Advertisement
Advertisement
Mohun Bagan

‘খেলার আগেও গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের জীবন’, এসিএল ২ বিতর্কে অবস্থান স্পষ্ট করল মোহনবাগান

'এএফসিতে খেলতে না পারার জন্য আপনাদের মতো আমরাও মর্মাহত', জানিয়েছে মোহনবাগান ক্লাব।

Mohun Bagan club opens up on not going Iran for ACL 2
Published by: Arpan Das
  • Posted:October 5, 2025 10:44 am
  • Updated:October 5, 2025 11:10 am   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফুটবলারদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ইরানে এসিএল ২-র ম্যাচ খেলতে যায়নি মোহনবাগান। সেপাহান এসসি’র বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে হাজির না হওয়ায় জেসন কামিংস, জেমি ম্যাকলারেনদের নিয়ে সিদ্ধান্তও নিয়েছে এএফসি। এবারের এসিএল-২ থেকে মোহনবাগান নাম সরে দাঁড়িয়েছে বলেই ধরছে এশিয়ার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা। যা নিয়ে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের মধ্যে বেশ খেদ রয়েছে। এই বিষয়ে মোহনবাগান ক্লাবের তরফ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে জানানো হয়েছে, ‘খেলার আগেও গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের জীবন।’ তাছাড়া সমর্থকদের ‘আবেগের বশে সমালোচনা না করে’ যুক্তি দিয়ে ভাবার আর্জি ক্লাবের তরফ থেকে।

Advertisement

রবিবার সকালে মোহনবাগান ক্লাব সচিব সৃঞ্জয় বোস ও সভাপতি দেবাশিস দত্তের তরফ থেকে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যেখানে এসিএল ২ নিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা তো গত বছরেও একই কারণে খেলতে যাইনি। ইরানে যে একটা সমস্যা হচ্ছে, সেটা সবাই জানেন। সেখানে ফুটবলাররা যদি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, ম্যানেজমেন্ট সেখানে কিছুই করতে পারে না। খেলার আগেও গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের জীবন। আর এক্ষেত্রে আমরা ইরানে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা ফুটবলারদের উপরেই ছেড়ে দিয়েছিলাম। এএফসিতে খেলতে না পারার জন্য আপনাদের মতো আমরাও মর্মাহত। কারণ, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা প্রতিবছর ৭০-৮০ কোটি টাকার দল গঠন করেন। সর্বোচ্চস্তরে ভাল ফল করার জন্য। নিশ্চয়ই দ্বিতীয় সারির প্রতিযোগিতায় জেতার জন্য নয়। তাহলে এত খরচ করে দল গঠন করার পর কোনও সমস্যা না থাকলে ইরানে কেন খেলতে যাওয়া হবে না?’

ভারতীয় ফুটবল এখনও চরম সংকটের অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতেও সঞ্জীব গোয়েঙ্কা বিশাল অর্থ ব্যয় করে দল বানিয়েছেন। সেটা জানিয়ে মোহনবাগান ক্লাবের তরফ থেকে সমর্থকদের কাছে আর্জি, ‘মোহনবাগান কোথাও না খেললে অবশ্যই মর্মাহত হবেন। প্রতিবাদ করবেন। কিন্তু শুধুই আবেগের বশে সমালোচনা না করে একটু যুক্তি দিয়েও ভাবুন। যিনি প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে দল গড়ে আমাদের লক্ষ লক্ষ সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন, তাঁকে এক লহমায় সমালোচনার কাঁটায় বিদ্ধ করতে আপনাদের হৃদয় কাঁপছে না? আবার বলছি, আমরা সবাই চাই, মোহনবাগান ভারতীয় ফুটবল ছাড়িয়ে এশিয়াতেও নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করুক। আর তার জন্যই এই বিশাল দল গঠন। যখন খেলতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, নিশ্চয়ই তার পিছনে কারণ রয়েছে।’

সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় স্তরের টুর্নামেন্টে সাফল্য পেয়েছে মোহনবাগান। সেই সূত্রেই এশিয়াস্তরে খেলার সুযোগ এসেছে। মোহনবাগান ক্লাবের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘এসিএল-টু-তে মোহনবাগানের ইরানে খেলতে না যাওয়া নিয়ে সদস্য, সমর্থকদের মনে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে, তা যে অমূলক তা আমরা মনে করি না। আমরাও বিশ্বাস করি, সব ধরনের প্রতিযাগিতাতেই মোহবাগানের খেলা উচিত। আপনাদেরও একটা বিষয় মাথায় রাখা উচিত, প্রতি বছর যে বিশাল বাজেটের দল তৈরি করা হচ্ছে, তা সব প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই। পরপর আইএসএল লিগ, কাপ সব জিতে ভারতীয় ফুটবলে মোহনবাগানের জয়পতাকা ওড়ানো নিশ্চয়ই সেই বার্তাই বহন করে।’

ক্লাবের তরফ থেকে কথা দেওয়া হয়েছে, কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বোর্ডে পুরো ব্যাপারটা আলোচনার জন্য তুলে ধরা হবে। আরও জানানো হয়েছে, ‘দিনের শেষে আমরা সবাই বৃহত্তর মোহনবাগান পরিবার। আর সবাই চাই শুধুই মোহনবাগানের জয় দেখতে। সমর্থকদের মুখে এই হাসি দেখার জন্যই সঞ্জীব গোয়েঙ্কার এই বিশাল খরচ করে দল গঠন করা। আশা করব, যে কোনও পরিস্থিতিতে আমাদের সদস্য-সমর্থকরা আমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তের পাশে থাকবেন। এটুকু বিশ্বাস করবেন, এখনও পর্যন্ত আমরা যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তা সবুজ-মেরুন পতাকাকে তুলে ধরার জন্য নিয়েছি। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ হবে, আপনাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য।’

পাশাপাশি আইএফএ শিল্ড নিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা প্রথম সারির কিছু প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে হয়তো দ্বিতীয় সারির কিছু প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারিনি। নাহলে রিজার্ভ দল খেলিয়েছি। শিল্ড আমরা এর আগেও খেলিনি। অবশ্য গত দু’বছর ধরে এমনিতেই শিল্ড হচ্ছে না। কিন্তু ফিফা উইন্ডো মেনে যদি আইএফএ শিল্ড হয়, তাহলে খেলতে কোনও সমস্যাই থাকে না। জাতীয় দলে ৭-৮জন ফুটবলার ডেকে নেওয়ার পর শিল্ড খেলতে নামলে রিজার্ভ দল খেলানো ছাড়া কোনও উপায় থাকে না। তারপরেও আমরা এই বছর শিল্ডে খেলছি। গতবার শিল্ড হলে, সেটাও খেলতাম। আর কলকাতা লিগেও যদি আইএসএলের ফুটবলার আমরা খেলাই, তাহলে দীপেন্দু, সুহেল ভাটরা খেলার সুযোগ পাবে কোথায়?’ সব মিলিয়ে এসিএল ২ এবং আইএফএ শিল্ড নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল মোহনবাগান।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ