সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রোনাল্ডো হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। আক্ষরিক অর্থে এই প্রবাদেরই যেন বাস্তবায়ন। স্পেনকে হারিয়ে ২০১৯ সালের পর ‘সেলেকাও দাস কুইনাস’রা দ্বিতীয়বার নেশনস লিগের শিরোপা জয় করলেন। লড়াইটিকে দুই প্রজন্মের দ্বৈরথ হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়। একদিকে চল্লিশের রোনাল্ডো। অন্যদিকে, সতেরোর ইয়ামাল। শেষহাসি কে হাসবে, সেদিকে নজর ছিল। দেখা গেল চল্লিশে চালশে নয়, নতুন যৌবনের পাঠ শেখালেন রোনাল্ডো। আর তাতেই টগবগিয়ে ছুটল পর্তুগাল।
এদিন শুরু থেকে আক্রমণে গতি বাড়ান পেদ্রি, ইয়ামালরা। সেই ঝড় ঠেকানোর দায়িত্বে ছিলেন নুনো মেন্ডেস, ভিটিনহারা। ১৫ মিনিটে সহজ সুযোগ মিস পেদ্রির। সুযোগ নষ্ট করেন ‘সতেরোর বিস্ময়’ ইয়ামালও। ২১ মিনিটে জুবিমেন্ডির গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। যদিও এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকেনি ‘রেড ফিউরি’দের। খেলার গতির বিরুদ্ধে গিয়ে ২৬ মিনিটে নুনো মেন্ডেজের গোলে সমতায় ফেরে পর্তুগাল। এটিই তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক গোল। এরপরেও আক্রমণ জারি থাকে স্পেনের। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগেই ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা। পেদ্রির থেকে পাওয়া বল জালে জড়িয়ে দেন ওয়ার্জাবাল।
স্পেন খেলার গতি হেরফের করে প্রথমার্ধে প্রাধান্য বিস্তার করতে সমর্থ হলেও দ্বিতীয়ার্ধে পর্তুগিজদের ডাইরেক্ট ফুটবলের সামনে টিকিতাকা ফুটবল কৌশল কার্যত দুর্বল হয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ঝটিকি আক্রমণে উঠে আসে পর্তুগাল। ৪৯ মিনিটে ব্রুনো ফার্নােন্ডজের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। এরপর দমে না গিয়ে সমতায় ফেরানোর চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠেন রোনাল্ডোরা। তখনই ‘বুড়ো’ হাড়ে ম্যাজিক দেখান সিআর৭। একেবারে পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতো সুযোগের অপব্যয় করেননি রোনাল্ডো। ৬১ মিনিটে বাঁ-দিক থেকে ভেসে আসা ক্রস স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে উঠে যায়। ওই সময় গোলের সামনেই ছিলেন রোনাল্ডো। স্পেনের দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে চকিতে ভেসে আসা বলকে প্রথম পোস্টের দিকে জালে জড়িয়ে নিজের কেরিয়ারের ১৩৮তম গোল করে ফেলেন তিনি। সমতায় ফেরে পর্তুগাল। এরপর অবশ্য ৮৭ মিনিটে তাঁকে তুলে নেন কোচ। তবে, আলাদা করে বলতেই হয় পর্তুগিজ গোলরক্ষক দিয়োগো কোস্তার কথা। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে তিনি হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। নিশ্চিত কিছু গোল না বাঁচালে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতেই পারত। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনও পক্ষই কোনও গোল করতে পারেনি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়েও খেলার ফলাফল থাকে ২-২। ম্যাচের ফয়সালা হয় টাইব্রেকারে। সেখানে প্রথম তিন শটের তিনটিতেই গোল করে দুই পক্ষ। পর্তুগালের হয়ে গোল করেন গঞ্জালো র্যামোস, ভিটিনহা, ব্রুনো। স্পেনের হয়ে প্রথম তিন শট নেন মেরিনো, বায়েনা এবং ইসকো। চতুর্থ শটে পর্তুগালকে লিড এনে দেন মেন্ডেজ। এরপর স্পেনের হয়ে নেওয়া মোরাতার শট বাঁচিয়ে দেন কোস্তা। পর্তুগালের হয়ে নিতে আসা পঞ্চম শট থেকে গোল করে ট্রফি নিশ্চিত করেন নাভাস। ম্যাচের শেষে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তাঁর চোখে আনন্দাশ্রু যেন জানান দিচ্ছিল এই আখ্যানের কোনও শেষ নেই। অনন্তকাল ধরে এই গৌরবগাথা স্মরণে রাখতেই হবে ফুটবল ইতিহাসকে।
Portugal are UEFA Nations League champions for a second time 🇵🇹
— Premier League (@premierleague)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.