সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০৩ সাল। প্যারিসে (Paris) আয়োজিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতে ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সকে অন্যমাত্রায় পৌঁছে দিয়েছিলেন অঞ্জু ববি জর্জ (Anju Bobby George)। প্রথম এবং একমাত্র ভারতীয় অ্যাথিলট হিসেবে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকস মিটের পোডিয়ামে ওঠার সম্মান অর্জন করেছিলেন। ৬.৬১ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করেছিলেন। শেষপর্যন্ত সেই মরশুমের সেরা ৬.৭০ মিটার লাফিয়ে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন।
কিন্তু জানেন কী ছোট থেকেই জটিল অসুখে ভুগতেন তিনি। আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো দু’টি নয়, একটি কিডনি রয়েছে তাঁর শরীরে। শুধু তাই নয়, যেকোনও প্রকার ওষুধেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কবলে পড়েন তিনি। তাই কোনও কারণে চোট লাগলে, ওষুধ খেলেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়তেন। কখনও–সখনও অজ্ঞানও হয়ে যেতেন। চোট সারতেও অনেক বেশি সময় লাগত। কিন্তু নিজের দীর্ঘ কেরিয়ারে কখনও সেই বিষয় নিয়ে মুখ খোলেননি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর এবার টুইট করে সেই সত্যিটাই জানালেন অঞ্জু ববি জর্জ। আর একথা জানার পরই গোটা দেশ তাঁকে কুর্নিশও জানিয়েছে। টুইট করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজু (Kiren Rijiju)।
অঞ্জু টুইট করে লেখেন, ‘‘বিশ্বাস করুন বা না করুন। আমি কিন্তু খুবই ভাগ্যবান। কেবলমাত্র একটি কিডনি নিয়ে বিশ্ব পর্যায়ে সফল হতে পেরেছি। শুধু এই বিষয়টিই নয়, পেনকিলারের থেকে এলার্জি-সহ আরও একাধিক বাধা ছিল। তা সত্ত্বেও আমি পেরেছি।’’ জবাবে অবশ্য কিরেন রিজিজু টুইটে লেখেন, ‘‘অঞ্জু এটা তোমার পরিশ্রম, দৃঢ়তা ও সংকল্প এবং অবশ্যই তোমার কোচিং টিমের জন্য জন্য সম্ভব হয়েছে। আমরা তোমার জন্য গর্বিত।’’
Believe it or not, I’m one of the fortunate, among very few who reached the world top with a single KIDNEY, allergic with even a painkiller, with a dead takeoff leg.. Many limitations. still made it. Can we call, magic of a coach or his talent
— Anju Bobby George (@anjubobbygeorg1)
Anju, it’s your hard work, grit and determination to bring laurels for India supported by the dedicated coaches and the whole technical backup team. We are so proud of you being the only Indian so far to win a medal in the World Athletic Championship!
— Kiren Rijiju (@KirenRijiju)
এরপর এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্যারিসের টুর্নামেন্টে নামার আগে অসুস্থ হয়ে পড়ার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া কিডনি এবং অন্যান্য অসুখের প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘‘২০০১ সালে আমি জানতে পারি, আমার শরীরে জন্ম থেকেই একটি কিডনি। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, এর জন্য খেলা চালিয়ে যেতে আমার কোনও সমস্যা হয়নি। তবে এজন্য যখনই চোট পেতাম, তা সারাতে আমার একটু বেশি সময় লাগত। আমার শরীরে ইউরিয়ার পরিমাণও অনেক বেশি ছিল। এজন্য শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথাও হত। তা কমাতে পেনকিলার খেতাম। কিন্তু পেনকিলার জাতীয় কোনও প্রকার ওষুধ খেলেই আবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হত। অজ্ঞান হয়ে যেতাম। কখনও হাসপাতালেও ভরতি হতে হত। ওষুধের এই বিষয়টি আমার পরিবারের অনেকেরই আছে।’’
কিন্তু কেন এতদিন কিছু জানাননি। এই প্রশ্নের উত্তরে অঞ্জুর সাফ জবাব, ‘‘আমি সবসময় ভয় পেতাম। তবে এখন আর সেই ভয়টা নেই। এখন অনেক বেশি অভিজ্ঞ হয়েছি। আমার মনে হয়, আমার এই লড়াইটা জানতে পারলে অনেকেই কিন্তু অনুপ্রাণিত হবেন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.