয়ে কাফা কাপে তৃতীয় স্থান অর্জন ভারতের

টাইব্রেকারে ভারতকে জেতাল গুরপ্রীতের হাত।

India Football Team beats Oman in Cafa Cup
Published by: Arpan Das
  • Posted:September 8, 2025 8:18 pm
  • Updated:September 8, 2025 8:31 pm   

ভারত- ১ (উদান্তা)
ওমান- ১ (আহমাদি)
ভারত ৩-২ ব্যবধানে টাইব্রেকারে জয়ী।

Advertisement

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রুদ্ধশ্বাস, টানটান লড়াই। শেষ কবে ভারতের ফুটবল ম্যাচে দেখা গিয়েছিল? সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ম্যাচ মানেই তো হার, বড়জোর ড্র। কাফা কাপে ওমানের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াল টাইব্রেকারে। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচের ফলাফল ছিল ১-১। প্রথমে পিছিয়ে পড়েও ৮২ মিনিটে সমতা ফেরান উদান্তা সিং। অতিরিক্ত সময়েও ফলাফল বদলায়নি। আর টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতল ব্লু টাইগার্সরা। প্রথম টুর্নামেন্টেই ভারতকে সাফল্য এনে দিলেন খালিদ। দেশি কোচের হাত ধরে কাফা কাপ থেকেই কি নতুন যুগের সূচনা হল ভারতের? অপেক্ষায় অসংখ্য ফুটবলভক্ত।

ভারতের থেকে ৫৪ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও বাড়তি পরীক্ষানিরীক্ষার পথে হাঁটেননি খালিদ। গোলে গুরপ্রীতের সামনে রক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন আনোয়ার আলি, রাহুল ভেকেরা। মাঝমাঠে ভিড় বাড়িয়ে কার্লোস কুইরোজের মতো নামধারী কোচের দলকে সুস্থির হতে দেননি তিনি। তবে তাজিকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় বা ইরানের সঙ্গে লড়াই, খালিদকে আরেকটু আক্রমণাত্মক খেলার আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। যে কারণে বল পজিশনে অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও সুযোগ পেলে আক্রমণের চেষ্টা করেছেন ছাংতেরা। আনোয়ার আলি একাধিকবার গোলের কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। প্রথমার্ধের ফুটবল আকর্ষণীয় হয়নি ঠিকই, তবে ওমানকে গোলমুখ খোলার সুযোগও দেননি নিখিল প্রভু, দানিশ ফারুকরা। প্রথমার্ধে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। 

দ্বিতীয়ার্ধেও খেলার গতিপ্রকৃতি খুব একটা বদলায়নি। কিন্তু ইরানের মতো ঠিক এই ম্যাচেও মোটামুটি একই সময়ে গোল হজম করল ভারতীয় দল। বাঁদিক থেকে বক্সের মধ্যে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিল ওমান। সেখান থেকে লো ক্রসে বল চলে আসে বক্সের মাথায়। ওমানের ফুটবলারের শটে সেরকম শক্তি ছিল না। কিন্তু সেই বলে পা ছুঁইয়ে গতিমুখ ঘুরিয়ে দেন আহমাদি। গুরপ্রীত ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি।

খালিদ জামিলের ভারতের অনেক দুর্বলতা থাকতে পারে, কিন্তু একটা জিনিস পরিষ্কার। তারা হার মানতে শেখেনি। গোল হজম করার পরও কিন্তু তিনি খেলার পদ্ধতিতে বদল আনেননি। আবার ইরান ম্যাচের মতো অতিরক্ষণাত্মকও হয়ে যাননি। বরং তিনি ভরসা করেছিলেন লং বল ও সেট পিসে। তাজিকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত গোল পেয়েছিল লম্বা থ্রো ইনে। সেই অব্যর্থ পরিকল্পনা এই ম্যাচেও কাজে লেগে গেল। ম্যাচের বয়স তখন ৮২ মিনিট। আনোয়ারের লম্বা থ্রো দানিশের মাথা ছুঁয়ে বক্সের মধ্যে ঢোকে। ওমান রক্ষণকে বোকা বানিয়ে উদান্তা সিং হেডে গোল করে যান। এতক্ষণ যে ওমান খেলা স্লো করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল, তারাই এবার মরিয়া হয়ে উঠল। তাদের ভারতীয় মাঝমাঠ বা রক্ষণই শুধু আটকায়নি। মাঠের বাইরে থেকে খালিদ যেভাবে ‘হোল্ড’, ‘আপ’, ‘ক্লিয়ার’, ‘ম্যান অন’ নির্দেশ দিচ্ছিলেন, সেটাই যেন ভারতীয় ফুটবলে হারিয়ে গিয়েছিল।

অতিরিক্ত সময়েও ফলাফল ছিল ১-১। তারপর ট্রাইব্রেকার। শুরুতে মারতে এলেন ছাংতে। তিনি লক্ষ্য ফসকালেন না। তবে ফসকাল ওমান। ভারত দ্বিতীয় শটে গোল ভেকের। আবার ওমানের মিস। ভারত ২-০ ব্যবধানে। ম্যাচ কার্যত হাতের মুঠোয় মনে হচ্ছে। সেই সময় মিস করে বসলেন আনোয়ার। ওদিকে ওমানও গোল করে গেল। জিতিন গোল করায় ফলাফল ৩-১। ওমান ব্যবধান কমিয়ে করল ৩-২। শেষ শট। উদান্তার কাছে সুযোগ ছিল ওখানেই ম্যাচ শেষ করার। কিন্তু তিনি মারলেন গোলের বাইরে। তবে চিন্তার কিছু নেই। গুরপ্রীত আছেন। গোটা টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছেন। তাঁর হাতেই যেন লেখা ছিল ভারতের জয়। তিনি শেষ শটটা বাঁচাতেই টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জিতল ভারত। 

ফলাফলের ঊর্ধ্বে কাফা কাপ থেকে ভারত অনেকগুলো শিক্ষা নিয়ে ফিরল। র‍্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দলগুলোর সঙ্গে অন্তত লড়াই দেওয়ার সাহস আছে এই ভারতের। রক্ষণ অনেক বেশি জমাটি হয়েছে। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া বেড়েছে। সর্বোপরি খালিদ ভরসা দিচ্ছেন। কিন্তু তাঁকে এবার গোল করার লোক খুঁজতে হবে। রোজ থ্রো ইনে হেড থেকে গোল পাওয়া যে সম্ভব নয়, সেটা খালিদও জানেন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ