ভারত: ৩৩০/১০ (স্মৃতি ৮০, প্রতিকা ৭৫, শ্রী ৪১/৩, দিপ্তী ৫২/২, আমনজোত ৬৮/২)
অস্ট্রেলিয়া: ৩৩১/৭ (হিলি ১৪২, পেরি ৪৭, গার্ডনার ৪৫, লিচফিল্ড ৪০, সুথারল্যান্ড ৪০/৫, সোফিয়া ৭৫/৩)
৩ উইকেটে জয়ী অস্ট্রেলিয়া।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক ও তিনের লড়াইয়ে হার হল তিনেরই। উইমেন ইন ব্লুর মরিয়া লড়াই এবং ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে সর্বোচ্চ রানের (৩৩০) পরেও ব্যর্থ ভারত। তিন উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা। একা হাতে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিলেন অ্যালিসা হিলি। ১০৭ বলে ১৪২ রান করলেন তিনি। আদর্শ ক্যাপটেনস নক! বল হাতে অস্ট্রেলিয়া জয়ের সরণিতে রাখার কারিগর অ্যানাবেল সুথারল্যান্ড। ৪০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। ফলে স্মৃতি মান্ধানা (৮০) এবং প্রতিকা রাওয়ালের (৭৫) বড় রান কাজে এল না। জলে গেল স্মৃতির একাধিক নজির! বাংলার রিচা ঘোষ এবং জেমাইমা রদ্রিগেজ ভালো শুরু করেও রান না পাওয়াই কাল হয়ে দাঁড়াল!
বিশাখাপত্তনমে টসে জিতে ভারতকে প্রথম ব্যাট করতে পাঠান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। ভারতীয় দল এদিন অপরিবর্তিত ছিল। শুরুতে সাবধানী হয়ে ব্যাট করতে থাকেন দুই ওপেনার প্রতিকা রাওয়াল ও স্মৃতি মন্ধানা। ওভারপিছু চার রান করে তুলছিলেন তাঁরা। তবে অষ্টম ওভারে গিয়ে গিয়ার বদল করে ভারত। সোফিয়ে মোলিনেয়াক্সের ওভারে ১৬ রান তুললেন ভারতীয় ওপেনাররা। সেই শুরু। এরপর রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন প্রতিকা এবং মন্ধানা।
তাঁদের ১৫৫ রানের জুটি ভাঙেন মোলিনেয়াক্স। ৬৬ বলে ৮০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন স্মৃতি। তাঁর ইনিংস সাজানো ৯টি চার, ৩টি বিশাল ছক্কায়। অসাধারণ ইনিংস খেলে বিশাখাপত্তনমে নজিরও গড়লেন তিনি। এক ক্যালেন্ডার বছরে মহিলাদের ওয়ানডে’তে হাজারের বেশি রান করা প্রথম ক্রিকেটার হয়ে ওঠেন স্মৃতি। ২৯ বছর বয়সি এই ওপেনার মহিলাদের ওয়ানডেতে ৫ হাজার রানও পূর্ণ করেন এদিন। যা মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেটে দ্রুততমর বিশ্বরেকর্ড। পুরুষ ও মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেট মিলিয়ে এই তালিকায় স্মৃতির আগে শুধু রয়েছেন পাকিস্তানের বাবর আজম এবং দক্ষিণ আফ্রিকার হাসিম আমলা। ১১২ ইনিংসে এখন স্মৃতির রান ৫০২২। ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে এই রেকর্ড ছিল বিরাট কোহলির। তিনি ১১৪টি এক দিনের ইনিংসে ৫,০০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছেছিলেন। শুধু দ্রুততম নয়, কনিষ্ঠতম হিসেবেও মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেটে ৫০০০ রান করার রেকর্ড গড়লেন ২৯ বছরের স্মৃতি।
ভারতের রান যখন ১৯২, দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয়। ৯৬ বলে ৭৫ রানে আরেক ওপানার প্রতিকাকে ফেরান সাদারল্যান্ড। অন্যদিকে, নিজের কেরিয়ারে হাজার রান করলেন হারলিন দেওল। ফের ব্যর্থ হলেন ভারত অধিনায়ক হরমনপ্রীত। ১৭ বলে ২২ রান। হারলিনও ২২ বলে ৩৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। ভারতের রান তখন ৪ উইকেটে ২৪০। গত ম্যাচগুলিতে অসাধারণ ছন্দে ছিলেন বাংলার মেয়ে রিচা ঘোষ। তিনি নেমেই জেমাইমা রদ্রিগেজের সঙ্গে ঝড় তুললেন। ভারতের রান যখন ২৯৪, স্লোয়ার বল তুলে মারতে গিয়ে আউট হন রিচা। এদিন তাঁর সম্বল ২২ বলে ৩২। ছোট্ট অথচ গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসে মারলেন তিনটি চার ও দু’টি ছক্কা। জেমাইমার সঙ্গে তাঁর জুটিতে উঠল ৫৪ রান। এর কিছুক্ষণ পর ৩৩ রানে ফিরে গেলেন জেমাইমাও। তিনি আউট হতেই ভারতের লোয়ার অর্ডার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। ৭ বল বাকি থাকতেই ৩৩০ রানে অল আউট হয় ভারত।
যে কোনও ফর্মাটের ক্রিকেটেই ৩৩০ রান কম নয়। তথাপি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের দক্ষতা শুরুতেই বুঝিয়ে দিচ্ছিল ম্যাচ জিততে মাঠে নেমেছে তারা। ওপেনিং জুটিতে বড় রান তোলেন হিলি এবং লিচফিল্ড। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেট পড়ে ৮৫ রানে। যদিও মাঝের ওভারগুলিতে রান তোলের গতি কমে তাদের। যদিও অধিনায়ক হিলিকে রান তোলায় সাহায্য করেন দলের একাধিক ব্যাটার। এদিন ৪০ বা তার বেশি রান করেছেন অস্ট্রেলিয়ার তিন জন ব্যাটার। তাঁরা হলেন পেরি (৪৭), গার্ডনার (৪৫) এবং লিচফিল্ড (৪০)। ৪৯ ওভারে পেরি এবং কিম গার্থ ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ জেতান। বুঝিয়ে দেন কেন তাঁরা সাতবারের বিশ্বচাম্পিয়ান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.