কলকাতা ফেরার পর বিমানবন্দরে লাল-হলুদের মহিলা ব্রিগেড। - সূচরিতা গোস্বামী
শিলাজিৎ সরকার: কম্বোডিয়ায় ইতিহাস গড়ে সোমবার রাতেই শহরে এসেছেন। তবে ৪৫ কিমি দূরের বাড়িতে যাওয়ার অবকাশ হয়নি। বরং কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিমি পারি দিয়ে পৌঁছাতে হল কর্মস্থলে। শহরে ফেরার পরবর্তী দিনটা এভাবেই কাটল ইস্টবেঙ্গলের নতুন তারা সঙ্গীতা বাসফোরের।
দিন দুয়েক আগে এএফসি মহিলাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। আর সেই সাফল্যে অনুঘটকের কাজ করেছেন সঙ্গীতা। দ্বিতীয় ম্যাচে হংকংয়ের কিটচি এফসি’র বিরুদ্ধে তাঁর গোল এগিয়ে দিয়েছিল দলকে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ড্র করে লাল-হলুদ, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পৌঁছে যায় মূল পর্বে। সিঙ্গাপুর ঘুরে সোমবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ দলের সঙ্গে কলকাতা এসেছেন সঙ্গীতা। তবে কল্যাণীর বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ পাননি। কারণ মঙ্গলবার ভোরের ট্রেনে শিলিগুড়ি গিয়েছেন তিনি, যোগ দিয়েছেন কর্মস্থল এসএসবি’র ক্যাম্পে। শিলিগুড়ি থেকে ফোনে সঙ্গীতা বলছিলেন, “ক্লাবের হয়ে খেলার জন্য বাড়তি ছুটি পাওয়া যায় না। ডিউটিতে যোগ দেওয়ার চাপ ছিল। তাই কলকাতা ফিরেই এখানে চলে আসতে হয়েছে। বাড়ি যাওয়ার সময় পাইনি।” সামনেই জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য বাংলার ক্যাম্পে যোগ দিতে কৃষ্ণনগর আসবেন। “৫ তারিখ ক্যাম্পে যোগ দিতে যাব। তখন ইচ্ছে আছে বাড়ি যাওয়ার। তাছাড়া মাকে বলেছি, পুজোয় বাড়িতে থাকব,” বলছিলেন সঙ্গীতা।
এসএসবি’র ছাড়পত্র না থাকায় গত আইডব্লিউএলে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলতে পারেননি সঙ্গীতা। এএফসি’র মঞ্চেই লাল-হলুদ জার্সিতে অভিষেক হয় তাঁর। যে চাকরির জন্য ফুটবল খেলতে সমস্যায় পড়ছেন, তা বদলের কথা ভাবেন না? সঙ্গীতার জবাব, “মাঝে খেলতে না পেরে খারাপ লাগছিল। তবে প্রয়োজনের সময় এই চাকরিটা আমাকে সাহায্য করেছে। তাই এখন আর চাকরি ছাড়ার কথা ভাবছি না।” এর আগে জাতীয় দলকে এশিয়ান কাপের ছাড়পত্র এনে দিতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন সঙ্গীতা। মহাদেশীয় মঞ্চে পরপর সাফল্যের স্বাদটা ঠিক কেমন তাঁর কাছে? সঙ্গীতার কথায়, “মঞ্চ যাই হোক, আমার গোল দলকে সাহায্য করলেই আমি খুশি। এর আগে আমি কখনও অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসাবে খেলিনি। ইস্টবেঙ্গলে কোচ অ্যান্থনি অ্যান্ড্রুজ ওই ভূমিকায় আমাকে ব্যবহার করেছেন। ফলে সেই ভরসার দাম দিতে পেরে আমি খুশি।”
অবশ্য শুধু সঙ্গীতা একা নন, কর্মস্থলে ছুটতে হয়েছে সৌম্যা গুগুলোথকেও। কয়েক মাস আগে ব্যাঙ্কের চাকরিতে যোগ দিয়েছেন লাল-হলুদের এই ফরোয়ার্ড। তবে হেড অফিসে সইসাবুদ সারার পর সৌম্যা চলে যান জাতীয় শিবিরে। সেখান থেকে আসেন কল্যাণীতে, ইস্টবেঙ্গলের ক্যাম্পে। তাই কম্বোডিয়া থেকে ফিরেই কর্মস্থলে গিয়েছেন সৌম্যা। লাল-হলুদের দল থেকে পাঁচ ফুটবলার ডাক পেয়েছেন বাংলা দলের ক্যাম্পে। অন্যদিকে, এদিন ক্লাব তাঁবুতে মহিলা দলের শহরে থাকা সদস্যদের সংবর্ধনা দেয় ইস্টবেঙ্গল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.